মঙ্গলবার , ৯ জানুয়ারি ২০১৮ | ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

এলইডি বিলবোর্ডে কর ফাঁকির অভিযোগ!

Paris
জানুয়ারি ৯, ২০১৮ ১২:১২ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সড়কে শোভা পাওয়া এলইডি বিলবোর্ড ব্যবস্থাপনায় কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে।সংস্থার সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা এলইডি নাম পরিবর্তন করে ভিন্ন নাম ব্যবহার করে ট্যাক্স কমিয়ে দিচ্ছেন। ফলে সংস্থাটি বিপুল পরিমাণ ট্যাক্স হারাচ্ছে।

সিটি করপোরেশনের আইন অনুযায়ী, করপোরেশনের নিজস্ব জায়গায় এলইডি বোর্ড স্থাপনে প্রতি স্কয়ার ফুটের জন্য বছরে ২০ হাজার টাকা ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গার জন্য ১০ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হয়। সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। কিন্তু ডিএসসিসির এলাকায় স্থাপিত এলইডি বোর্ডের ট্যাক্স কমাতে কর্মকর্তারা নামই পরিবর্তন করে দিয়েছেন। ফলে যে বিলবোর্ডের জন্য প্রতি বর্গফুটে ২০ হাজার টাকা ট্যাক্স পাওয়ার কথা ছিল সেখানে সংস্থাটি ট্যাক্স পাবে মাত্র ৮শ’ টাকা। তবে ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশন বোর্ডের ট্যাক্স ধরা হয়েছে এক হাজার একশ টাকা।

জানা গেছে, নগরজুড়ে এলইডি বিলবোর্ড বসানো হলেও সেগুলো নাম পরিবর্তন করে বলা হচ্ছে- ‘পরিচিতিমূলক ওভারহেড সাইনবোর্ড (অনালোকিত)’, ‘ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশন’, ‘ডিজিটাল স্ক্রিন’, ‘এলইডি বিলবোর্ড’, ‘এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড’, ‘এলইডি স্ক্রিন’, ‘ডিজিটাল এলইডি বিলবোর্ড’, ‘ডিজিটাল এলইডি ডিসপ্লে’, ‘ডিজিটাল মাল্টিভিশন’।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে নির্বাচিত হয়ে দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র এনালগ বিলবোর্ড নবায়ন বন্ধ করেন। পরে সব বিলবোর্ড উচ্ছেদ করে ডিজিটাল এলইডি বিলবোর্ড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থা দুটি। এর মধ্যে ডিএসসিসি এলাকায় ৫১১টি এলইডি বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়।

একইসঙ্গে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে পুরো ব্যবসাটি নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিলবোর্ড ব্যবসায়ীদের সংগঠন আউটডোর অ্যাডভার্টাইজিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন আমাদের মতো শতশত বিলবোর্ড ব্যবসায়ীকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। আমাদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ ঘোষণা করে নিলামে বিক্রি করে দিয়েছে। এখন সংস্থাটি তিন-চারটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এই বিলবোর্ডের কাজ করাচ্ছে। যারা অতীতে কখনও এই ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। বারবার আবেদন করার পরেও করপোরেশন আমাদের দিকে নজর দিচ্ছে না। অথচ আমরা নিয়মিত ট্যাক্স পরিশোধ করে আসছি।’

অভিযোগ আছে, নগরীতে এলইডি বিলবোর্ড বসানোর কাজ দেওয়া হয়েছে ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকনের আত্মীয়দের। যেসব প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো- অ্যানেক্স কমিউনিকেশন, মেসার্স জনতা এন্টারপ্রাইজ, টিসিএল অপটো ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও টপটেন মার্ট লিমিটেড।

ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অ্যানেক্স কমিউনিকেশনকে ৪টি পরিচিতিমূলক সাইনবোর্ড, টপটেন মার্ট লিমিটেডকে ১টি এলইডি, মেসার্স জনতা এন্টারপ্রাইজকে ৪০টি এবং টিসিএল অপটোইলেকট্রনিক্স লিমিটেডকে ৪৬৬টি বিলবোর্ড বসানোর কাজ দেওয়া হয়েছে। কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তগুলো হলো ডিএসসিসির কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করা এবং ডিএসসিসি ও সরকারের উন্নয়ন কাজ প্রচারের জন্য ২৫ শতাংশ সময় সংরক্ষণ করা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট দফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রথম অবস্থায় টপটেন মার্ট লিমিটেডকে ১টি ও টিসিএল অপটোইলেকট্রনিক্স লিমিটেডকে ১০টি ৮ ফুট প্রস্থ ও ১২ ফুট দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট এলইডি বিলবোর্ড স্থাপনের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠান দুটি বিলবোর্ড স্থাপনের পর কর পরিশোধ করতে এসে খেয়াল করে প্রতি স্কয়ার ফুট বিলবোর্ডের জন্য তাকে ২০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করতে হবে। তখন তারা ট্যাক্স কমানোর জন্য তদবির শুরু করে। পরে করপোরেশন থেকে বিলবোর্ডের নাম সংশোধনের জন্য আবেদন করতে বলা হয়।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসসিসির কর্মকর্তারা জানান,এলইডি বিলবোর্ড নামে যেসব বিলবোর্ডের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে সেগুলো আসলে এলইডি নয়,বিষয়টি ভুলবশত হয়েছে। পরবর্তীতে এই বিলবোর্ডগুলোর নাম পরিবর্তন করে ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশন নাম দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে ট্যাক্সের হার ২০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে এক হাজার একশ টাকা করা হয়।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসূফ আলী সরদার বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ যেভাবে অনুমোদন দিয়েছেন আমরা সেভাবেই ট্যাক্স আদায় করছি।’

নির্ধারিত মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আবেদনপত্র মূল্যায়নের একটি কমিটি রয়েছে। কমিটি যেভাবেই অনুমোদন দিয়েছে সেভাবেই কাজ দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে, ডিএসসিসির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এলইডি বোর্ড স্থাপন করতে চায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সংস্থাটির বিলবোর্ডের দায়িত্বে থাকা প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর মো. আবদুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। নীতিমালায় যেভাবে বলা হবে আমরা সেভাবে কাজ করবো। এ কারণে এলইডি বিলবোর্ড স্থাপনের বিষয়টি আমাদের এলাকায় আপাতত স্থগিত আছে।’

 

বাংলা ট্রিবিউন

সর্বশেষ - অপরাধ ও দুর্নীতি