এ কি ধরনের প্রতিবাদ !

নিজস্ব প্রতিবেদক: এ কি ধরনের প্রতিবাদ। কোনো ঘোষণা ছাড়ায় কয়েকজন শিক্ষার্থী রাতের আধারে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুষদের ভেতরে শতাধিক ভাস্কর্য উল্টে করেছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দাবি আদায় এবং নিরাপত্তার দাবিতে মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের একদল শিক্ষার্থী ‘অভিনব’ এ প্রতিবাদ করেছেন।

তবে তাদের এ কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ ক্ষোভ র‌্যালি বের করা হয়।

সোমবার গভীর রাতে সবার অগোচরে ৬/৭ জন শিক্ষার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন ভাস্কর্য বিভাগের সভাপতি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে রাবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ও নাট্যব্যক্তিত্ব মলয় কুমার ভৌমিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা কখনও আন্দোলনের ভাষা হতে পারে না। আন্দোলনের নামে শিল্পকর্মের অবমাননা করা হয়েছে। দাবি আদায়ের অনেক পথ খোলা রয়েছে। সেসব বাদ রেখে ভাস্কর্য উল্টে রাখা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।’

এ বিষয়ে মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তফা শরিফ আনোয়ার বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থীর এই কাণ্ডে বিভাগ তথা গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। এটা কখনও প্রতিবাদের ধরন হতে পারে না।’ কেন এটা করা হল, যথাযথ উত্তর দিতে না পারলে অবশ্যই তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

                                     প্রতিবাদে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ র‌্যালি

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কয়েকজন ছাত্র এটা করেছে। তাদের মধ্যে সামান্য অসন্তোষ ছিল। তেমন কিছু করেনি, এলোমেলো করে রেখেছে।’ সবাই তো একরকম হয় না। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা তাদের দাবি শুনেছি। ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’

এর আগে মঙ্গলবার সকালে চারুকলা চত্বরে শিক্ষার্থীদের তৈরি করা ভাস্কর্যগুলো এলোমেলো পড়ে থাকতে দেখে অন্য শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানাজানি হলে গোটা ক্যাম্পাসে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিভাগে গিয়ে মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের মাস্টার্সের ওই শিক্ষার্থীরা ঘটনায় নিজেরা জড়িত বলে স্বীকার করেন।

তারা দাবি করেন, অনুষদ চত্বরে সীমানা প্রাচীরসহ সার্বিক নিরাপত্তা ও বিভাগের উন্নয়নের দাবিতে তারা এ কাজ করেছেন।

জড়িত শিক্ষার্থী ইউসুফ আলী স্বাধীন ও ইমরান হোসেন রনি জানান, চারুকলা চত্বরে নিয়মিত বহিরাগতরা এসে নেশা করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। মাঝে মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বেও জড়িয়ে পড়ে তারা। এজন্য সীমানা প্রাচীরসহ অন্য দাবিতে তারা এটা করেছেন বলে জানান।

রাতের অন্ধকারে ভাস্কর্য তছনছের বিষয়ে ইমরান হোসেন রনি বলেন, ‘দিনের বেলায় এসব করলে স্যাররা বাধা দিতেন। তাই রাতে করা হয়েছে। আমরা ৩০/৪০ ছিলাম। আমরা আমাদের শিল্পকর্মের নিরাপত্তা চাই।’

তবে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সঞ্জয় বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবির সঙ্গে একমত। কিন্তু তার জন্য এভাবে শিল্পকর্মের অবমাননা করা উচিত হয়নি। ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সবাই একমত না। গুটি কয়েক শিক্ষার্থী নিজেদের সিদ্ধান্তে এসব করেছেন।
স/আ