এমন পরিস্থিতিতে কি ঘুম আসে : চঞ্চল

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

‘হাওয়া’ ছবির শুটিংয়ে সেন্টমার্টিনে অবস্থান করছেন জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র কারণে সেখানে আটকা পড়েছে ‘হাওয়া’র পুরো টিম। বর্তমানে সেন্টমার্টিনের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন চঞ্চল। ছবির কাজ ও সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন’র মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।

কেমন আছেন?

ভালো আছি। সেন্টমার্টিনের পরিবেশ এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তবে সাগর এখনো উত্তাল। বর্তমানে আকাশে রোদ ঝলমল করছে।

সেন্টমার্টিনে কতদিন ধরে শুটিং করছেন?

আজ নিয়ে পুরো এক মাস। গত মাসের ১০ তারিখ আমরা সেন্টমার্টিনে এসেছি। এখনে আরও পাঁচ-সাত দিনের কাজ আছে। এর মধ্যে আবার বুলবুল চলে এলো। চারদিন ধরে কাজ বন্ধ আছে। ‘হাওয়া’ ছবির পুরো গল্পটাই সাগর আর জেলেদের নিয়ে। ছবির প্রায় ৮০ ভাগ কাজই হচ্ছে গভীর সাগরে। তাই সাগর শান্ত না হলে শুটিংয়ে যাওয়া যাবে না। আগামীকাল যদি পরিবেশ ঠিক হয়, তবে আবার আমার শুটিংয়ে যাবো।

গভীর সাগরে শুটিং করার অভিজ্ঞতা কেমন?

এখনো গা শিউরে ওঠে। এই ছবির শুটিংয়ের স্মৃতিগুলো আমি কোনোদিন ভুলব না। গত মাসে আমরা যখন সেন্টমার্টিনে আসি, তখন পুরো অফ-সিজন। সেই সময় সেন্টমার্টিনে বড় জাহাজ যায় না। তাই আমরা টেকনাফ থেকে একটা ট্রলারে করে সেন্টমার্টিনে আসি। উত্তাল সাগরে ট্রলার যেভাবে দোল খেলেছে, ভয় সেখান থেকেই শুরু হয়েছে। এত বড় বড় ঢেউ কখনো দেখিনি। এরপর গভীর সাগরে। পাড় থেকে এতটা দূরে যেতে হয়, যেখান থেকে কোনো দ্বীপ বা নৌকার চিহ্ন দেখা না যায়। গভীর সাগরে একটা মাছ ধরার ট্রলারে শুটিং, একটু চিন্তা করে দেখেন।

গভীর সাগরে কি শুধু আপনাদের ট্রলারই ছিল?

হ্যাঁ। তবে একদন একা বলা যাবে না। একটি ট্রলারে আমরা শুটিং করি আর শুটিংয়ের সরঞ্জাম, জেনারেটর, খাবারসহ অন্যান্য প্রয়োজনী সমগ্রী থাকে অন্য ট্রলারে। ক্যামেরার ফ্রেমে যাতে অন্য ট্রলানটি না আসে, সে কারণে ওই ট্রলারগুলো অনেক দূরে থাকতে হয়। শুটিংয়ে যাওয়ার আগে আমরা আবহাওয়া সংবাদ জেনে তারপর শুটিংয়ে যাই। গত শুক্রবার আমরা সাগরে গিয়ে ঢেউ দেখে ভয় পেয়ে যাই। বড় বড় ঢেউয়ের কারণে সেখানে থাকতে পারলাম না। ১০ মিনিটের মধ্যে তীরে চলে আসতে হলো।

সেন্টমার্টিনে আপনার সঙ্গে আর কারা আছেন

ছবির সব শিল্পীরাই এখানে আছেন। এখানে ছবির পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন, অভিনয় শিল্পী নাফিজা তুশি, সুমন আনোয়ার, শরিফুল রাজ, রিজভি, নাসির, মাহমুদসহ অনেকেই আছেন। সঙ্গে শুটিং ইউনিটের লোকজনও আছে।

‘বুলবুল’র কারণে গতকাল সেখানকার পরিস্থিতি কেমন ছিল?

আমরা যে হোটেলে উঠেছি, সেটি দোতলা আর সাগরের খুব কাছে। বাতাসের ঝাপটাটা সোজা এসে লাগে। পুরো হোটেল শুটিং ইউনিট বুক করে নিয়েছে। গতকাল খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে কেটেছে। যদিও এখানকার নৌবাহিনী, কক্সবাজারের প্রশাসন সর্বক্ষণ আমাদের খোঁজ-খবর নিয়েছে। তারপরও মনের মধ্যে একটা দুশ্চিন্তা ছিল। আমরা হোটেলের মধ্যেই অবস্থান করেছি, বাইরে বের হইনি।

ঘূর্ণিঝড়ের রাত কেমন কেটেছে?

এমন পরিস্থিতিতে কি ঘুম আসে। সারাক্ষণই তো চিন্তার মধ্যে। কিছুক্ষণ পরপর পরিবারের লোকজন ও পরিচিতরা ফোন করে চলেছে। গতকাল প্রায় দুই থেকে আড়াই’শ ফোন রিসিভ করেছি। দুশ্চিন্তা কমাতে সবাই মিলে আড্ডা দিয়েছি, কার্ড খেলেছি। ঘুমিয়েছি রাত প্রায় ২টার দিকে।

‘হাওয়া’ ছবিতে আপনার চরিত্রের নাম কী?

তা তো এখন বলা যাবে না। তবে এইটুকু বলি, একজন মাঝির চরিত্রে আমি অভিনয় করছি। পুরোটা জানতে হলে ছবি মুক্তির অপেক্ষা করতে হবে।