এমপি ফারুক চৌধুরী ও অধ্যক্ষ সেলিম রেজার সংবাদ সম্মেলন: পেটানোর ঘটনা সত্য নয় দাবি 


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে আলোচিত এমপি কর্তৃক গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষকে মারপিটের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে কলেজ অধ্যক্ষকে পেটানোর ঘটনা সত্য নয় দাবি করেছেন রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী। একই সঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা নিজে মারপিটের শিকার হননি বলেও দাবি করেছেন।

রাজশাহী মহানগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় এমপি ফারুক চৌধুরীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন এমপি ফারুক চৌধুরী, অধ্যক্ষ সেলিম রেজা ও মাটিকাটা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আওয়াল রাজু।

অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৩ জুলাই ২০২২ দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় আমাকে ও এমপি মহোদয়কে নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে যা মিথ্যা ভিত্তিহীন ও মনগড়া। এমপি সাহেবের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একটি কুচক্রী মহল আগামী ১৫ ই জুলাই তানোর উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল কে কেন্দ্র করে গোদাগাড়ী তানোর নির্বাচনী এলাকায় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর সুনাম, উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মনগড়া কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করেছেন।

সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে একজন ব্যক্তি আমার বাসায় প্রবেশ করেন এবং আমাকে অভিযোগ করার জন্য বিভিন্নভাবে উসকানি দেন ও আমার ছবি তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমি ছবি তুলতে দেইনি। আমি কোনো প্রকার অভিযোগ বা মন্তব্য প্রকাশ করিনি। তারপরেও আমাকে ও এমপি মহোদয়কে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছেন। প্রকৃতপক্ষে আমরা কয়েকজন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ ঈদ উপলক্ষে এমপি সাহেবের অফিসে দেখা করতে গিয়েছিলাম এসময় আমাদের অধ্যক্ষ ফোরামের কমিটি গঠন এবং অভ্যন্তরীন অন্যান্য বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে তর্ক বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে এম.পি মহোদয় আমাদের কে নিবৃত করেন। এছাড়া আর অন্য কোনো ঘটনা ঘটেনি।

সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, অধ্যক্ষ ফোরামের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে গত ৭ জুলাই তার কার্যালয়ে যা ঘটেছে তা বিকৃতি করে উপস্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। একটি চক্র ইস্যু তৈরী করার জন্য মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে আমার সম্মানহানী করেছে।

তিনি আরও বলেন, মূলত ঈদের আগে শুভেচ্ছা বিনিময়র করার জন্য অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের ডাকা হয়েছিল। সেখানে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে তারা। বিশেষ করে অধ্যক্ষ আব্দুল আওয়াল রাজু ও অধ্যক্ষ সেলিম রেজার মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে আমি গিয়ে তাদের থামায়।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) রাত ৯টার দিকে রাজশাহী নগরীর থিম ওমর প্লাজায় রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে। যা গত মঙ্গলবার জানাজানি হয়। এর পর তা গণমাধ্যমে ছাপা হলে তোলপাড় শুরু হয়।

বুধবার ঘটনাটি তদন্তে কমিটি গঠন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে মারধরের ঘটনা জানার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান এই তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব সরেজমিনে ঘটনা বিস্তারিত জেনে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেন উপাচার্য।

এস/আই