সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
নির্বাচনী প্রচারের সময় পূর্বসূরি বারাক ওবামা তার ফোনে আড়িপাতার আদেশ দিয়েছিলেন বলে যে অভিযোগ এনেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার সমর্থনে প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এক রিপাবলিকান সিনেটর।
রিপাবলিকান সিনেটর বেন স্যাসে বলেছেন, ট্রাম্পের মন্তব্য খুবই গুরুতর এবং তার-বার্তায় আড়িপাতার অভিযোগ সম্পর্কে ও কীভাবে তিনি তা জানতে পেরেছেন, তার ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত।
নিজের দাবির পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দেননি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। স্থানীয় সময় শনিবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইটে তার পূর্বসূরি ওবামার বিরুদ্ধে তার ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ আনেন।
ওবামার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে ফোনে আড়িপাতার আদেশ দেননি ওবামা।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, ফোনে আড়িপাতার অনুমোদন শুধু তখনই দেওয়া হয়, যখন টার্গেটে থাকে কোনো বিদেশি চর।
নির্বাচনী প্রচারের সময় রাশিয়া ট্রাম্পের সমর্থনে কাজ করেছে- এই অভিযোগে ব্যাপক চাপে রয়েছেন ট্রাম্প ও তার প্রশাসন। এরই মধ্যে ট্রাম্প পাল্টা তীর ছুড়লেন, যার লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে।
ট্রাম্প তার টুইটে বলেন, ‘ভয়ংকর! এইমাত্র জানলাম নির্বাচনে বিজয়ের আগে ট্রাম্প টাওয়ারে আমার তারবার্তায় আড়ি পাতেন ওবামা। কিছুই পায়নি। এটি ম্যাককার্থিইজন।’
এদিকে, ওবামার মুখপাত্র কেভিন লুইস দাবি করেছেন, ট্রাম্পের অভিযোগ ‘ডাহা মিথ্যা।’ তিনি বলেন, ‘ওবামা প্রশাসনের নীতি ছিল, বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীন তদন্তে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা হস্তক্ষেপ করবে না।’
এই বিবৃতির পর এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।
এর আগে ওবামার পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও তার বক্তৃতা লেখক বেন রোডস ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইটের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘কোনো প্রেসিডেন্ট ফোনে আড়িপাতার নির্দেশ দিতে পারেন না। আপনার মতো লোকের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতে এ বিষয়ে আইনি প্রতিবন্ধকতা রাখা হয়েছে।’
ফ্লোরিডায় নিজের অবকাশকেন্দ্র থেকে শনিবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে ওবামা বিরুদ্ধে ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ এনে টুইট করেন ট্রাম্প।
আড়িপাতার ঘটনাতে ট্রাম্প ‘নতুন হীন কাজ’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, এটি ‘নিক্সন/ওয়াটারগেট’। ১৯৭২ সালের ওয়াটারগেট কেলেংকারি রাজনৈতিক ইতিহাসে খুবই উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এ কেলেংকারির দায় নিয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের পতন হয়। রাজনৈতিক চরবৃত্তি, অন্তর্দ্বন্দ্ব ও ঘুষ কেলেংকারি গণমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যায় এবং এর চাপে বেসামাল হয়ে পড়েন নিক্সন।
নিক্সন/ওয়াটারগেটের উল্লেখ করে ওবামার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনলেন।
আর ম্যাককার্থিইজমের যে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প, তা হলো- ১৯৫০-এর দশকে অপ্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে সিনেটর ম্যাককার্থির নেতৃত্বে কমিউনিস্ট ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন শুরু হয়। তার অভিযোগ ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের বিভিন্ন স্তরে সোভিয়েত গুপ্তচররা কাজ করছে। এর ভিত্তিতে পরে ম্যাককার্থিইজন নামে অভিধা চালু হয়ে যায়। এখন ভুয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, কথাসর্বস্ব ও অপ্রমাণিত কোনো ঘটনা বোঝাতে ম্যাককার্থিইজম ব্যবহার করা হয়।
রক্ষণশীল রেডিও উপস্থাপক মার্ক লেভিনের অভিযোগের সূত্র ধরে ওবামার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তা ছাড়া মার্ক লেভিনের অভিযোগ থেকে খবর প্রকাশ করে ব্রেইটবার্ট নিউজ নামে সংবাদপত্র।
সূত্র: রাইজিংবিডি