এবার ধর্মঘটে রামেক হাসাপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্নি ডাক্তারের মারপিটের ঘটনার জের ধরে এবার ধর্মঘট শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে মারপিটের ঘটনার সঙ্গে জড়িত রোগীর বন্ধু রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী মনিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার দুপুর দুইটার দিক থেকে ইন্টার্নি চিকিৎসকরা ধর্মঘট ‍শুরু করেন। এর আগে তারা হাসপাতাল চত্তরে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

 

এদিকে হঠাৎ করে ধর্মঘট শুরু করায় রোগীসহ  স্বজনরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

 

ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামেক হাসপাতাল ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপু। তিনি সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘মঙ্গলবারের ঘটনার সঙ্গে জড়িতকে গ্রেপ্তারের জন্য ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিল হাসপাতাল পরিচালককে। কিন্তু বুধবার দুপুর পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় হাসপাতালের সবকটি ওয়ার্ডের ইন্টার্নি চিকিৎসকরা প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করে দিয়ে ধর্মঘট শুরু করেছেন।

 

প্রসঙ্গত, রাজশাহী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জনি হোসেনকে (২০) রামেকের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার সহপাঠিরা দুপুর ১২টার দিকে তাকে দেখতে যায়। এসময় তারা রোগী জনির কাছে ভিড় করলে তাদের ইন্টার্নি ডাক্তার অপু বাইরে চলে যেতে বলেন।

 

একপর্যায়ে অপু রামেক ছাত্রলীগের সভাপতি পরিচয় দেন। এই কথা শুনে জনির সহপাঠি মনিরুল ইসলামও নিজেকে ছাত্রলীগকর্মী বলে পরিচয় দেন।  এ সময় কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
হাসপাতাল সূত্র মতে, এই ঘটনার পরে ইন্টার্নি চিকিৎসকরা মঙ্গলবার প্রায় আধাঘন্টা চিকৎসা সেবা বন্ধ রাখে। পরে তারা রামেকের পরিচালক ব্রিগিডিয়ার জেনারেল এএফএম রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তারা পরিচালককের কাছে বিচারের দাবি করে এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে মনিরুল ইসলামকে গ্রেফতার দাবি করেন। পরে পরিচালক তাদের বিচারের আশ্বাস দিলে তারা আবার কাজ ফিরে যান।

 

এর আগে সকাল ৮ দিকে রামেকের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে নাটোরের গুরুদাসপুরের সোলেমান (৬০) মারা যায়। এরপর ভুল চিকিৎসায় ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন রোগীর স্বজনরা।

 

পরে ইন্টার্নি ডাক্তার সুকান্তর সঙ্গে রোগীর স্বজন মামুনের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইন্টার্নি চিকিৎসকরা কিছুক্ষণের জন্যে চিকিৎসা বন্ধ করে দেন। তবে পরে আবার পুরোদমে চলে।

 

এদিকে দুটি ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে অবাধে রোগীর স্বজন প্রবেশ বন্ধ কেরে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একজন রোগীর জন্য একটি করে পাশ দিয়ে হাসপাতালের অভ্যান্তরে প্রবেশ করার পুরনো সেই নিয়ম চালু করে কর্তৃপক্ষ। এতে করে হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত ব্যবস্থা চালু করায় ভোগান্তিতে পড়েন রোগীর স্বজন ও রোগীরা। এরই মধ্যে বুধবার দুপুর থেকে নতুন করে ধর্মঘটের কারণে আরো ভোগান্তিতে পড়েছেন ইন্টার্নি চিকিৎসকরা। নতুন ও পুরাতন রোগী সবাই এ ভোগান্তিতে পড়েছেন।

স/আর