এক সপ্তাহেও খোঁজ মেলেনি গাজীপুরে অপহৃত বাগমারার ওয়াহাবের

বাগমারা প্রতিনিধি:

গাজিপুরের জয়দেবপুর থেকে নিখোঁজ হওয়া রাজশাহীর বাগমারার আবদুল ওয়াহাবের (৩৮) সন্ধান চেয়েছেন তার পরিবার। অক্ষত অবস্থায় ফিরে পাওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। আজ সোমবার (১২নভেম্বর) দুপুরে বাগমারা প্রেসক্লাবে এসে নিখোঁজ ওয়াহাবের স্ত্রী সেলিনা এই দাবি জানান। গত ৬ নভেম্বর তার স্বামীকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এর পর থেকে তার স্বামী নিখোঁজ রয়েছেন।
আবদুল ওয়াহাব উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের সগুনা গ্রামের আলহাজ ইউসুফ আলীর ছেলে। তিনি গাজিপুরের জয়দেবপুরে বিআরটিএ-তে চাকরি করতেন এবং স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সেখানেই থাকতেন।

নিখোঁজ যুবকের বাবা ইউসুফ আলী বলেন, গত মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর তার ছেলে আবদুল ওয়াহাব এক সহকর্মীর সাথে দেখা করার জন্য ভাড়া বাড়ি থেকে বের হন। বাড়ির সামনে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা একদল অপরিচিত লোক তাকে ধরে একটি মাইেক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো হদিস করতে পারেননি। খরবটি জানার পর পরের দিন গাজিপুরে গিয়ে ছেলের সন্ধানের চেষ্টা করেন। তবে কোনো হদিস করতে না পেরে ওইদিন (৭ নভেম্বর) তিনি গাজিপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তবে জিডিকে তিনি তুলে নেওয়ার কথাটি উল্লেখ করেননি বলে জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আবদুল ওয়াহাব বিআরটিএ’র নম্বরপ্লেট শাখায় কর্মরত ছিলেন। কেন তাকে তুলে নেওয়া হলো তা বলতে পারছেন না। ঘটনার পর থেকে পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। ছেলে এলাকায় বা গাজিপুরেও কোনো খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেন তিনি।

নিখোঁজ ওয়াহাবের স্ত্রী সেলিনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দুই শিশু সন্তান নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই বাসার বাইরে এসে স্বামীকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। এ সময় মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি স্বামী সর্ম্পকে বলেন, কোনো খারাপ লোকজনের সঙ্গে তাঁর উঠবস বা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। অফিসের কাজ শেষে বাড়িতেই থাকতেন। স্বামী নিখোঁজের পর থেকে শিশু সন্তানেরা সব সময় কান্নাকাটি করছে। স্বামীকে অক্ষত অবস্থায় দ্রুত উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বাগমারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজের ঘটনায় জিডির পর গাজিপুর থানা থেকে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। তবে বাগমারা থানায় নিখোঁজ আবদুল ওয়াহাবের বিরুদ্ধে কোনো মামলা, অভিযোগ বা জিডি নেই। এলাকার লোকজনের কাছ থেকে খোঁজ-খবর নিয়ে তাঁকে ভালো হিসাবেই জানা গেছে।

জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজিপুর সদর থানার উপপরিদর্শক শহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, পুলিশ নিখোঁজ যুবককে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিজেই বিষয়টি দেখছেন। এছাড়াও সারাদেশে বেতারবার্তাও পাঠানো হয়েছে।

স/শা