সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবং বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দানাদার কেমোফাস ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নয়াদিল্লির আঞ্চলিক অফিসের জ্যেষ্ঠ কীটতত্ত্ববিদ ডা. ভি নাগ পাল।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের আমন্ত্রণে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ পরামর্শ দেন তিনি।
সভায় উপস্থিত এক বিশেষজ্ঞ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ বিশেষজ্ঞ আমাদের আমন্ত্রণে এসেছেন।
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন কীভাবে আমরা বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এর মধ্যেই তিনি আমাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে কাজ শুরু করছি।
ভি নাগ পাল বলেছেন, বাংলাদেশে সিটি কর্পোরেশন ‘কেমোফাস’ নামে যে তরল ওষুধ মশা মারতে ছিটায় তার মেয়াদ এক সপ্তাহের কম থাকে। কিন্তু ‘কেমোফাস’ ওষুধের দানা আছে, ওই দানা ছিটালে ২১ দিন পর্যন্ত কাজ করে। ফলে মশার ডিম থেকে লার্ভা হতে পারে না।
অধ্যাপক আজাদ বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ভি নাগ পালের ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা। তিনি এসেছেন মূলত এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পরামর্শ দিতে। ইতিপূর্বে তিনি ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মালদ্বীপে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
এই কীটতত্ত্ববিদ আমাদের বলেছেন, অ্যানোফিলিস মশা সাধারণত একজনকে কামড়ানোর দুই দিনের মধ্যে আর নতুন কাউকে কামড়ায় না। কিন্তু এডিস মশা রক্তের চাহিদা মেটাতে চার থেকে পাঁচজনকে কামড়ে থাকে।
একটি স্ত্রী এডিস মশা ১০০টির মতো ডিম পাড়ে। ডিমগুলোও ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করতে পারে। ডিম থেকে লার্ভা ও লার্ভা পিউপা এবং পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ মশায় ভাইরাসটির জীবন প্রক্রিয়া চলমান রাখতে পারে। তাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিসের প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে।
নাগ পাল বলেছেন, এডিস মশা যানবাহনের স্তূপ, অফিসে এবং বাসার ভাঙাচোরা আসবাবপত্র জমা করে রাখা স্থানে এডিস বেশি দেখা যায়। এডিস মশা মারার ক্ষেত্রে তার পরামর্শ, বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ করে মশার ওষুধ স্প্রে করতে হবে। খাট, চেয়ার, টেবিল ও বিছানার নিচে ওষুধ ছিটাতে হবে। যেখানে মানুষ বেশি থাকে, সেখানে এডিস মশা বেশি থাকে। তাই ড্রেনে মশার ওষুধ ছিটিয়ে এডিস নির্মূল করা সম্ভব নয়।
মহাপরিচালক জানান, আন্তর্জাতিক মানের এই কীটতত্ত্ববিদ বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। তিনি আগামী সোমবার ঢাকায় গণমাধ্যমকমীদের সঙ্গে তার পরামর্শ তুলে ধরবেন।