এক যুগ পর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গৃহপরিচিকার হত্যা রহস্য ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিবেকের দংশনে পড়ে অবশেষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এক যুগ পর গৃহপরিচিকা হত্যা ও ১৪ টুকরা লাশ রহস্য ফাঁস করেছেন অভিযুক্তের শ্যালক মাফিকুল ইসলাম মুন্না। এ হত্যাকান্ডে রাজশাহীর ঠিকাদার আনিসুর রহমান ও পরিবার জড়িত বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। অভিযোগকারী মুন্না রাজশাহী নগরীর চন্ডীপুর এলাকার মৃত আলহাজ্ব আবু বাক্কারের ছেলে। আর অভিযুক্ত আত্বীয় সম্পর্কে তারই বোন জামাই হচ্ছে।

বুধবার দুপুরে নগরীর কফিবার রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুন্না বলেন, চন্ডিপুর কদমতলা মোড়ের দখলীয় ৬ কাঠা জমিও তার ভগ্নিপতি আনিসুর রহমান জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ছোট বোন শাহানাজ রহমান কেমির সাথে তার বিবাহের পর তাদের সম্পত্তি গ্রাস করার লক্ষ্যে সুপরিকল্পিতভাবে মুন্নাকে ভগ্নিপতি আনিসুর রহমান মানষিক রোগী বানানোর চেষ্টায় সাময়িকভাবে সফল হয়। এরপর ২০০৬-১০ সালে মানসিক চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মুন্নার জমিতে বড় বিল্ডিং করবে মর্মে মৌখিক স্বর্তে (৪০ শতাংশ ফ্ল্যাট প্রদান) কৌশলে দান স্বত্বে দুই দফায় ওই ৬ কাঠা জমি রেজেষ্ট্রি করে নেয়। দলিল নং- ১৬৪৪৭, তাং- ০৪/১০/২০১১ ও দলিল নং- ১২৫০৮, তাং- ১২/০৮/২০১২। এরপর ওই জমিতে শুভেচ্ছা নিবাস-২ নামে ৮ তলা ভবন নির্মান করেন। কিন্তু চুক্তি মোতাবেক এখন পর্যন্ত মুন্নার প্রাপ্য ৪০ শতাংশ ফ্ল্যাট প্রদান করছে না। উল্টো মুন্নাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এ ঘটনায় গত ১০ জানুয়ারি রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডাইরী (নং-৫৫৭) করেন মুন্না।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, গত ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সেই নারকিয় হত্যাকান্ডের ঘটনা আনিসুর ঘটায়। যে ঘটনাটি সে সময় দেশের সকল গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশও হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণেই সে ঘটনা আজও উম্মোচিত হয়নি। ওই নারীর ১৪ টুকরো উদ্ধারকৃত লাশ অজ্ঞাত হিসাবেই মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে দাফন করে।

তিনি বলেন, সে সময় আমি ব্যবসায়িক কাজে যশোরে থাকা অবস্থায় ভগ্নিপতি আনিসুর রহমান আমাকে ফোন করে বলে দ্রুত ঢাকায় ডাকে। এরপর আমি ঢাকায় ভগ্নিপতি আনিসুর রহমানের বাসায় যাই এবং দেখি ডাইনিং-এ গৃহপরিচিকার লাশ পড়ে আছে। এরপর ঘটনাটি আমি তার কাছ থেকে জানি এবং প্রতিবাদ করি। তখন বলে, এ কথা প্রকাশ করলে তোর বোনকে তালাক দিয়ে তো দিবোই উল্টো তুই নিজে এই মেয়েকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছিস পুলিশের কাছে একথা বলে ধরিয়ে দিবো। বোনের সংসারের কথা বিবেচনা করে মুখ বন্ধ রাখি। কিন্তু বিবেকের তাড়নায় আর সে রহস্য চাঁপা রাখতে পারছিনা।

সম্পত্তি ফিরে পাওয়া বা চুক্তিকৃত ৪০ শতাংশ ফ্ল্যাট পাবার আশায় ঘটনাটি এখন প্রকাশ করছি এমনটি ভাবার কোনই কারণ নেই বলেও উল্লেখ করেন মুন্না। এসময় গৃহপরিচিকা খুন রহস্য উদঘাটন করে খুনি আনিসুর রহমানের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিও করেন মুন্না।

সংবাদ সম্মেলনে, অন্যান্যের মধ্যে মুন্নার প্রতিবেশী হাবিবুল বাসার, সবুজ হোসেন, রকেট খান, তানভীর হাসান ও মঈন উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের সত্যতার বিষয়ে জানতে বুধবার বিকালে একাধিকবার ঠিকাদার আনিসুর রহমানের সেলফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

স/শ