কঠোর লকডাউনের খবরে রাজশাহীর বাজারে উপচেপড়া ভিড় (ভিডিও)

অমিত হাসান

আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণায় রাজশাহীর সাধারণ মানুষের মধ্যে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের পাশাপাশি কেউ বৈশাখী কেনাকাটা করছেন, কেউ ঈদের কেনাকাটা করছেন। তাই আজ সোমবার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকেই রাজশাহীর অধিকাংশ বিপণিবিতান ও রাস্তাঘাটে ছিল যানজট।

দেখা গেছে, চৈত্র মাসের গরমের মধ্যে নগরীর সাহেব বাজারসহ অন্যান্য বিপণিবিতানগুলোতে ঠেলাঠেলি করে কেনাকাটা করছেন সাধারণ মানুষ। অধিকাংশ ক্রেতা মাস্ক পরলেও সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেও সোমবার  সকাল থেকে বৈশাখী কেনাকাটার জন্য মার্কেটে জনস্রোত নাামে। সকাল থেকে ভিড় ঠেলে মানুষ চাঁদ রাতের মতো করেই নিজের ও পরিবারের জন্য কেনাকাটা সারছেন। দুইদিন পরই কঠোর লকডাউন। তাই কেউই যেন এই হাতে থাকা সামান্য সময়টুকু নষ্ট করতে চাইছেন না।

অনেকের ধারণা ঈদের আগে আর এই লকডাউন ছুটবে না। এমন চিন্তার জায়গা থেকে সবাই কেনাকাটা করতে মার্কেটের বিপণিবিতানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।

মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার, আরডিএ মার্কেট, নিউমার্কেট, কোর্টবাজার, মাস্টারপাড়া, গণকপাড়া, কাপড়পট্টি ও আলুপট্টি এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়  দেখা যায় প্রায় সব মার্কেট, শপিংমল ও শো-রুমগুলোয় ক্রেতার ভিড়। শপিংমলগুলোর চেয়ে মার্কেটগুলোতে ভিড় বেশি।

শো-রুম ও মার্কেট ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারিভাবে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাদের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ঈদ এবং রমজানের আগে মুহূর্তের এ সময় থেকেই তাদের বেচাকেনা বাড়ে। কিন্তু এই লকডাউনের কারণে কয়েকদিন তেমন কোনো ক্রেতা ছিলো না। কিন্তু ১৪ তারিখ থেকে কড়াকড়ি লকডাউন আসবে এমন খবরে ক্রেতা বেড়েছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি সরকারি নির্দেশনানুযায়ী মাস্কসহ নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ক্রেতা জানান, ঈদের কেনাকাটা করতে বাজারে এসেছেন। সামনে লকডাউন তাই এখনই ঈদের কেনাকাটা করতে বের হয়েছেন বলে জানান তিনি।

আরেক ক্রেতা বলেন, সামনে কঠোর লকডাউন। তাই রমজানের খাদ্যসামগ্রী কিনতে ঝুঁকি নিয়ে বাজারে এসেছি। জরুরি কাজ না হলে বের হতাম না।

এদিকে, বলা হচ্ছে বাজার ও গণপরিবহন এই দুইস্থান থেকে সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে। এই স্থানে আসা মানুষই সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন বা তাদের শরীরেই সংক্রমণের আশঙ্কা খুব বেশি। এরপরও রাজশাহীর সাধারণ মানুষের মধ্যে ন্যূনতম করোনা ভীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে পণ্যসামগ্রী কেনাকাটায় করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নগরীর সুশীল সমাজ।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে মার্কেট, শপিংমল খোলা রাখার নির্দেশনা আসার পর তারা এই নির্দেশনা অনুযায়ী মার্কেটগুলো মনিটরিং করছেন। ব্যবসায়ীদের সচেতন করছেন।

এক্ষেত্রে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যত্যয় ঘটলে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ঊর্ধ্বতন ওই পুলিশ কমকর্তা।

স/অ