এমপির হস্তক্ষেপে শিবগঞ্জে আম নিয়ে শঙ্কট কাটল, আজ থেকে কেনাবেচা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট আম বাজারে আম কেনা-বেচা নিয়ে শঙ্কটের সমাধান হলো। স্থানীয় এমপি গোলাম রাব্বানীর হস্তক্ষেপের বুধবার রাতে আমচাষি ও আড়তদারদের নিয়ে বৈঠক করে এ সমস্যার সমাধান করা হয়।

এর ফলে কানসাটে তিন দিন ধরে আম কেনা-বেচা বন্ধ থাকার পরে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারো শুরু হয়েছে আমের বেচা-কেনা।

এর আগে গতকাল দুপুরেো চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট আম বাজারে আড়তদারদের কোনো প্রকার কমিশন ছাড়াই আম বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান। কৃষকদের স্বার্থে কোনো অনিয়ম চলতে দেওয়া হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ার করেন।

তবে রাতে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে বিষয়টির সমাধানের উদ্যোগ নেন এমপি গোলাম রাব্বানী। তিনি ওই সভায় উপস্থিত না থাকলেও তার নির্দেশে উভয়পক্ষ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়। এরপর দুই পক্ষ আম নিয়ে সৃষ্ঠ জটিলতা নিরসনে এগিয়ে আসে। ফলে আজ থেকে আবার আম কেনাবেচা শুরু হয় কানসাটে।

এর আগে আমের ওজন নিয়ে জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে আম বেচাকেনা বন্ধ করে দিয়েছিল কানসাটের আড়তদাররা। এতে করে আমের ভরা মৌসুমে চরম বিপাকে পড়েছিল শিবগঞ্জ উপজেলার আমচাষীরা। তিনদিন ধরে আম বিক্রিবন্ধ থাকায় অনেক বাগানে আম পচতে শুরু করেছিল।

সমস্যা সমাধানে গত পড়শু (মঙ্গলবার) কানসাটের আম ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের সাথে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন আলোচনায় বসেন। এর আগে কানসাট ইউনিয়ন পরিষদেও উভয়পক্ষকে নিয়ে কয়েকদফা বৈঠক হয়। তবুও কোন সমাধানে আসতে পারেননি স্থানীয় আম ব্যবসায়ী ও আড়তদারগণ।

অবশেষে বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের এমপি গোলাম রাব্বানী একান্ত প্রচেষ্টায় উভয়পক্ষ নিয়ে কানসাট শেখ রাসেল মিলনায়তনে আলোচনায় বসেন। শেষে দুই পক্ষই আজ থেকে আম বেচাকেনা শুরু করবেন বলে সিদ্ধান্ত দেন।

সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আড়তদারকে ৪৫ কেজি মণে আম দিবেন বাগান মালিক ও চাষীরা, সাথে একটা সললা আম (অতিরিক্ত একটা আম) দিতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে আমের ওজন হবে এবং কোনো কমিশন দেওয়া লাগবে না।

এ সভায় আম ব্যবসায়ী এবং আড়তদার নেতৃবৃন্দ ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন কানসাট ইউপি চেয়ারম্যান বেনাউল ইসলাম, এমপিপূত্র ও যুবলীগ নেতা আলহাজ্ব আহমেদ ইমতিয়াজ শিশির প্রমূখ।

কানসাট আম আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী এমদাদুল হক জানান, যুগ যুগ ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাইকারী বাজারে ৪৫-৪৮ কেজিতে মন হিসেবে আম বেচাকেনা হয়। অথচ দীর্ঘদিনের এই প্রথাকে ভেঙ্গে এবার জেলা প্রশাসন ৪০ কেজিতে মন ধরে আম বিক্রির সিদ্ধান্ত তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়। তিনি বলেন কাঁচাপণ্যে মনে ৪/৫ কেজি দেয়ার ঘটনা সব জায়গায় ঘটে। অথচ জেলা প্রশাসন তা আমলে নিচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে তারা আম কেনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে বুধবার রাতের বৈঠকের পরে তারা আজ থেকে আবার আম কেনাবেচা শুরু করেছেন।

উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিষমুক্ত আম উৎপাদনের জন্য এই বছর সভা করে ‘আম ক্যালেন্ডার’ প্রনয়ন করা হয়েছিল। ওই সভায় জেলায় আম ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য আলোচনার মাধ্যমে ৪০ কেজিতে মন এবং ডিজিটাল মেশিনে আম ওজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

স/আর