এসিআই’র ‘জাম্প’ ব্যবহার করে মরতে বসেছে গোদাগাড়ীর ২০০ বিঘার ধান

আব্দুল বাতেন, গোদাগাড়ী:

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষকরা এসিআই গ্রুপ কেয়ারের আগাছা নাশক কীটনাশক জাম্প ব্যবহার করে প্রায় ২০০ বিঘার জমির ধান মরতে বসেছে।

সবেমাত্র ধান লাগিয়ে কৃষক যখন একটু প্রশান্তির ছায়া খোঁজে তখন বাংলাদেশের স্বনামধন্য কোম্পানী এসিআইয়ের কীটনাশক ব্যবহার করে ফসলের বিরাট ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের বিড়ইল গ্রামের কৃষকরা।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৪০ দিন পূর্বে তারা নিজনিজ জমিতে ধান লাগায়। ধান লাগানের ১৫-২০ দিন পার হলে জমিতে ঘাসসহ অন্যান্য আগাছা দেখা দেয়। সেই আগাছা পরিষ্কার করার জন্য এসিআই গ্রুপ কেয়ারের  জাম্প নামক আগাছা নাশক কীটনাশক জমিত ব্যবহার করে জমিতে লাগানো ধানগাছ গুলো মরে যাচ্ছে। ধানের গাছের ঘোড়ার জরে পঁচন ধরে অনেক ধানগাছ মরে গেছে। আর যেগুলো আছে সেগুলো বড় হচ্ছে না। গাছগুলো জীর্ণশীর্ন হয়ে আছে গাছ আর বড় হবে না বলে কৃষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

গোগ্রাম ইউনিয়নের বিড়ইল গ্রামের কৃষক মোঃ ফারুক বলেন, আমি ১২ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছি। ধানের জমিতে  ঘাস দেখা দিলে স্থানীয় কীটনাশক ডিলার ওবাইদুলের নিকট হতে এসিআই গ্রুপ কেয়ারের ‘জাম্প’ নামের আগাছা নাশক কীটনাশক ব্যবহার করার পর হতেই ধানের গাছের গোড়া পঁচে গিয়ে মরতে আছে। অনেক বাঁচানোর চেষ্টা করেও লাভ হচ্ছে না। ধানের বয়স ৪০-৪৫ দিন হয়ে গেল তবুও আর এসব বালাই হতে বাঁচা যাবে না বলে মন্তব্য করেন।

একই গ্রামের কৃষক মোঃ টুটুল সিল্কসিটি নিউজকে জানান, আমি  ১৫ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। ধানের জমিতে আগাছা পরিষ্কার করার জন্য জাম্প কীটনাশক ব্যবহার করে ধান মরে যেতে বসেছে। প্রতিবিঘা জমিতে ৮ হাজার টাকা খরচ এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব না। কোন রকক কিছু ধানের গাছ বাঁচলেও ধানের ফলন বিঘাপ্রতি ৫-৭ মণের বেশী হবে না বলে মন্তব্য করেন।

এমদাদুল নামের অপর এক কৃষক বলেন, ধান আবাদ করে স্বনামধন্য কোম্পানীর নামে যদি কোম্পানীগুলো কৃষকদের অত্যান্ত নিন্মমানের কীটনাশক কৃষকদের মেরুদন্ড ভেঙ্গেদেয় তাহলে কৃষকরা বাঁচবে কীভাবে ?। সঠিক ও ভালো মানের ঔষধ না দিয়ে কোম্পানীগুলো পকেটে টাকা ঢুকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আর কৃষকরা বসছে পথে। কোম্পানীর গুলোর সঠিক তদারকি ও কৃষকদের ফাঁসানোর জন্য তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চান তিনি।

গোগ্রাম ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সারওয়ার জাহিদ মোঃ ফিরোজের সাথে কথা বললে এসিআই কোম্পানীর জাম্প ব্যবহার করে ধানের ক্ষতি হচ্ছে বলে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা মাঠে পরিদর্শন করেছি এই সতত্যা পেয়েছি। এই পর্যন্ত ৬৩ জন কৃষক ক্ষতি হয়েছে বলে তালিকা ভুক্ত করা হয়েছে। এসিআই কোম্পানীর কর্মকর্তরা এসে দেখে গেছেন বলে জানান।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, আমরা ধানমারা যাওয়ার বিষয়টি শোনার পরপরই সরেজমিনে তদন্ত করেছি এবং রিপোর্ট উপর মহলে পাঠিয়েছি। পাশাপাশি এই কীটনাশক বাজারে বিক্রয় করতে নিষেধ করে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে বলে জানান।

স/অ