‘ওর বাবা বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতো’

সিল্কসিটিনিউজ ক্রীড়া ডেস্ক:

ক্রিকেটে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের আদর্শ সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

 

অনুপ্রেরণা মাশরাফি বিন মুর্তজা। দেশের বাইরের ক্রিকেটারদের মধ্যে মোসাদ্দেকের পছন্দ বিরাট কোহলি।

 

যে ছয়টি নাম মোসাদ্দেকের সবচেয়ে প্রিয় তারা সবাই আজ বিশ্ব ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত। দাপটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের বিচরণ। মোসাদ্দেক জানেন না, তাদের টপকে সেরা হতে পারবেন কি না! কিন্তু তার মা হোসনে আরা বেগমের বিশ্বাস মোসাদ্দেক থাকবেন সবার আগে!

 

বাংলাদেশের ক্রিকেটে নিজেদের প্রথম ম্যাচে যারা ভালো করেছেন, তাদের অনেকেই পরবর্তী সময়ে নিজেদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। দ্যুতি ছড়িয়ে শুরু করলেও ঝড়ে পরেছেন দ্রুত। কিন্তু মোসাদ্দেক ভিন্ন, অতুলনীয়।

 

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু মোসাদ্দেককে দলে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘কিছু কিছু ক্রিকেটারের ট্যালেন্ট আগে থেকেই খেয়াল করা যায়।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে প্রতিভার শতভাগ স্বাক্ষর রেখেছে। প্রথমে ব্যাট হাতে ৪৫, পরে বল হাতে ২ উইকেট। আর পুরো মাঠ দৌড়ে দৌড়ে ফিল্ডিং করতেও ক্লান্ত হননি ২১ বছর বয়সি এ ক্রিকেটার।
তাইতো নান্নু আবারও বললেন, ‘ও এভাবে খেলবে সেই বিশ্বাস আমাদের ছিল। ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পুরো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে।’

 

mosa

 

খেলাটা মোসাদ্দেক এভাবেই খেলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে তার পরিসংখ্যান সে কথাই বলছে। কিন্তু আজকের এ পর্যায়ে মোসাদ্দেক কতটা কষ্ট সহ্য করেছে তা শুধুই জানেন মা হোসনে আরা বেগম। তাই তো ছেলের সাফল্যে বারবার চোখের জলে মুখ ভিজিয়েছেন। কিন্তু সুখের এ সময়টাতেও বিষণ্ন তার মন। কেন?

 

তা রত্মগর্ভা মার মুখ থেকেই শুনুন, ‘ওর বাবা থাকলে এখন অনেক খুশি হতো। কষ্টটা এখানে। ওর বাবা মোসাদ্দেকের সাফল্য দেখে যেতে পারল না। আমার বিশ্বাস দূর থেকেও ওর বাবা ওর পাশে আছে।’

 

মোসাদ্দেকের বাবা আবুল কাশেম ২০০৮ সালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। এরপর জীবনের লড়াই শুরু হয় কিশোর মোসাদ্দেকের। দুই জমজ ভাই মোসাব্বের হোসেন সান ও মোসাব্বেক হোসেন মুনকে বড় করার পাশাপাশি পরিবারের হালও ধরতে হয়েছে মোসাদ্দেককে।

mosa1

 

সবকিছু ঠিকভাবে করার পর নিজে ক্রিকেট খেলেছেন। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতেই হবে, সেই জেদ মোসাদ্দেকের দীর্ঘদিনের। সেটা পূরণ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি খুশি মা। সান ও মুন দুজনই বিকেএসপিতে ক্রিকেটের দীক্ষা নিয়েছেন। সান চলতি বছর অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ছিলেন। মুনও জাতীয় পর্যায়ে খেলেছেন।

 

মায়ের বিশ্বাস, তিন ভাই জাতীয় দলে খেলবে, জাতীয় পতাকা উড়াবে। তার ভাষ্য,‘মা হিসেবে আমি গর্বিত। আমার ছেলেকে খেলতে আমি দেখছি। সত্যি কথা বলতে, আমি খুব আনন্দিত। আমার তিন ছেলেই ক্রিকেটার। আমি চাই একদিন আমার তিন ছেলেই জাতীয় দলে খেলবে।’

সূত্র: রাইজিংবিডি