সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
টাঙ্গাইলে দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সরকার দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি অশোক কুমার সিংহের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলী আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুম এই আদেশ দেন।
জেলা গোয়েন্দো (ডিবি) পুলিশের ওসি অশোক কুমার সিংহ বলেন, দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় এমপি রানাকে আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাদের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। ঘটনার পর দিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলা তালিকাভুক্ত করে।
এই মামলায় গ্রেপ্তার খন্দকার জাহিদ, শাহাদত হোসেন এবং হিরন মিয়া হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন, এমপি রানার নির্দেশে যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।
মুক্তিযোদ্ধা ও টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে এমপি রানা কারাগার রয়েছেন।
এই মামলায় এমপি রানা ছাড়াও তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪ জন আসামি রয়েছে।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল জিবিজি কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদ রুবেলকে হত্যার চেষ্টার মামলায় আমানুর রহমান রানার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ দুপুরে টাঙ্গাইল সদর আমলী আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম গোলাম কিবরিয়া তার জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ৩ মে এ মামলায় এমপি রানাকে গ্রেপ্তারের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামছুল ইসলাম। পরে আদালত আজ বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেন। শুনানির জন্য বেলা সাড়ে ১১টায় রানাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে টাঙ্গাইল আদালতে আনা হয়। পরে রানা আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন জানালে বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন।
২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর রাতে ঘাটাইল জিবিজি কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদ রুবেলকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা। এ হামলায় আবু সাঈদ পঙ্গু হয়ে যান।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামি আব্দুল জব্বার বাবু ঘটনার সঙ্গে রানার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর আদালতে জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে আব্দুল জব্বার জানান, এমপি রানা কারাগারে থেকে আবু সাঈদকে কিছু করার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশমতো হত্যার উদ্দেশে সাঈদের ওপর হামলা করা হয়।