এমপিরা কোথাও ত্রাতা কোথাও লাপাত্তা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট সংকটে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অনেকে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা সরকার, দলগত ও ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে মাঠ পর্যায়ে থেকে সংকট মোকাবেলায় সচেষ্ট রয়েছেন। এর বিপরীত চিত্রও কম নয়। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দল থেকে নির্বাচিত অনেক সংসদ সদস্যকে তাঁদের নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণ এই সংকটের সময় পাশে পাচ্ছে না। অনেক সংসদ সদস্য আবার লোক-দেখানো দায়সারা কিছু তৎপরতা চালাচ্ছেন। এসব নিয়ে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ করার ঘটনাও ঘটছে। করোনাভাইরাসের এই মহা দুর্যোগের সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংসদ সদস্যদের ভূমিকার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক  বলেন, ‘করোনার ফলে সরকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এ কারণে অনেক নেতা ও এমপি এলাকায় যাচ্ছেন না। তবে তাঁরা মোবাইলে নিজের এলাকায় দুর্যোগ মোকাবেলায় নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন। এমপিদের পক্ষে অনেক নেতাকর্মী কাজ করছেন।’

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এই সংকট মোকাবেলায় অনেক সংসদ সদস্য নিজ নিজ এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে আছেন। খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া, মানুষকে সচেতন করা, ঘরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করা, সাধারণ মানুষের মনোবল চাঙ্গা রাখতে তাঁরা বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বয়স ও স্বাস্থ্যগত কারণে অনেক সংসদ সদস্য এলাকায় না গেলেও তাঁদের প্রতিনিধিরা তৎপর রয়েছেন।

করোনা সংকটের প্রথম থেকেই মাঠ পর্যায়ে তৎপর রয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও জয়পুরহাট-২  আসনের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তিনি রংপুর বিভাগ আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক। গত ২২ মার্চ সকালে বগুড়া সার্কিট হাউসে স্থানীয় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, স্বাস্থ্যসেবায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা, আওয়ামী লীগের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে স্পেশালাইজড আইসোলেশন হাসপাতাল হিসেবে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়। একই দিন বিকেলে তিনি জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্যসেবাদানকারী ব্যক্তিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে কোয়ারেন্টিনের জন্য একটি ‘নিরাপদ অতিথিশালা’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। যার ব্যয় ব্যক্তিগতভাবে বহন করছেন তিনি।

করোনা মোকাবেলায় তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ইউনিয়ন পর্যায়ে আড়াই লাখ সাবান, পাঁচ টন ব্লিচিং পাউডার বিতরণ করেন। এই সামগ্রীগুলো বিতরণের সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা মানুষদের করোনা ভাইরাসের বিষয়ে সচেতন করেন। জয়পুরহাটে ৩০০ ব্যক্তিগত সুরক্ষা গাউন (পিপিজি) বিতরণ করা হয়েছে এবং বর্তমানে গ্রাম পুলিশদের পিপিজি বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।

নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা নানা সহযোগিতা নিয়ে তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সহস্রাধিক হতদরিদ্র মানুষকে খাদ্য সহায়তা, চিকিৎসাসেবায় যুক্তদের পিপিই প্রদানসহ করোনার সময় মানুষের চিকিৎসাপ্রাপ্তি ও দুর্ভোগ লাঘবে সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছেন মাশরাফি।

তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী নিজে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় থেকে মানুষের খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। এরই মধ্যে তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন। নিজের নির্বাচনী এলাকায় করোনা রোধে সরকারের নানা কাজের সমন্বয় করছেন তিনি।

টাঙ্গাইল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের এলাকায় তাঁর পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ফোনে এলাকার মানুষের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন।

রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। করোনা রোধে তিনি ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জ থেকে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় বাড়িতে আসা ব্যক্তিরা সঠিকভাবে কোয়ারেন্টিন মানলে তাঁদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। শাহরিয়ার আলমের পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা মাঠে কাজ করছেন। শাহরিয়ার আলমের হয়ে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেরাজ সরকারকে হাট-বাজারে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, মানুষকে সচেতন করার নানা কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।

রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুল হাকিম এবং তাঁর পুত্র ব্যবসায়ী আশিক মাহমুদ মিতুল হাকিম তিনটি উপজেলার ৩২ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন। মানুষের পাশে থাকতে পিতার নির্দেশে নির্বাচনী এলাকায় রয়েছেন মিতুল হাকিম। তিনি প্রতিদিন এলাকার মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। একসঙ্গে ১৫ দিনের খাবার দেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া জিল্লুল হাকিম আরো দুটি উদ্যোগ নিয়েছেন। এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে নবজাতকদের জন্য শিশুখাদ্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর ডাক্তারদের সহায়তায় পাঁচটি মেডিক্যাল টিম করা হয়েছে। হটলাইনে এই ডাক্তারদের সহায়তা চাওয়া যায়। কোনো গ্রাম থেকে ফোন এলে মিতুল হাকিম নিজে ডাক্তার নিয়ে রোগীর বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন। এ ছাড়া এই আসনের হাসপাতালগুলোয় পিপিই ও চিকিৎসাসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তাঁরা দিয়েছেন ৫০ লাখ টাকা।

রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি কাজী কেরামত আলী তেমনভাবে মাঠে না থাকলেও তাঁর ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ—এ দুই উপজেলার ২৫ হাজার মানুষের খাদ্য সহায়তার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি এরই মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া শুরু করেছেন।

সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় এক হাজার ১০০ হতদরিদ্র ব্যক্তিকে ত্রাণ দিয়েছেন সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক। তিনি বহু ভিক্ষুকের বাড়িতে গিয়ে নিজে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক নিজ এলাকায় অবস্থান করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই সংকটকালে তিনি কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলতে সহযোগিতা করছেন। প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সাক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য জগলুল হায়দার নানাভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে নিজ এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

দুর্যোগকালে দেখা মিলছে না যাঁদের

এ দুর্যোগের সময় অনেক সংসদ সদস্যকে পাশে পাচ্ছে না দুর্ভোগে থাকা নির্বাচনী এলাকার সাধারণ মানুষ। ফলে অনেক আসনের সংসদ সদস্যদের ওপর চরম ক্ষুব্ধ সেখানকার মানুষ।

গত বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদ এরশাদের বাসভবন ঘেরাও করে ত্রাণ প্রত্যাশীরা। তারা রংপুর মহানগরীর দর্শনা এলাকায় পল্লী নিবাস ভবনটির সামনের মহাসড়কও অবরোধ করে। বিক্ষোভকারীরা এ দুর্যোগের সময় সাদ এরশাদকে এলাকায় না পাওয়া ও তার পক্ষে কোনো ত্রাণ তৎপরতা না থাকার অভিযোগ করে স্লোগান দেয়। রংপুর মহানগরের অনেকেই একাধিক ফেসবুক গ্রুপে ‘একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি’ শিরোনামে সাদ এরশাদের খোঁজ চাইছেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের সঙ্গে তাঁর নির্বাচনী এলাকার ত্রাণ প্রত্যাশী এক ব্যক্তির কথোপকথন এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই দুর্যোগের সময় ত্রাণ প্রত্যাশী ওই ব্যক্তি সহায়তা চেয়ে সংসদ সদস্যের ধমক খেয়েছেন। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর অবশ্য কালের কণ্ঠকে জানান, এমপিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারেই কাজ করছেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপলুর পক্ষে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় কোনো ধরনের ত্রাণ তৎপরতা নেই। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, পাপলুর সমর্থক নেতাকর্মীরাও জানে না তিনি কোথায় অবস্থান করছেন। লক্ষ্মীপুর জেলার অন্য তিনটি আসনের সংসদ সদস্যরাও এই দুর্যোগের সময় এলাকার মানুষের পাশে সেভাবে দাঁড়াননি।

কক্সবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন আক্তারের পক্ষেও করোনার এই দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উল্লেখযোগ্য কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। শাহীন আক্তার আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির স্ত্রী। চট্টগ্রামে বেশির ভাগ আসনের মানুষের পাশেই নেই সংসদ সদস্যরা।

বগুড়া জেলার সাতটি সংসদীয় আসনের মধ্যে অন্তত ৪টিতে সংসদ সদস্যদের পক্ষে কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার বেশির ভাগ সংসদ সদস্য নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নিষ্ক্রিয়। রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর বেশির ভাগ সংসদ সদস্যেরই খোঁজ পাচ্ছে না এলাকার সাধারণ মানুষ। রাজধানী ঢাকার সংসদীয় আসনগুলোতেও সংসদ সদস্যদের তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না। গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, নারায়ণগঞ্জেরও একই অবস্থা। সিলেট জেলার বেশির ভাগ সংসদ সদস্যকে পাশে পাচ্ছে না সেখানকার জনসাধারণ।

পাঁচটি সংসদীয় আসন নিয়ে নরসিংদী জেলা। দেশে করোনা সংকট মোকাবেলায় নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনের সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ছাড়া অন্য সংসদ সদস্যরা স্থানীয় জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। খাদ্যসামগ্রী থেকে শুরু করে পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও নগদ অর্থ বিতরণ করেছেন কেউ কেউ।

করোনা পরিস্থিতির এই সময়ে শেরপুরে তিনজন সংসদ সদস্যের একজন মাঠে থাকলেও অন্য দুজন ঢাকায় অবস্থান করছেন। বর্তমানে এলাকায় রয়েছেন শেরপুর-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য হুইপ আতিউর রহমান আতিক। শেরপুর-২ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক চান চলতি মাসের প্রথম দিকে দুদিন এলাকায় অবস্থান করলেও দুই সপ্তাহ আগে তিনি ঢাকায় চলে যান।

মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) সংসদীয় আসনের ছয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, সাবেক চিফ হুইপ ড. আব্দুস শহীদ করোনার এই দুর্যোগে এলাকার জনগণের পাশে নেই। মাসখানেক আগেও তিনি প্রতিনিয়ত কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় নানা কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। স্থানীয় এমপি জনগণের পাশে না থাকায় দলীয় নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বিগত সময়ে বন্যাসহ নানা দুর্যোগে এলাকায় এলেও বর্তমানে এলাকায় নেই তিনি।

করোনার দুর্যোগে টাঙ্গাইলের আটটি সংসদীয় আসনের মধ্যে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি আতাউর রহমান খান এলাকায় সাধারণ মানুষের পাশে নেই। অবশ্য এ আসনের সাবেক এমপি (বর্তমান এমপি আতাউর রহমান খানের ছেলে) এলাকায় যাচ্ছেন, ত্রাণ দিচ্ছেন। বাকি আসনের এমপিরা এলাকায় আছেন, ত্রাণও দিচ্ছেন।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ