কখনও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম এটা পরিচয় দিব না….

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বান্ধবীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাইফুল ইসলাম হৃদয় ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের পেছনে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্রলীগকর্মী তাকে ছুরিকাঘাত করেছে বলে অভিযোগ উঠে|

সম্প্রতি মাস্টার্স শেষ করা শিক্ষার্থী হৃদয়ের উপর হামলার বিচার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রসেনজিত কুমার নামে শিক্ষার্থী একাই প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে রাস্তায় উপাচার্যের ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় ছাত্র উপদেষ্টা তাকে হেনস্তা করেন। এক পর্যায়ে তাকে পুলিশে দিতে চাইলে আত্মহত্যার কথা জানান প্রসেনজিত। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উক্ত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বলে জানালে ফিরে আসেন প্রসেনজিত। একা একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করে সাড়া জাগিয়েছেন প্রসেন এরপর তা সবার কাছে তুলে ধরেন ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে।
সিল্কসিটি নিউজের পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো…

গতকাল হঠাৎ নিউজ দেখেই হতাশ হলাম।এডমিশনের রেজাল্টের পর ভাইভা দিতে এসে এই মানুষটার সাথে পরিচয়! গতকাল তার নাভির নিচে ঠিক কিডনির একটু উপরে ছুরি দিয়ে অাঘাৎ করে গনিত বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী হামজাসহ অারো দুজন।বান্ধবীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় এই ছুরিকাঘাত করে।ওটিতে ঠুকে কথা বলি দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তারের সাথে।তখনও সে অাশংকামুক্ত ছিল না।ওটি থেকে বের করে রামেকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (ICU) তে ভর্তি করা হয়! এখন অনেকটা শংকামুক্ত।
রাতে খেতে পারিনি।সকালেও পেটে কিছু ঠুকাতে পারিনি।সকালে ক্যাম্পাসে গিয়ে মাননীয় উপাচার্য বরাবর খোলা চিঠি দিই এবং উল্লেখ করি দুপুরের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে অামরন অনশনে যাব।এসময় ছাত্র উপদেষ্টা ম্যাডাম একটু উচ্চ স্বরে কথা বলে উত্তেজিত হয়।ছাত্র উপদেষ্টা হিসাবে তার এরুপ অাচরন অপ্রত্যাশিত! একটু ব্যথিত হই!

ছাত্রলীগকর্মীর ছুরিকাঘাতে রাবি শিক্ষার্থী আহত, আটক ১


পূর্ব ঘোষনা মোতাবেক দুপুর ১২.৩০ মিনিটি চারটি প্লাকার্ড সহ প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিই।কিছু পর পুরো প্রক্টোরিয়াল বডি এসে অামাকে নানাভাবে অাশস্ত করার চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে ফিরে যায়!
কিছু পর ছাত্র উপদেষ্টা মহোদয় এসে অামার প্লাকার্ডগুলো কেড়ে নিয়ে ফেলে দেয় এবং প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশকে ডেকে অামাকে যে কোন উপায়ে তুলে দিতে বলে! একটু হতাশ হয়েছিলাম বাট কনফিডেন্ট হারায়নি! এসময় নানাভাবে ছাত্র উপদেষ্টা মহোদয় অামাকে হেনস্থা করার চেষ্টা করে যা অনেকেই দেখেছেন!
মনের ক্ষোভে এক পর্যায়ে অামি প্রশাসন ভবনের সামন কেরোসিন ঠেলে অাত্মহত্যা করব বলে দৌড় দিয়ে এসে বঙ্গবন্ধু হলের পাশে এসে বসি! এসময় একগাড়ি পুলি ও একটি বাইকসহ কয়েকজন অামাকে ধাওয়া করে! যা হতাশাজনক! অামি হলের পাশে এসে বসে পড়ি কারন গতকাল থেকে এখনও পর্যন্ত অামি না খেয়ে অাছি।
পুলিশ এসে হেনস্থা করার চেষ্টা করলে অামি ঠান্ডা মাথায় বারন করি এবং সুন্দর করে গাড়িতে উঠে বসি!
তারা প্রথম ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরে নিয়ে যায়, পরে প্রক্টর দপ্তরে কথা হয়! যেখানে সংবাদিক ভায়েরাও উপস্থিত ছিলেন।একজন সাংবাদিক ভায়ের একটি কাজে ব্যথিত হয়েছি সেটা সাইলেন্ট রাখলাম!
অনেকেই বলতে থাকে ৩৭০০০ স্টুডেন্ট এলো না তুমি একলা কেন?
অামার প্রশ্ন অামি ত রাবির স্টুডেন্ট তাইনা?
সবকিছুর অধিকার অামার অাছে।অামাকে পুলিশ কাস্টডিতে নিয়ে যেতে পুলিশকে বলা হয় অামি রাজী হয়ে যাই।এক পর্যায়ে অামাকে বিভাগের চেয়ারম্যান স্যারের রুমে নিয়ে যাওয়া হয় এবং অামি অাত্মহত্যা করব না এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করব এই মর্মে লিখিত নেয়া হয় এই শর্তে বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উক্ত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বলে!
নিজ জাইগা থেকে যতটুকু পেরেছি করেছি! একজন ছাত্রকেও পাশে বসার জন্যে হয়ত পায়নি তবে বসতে পেরে প্রতিবাদ করতে পেরেছি!
কিছুদিন পর বিবিএ কমপ্লিট হচ্ছে! জানি এঘটনার এখানেই হয়ত শেষ তাই জুনিয়রের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অাগেই হয়ত এমবিএ’র ক্লাস শুরু হওয়ার অাগে ক্যাম্পাস ছাড়তে পারি! এবং ভবিষ্যতে হয়ত কখনও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম এটা পরিচয় দিব না।তবে ক্যাম্পাসকে মিস করব।
কিছু মানুষকে মিস করব! ঘৃনা করা অামার দিয়ে হবেনা তবে কাউকে কাছের ভাবব না।
ভাল থাক রাজশাহী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তথা মার্কেটিং বিভাগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জাইগাতে এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী যখন একটা মেয়ে দেখে তার বুক,পাছা,ঠোঁট,চোখ দেখে প্রকাশ্যে কমেন্ট করে সে বিশ্ববিদ্যালয় অার যাই হোক ভাল কিছু শেখায় না!
জয় বাংলা