এক বিলিয়নিয়ারের সব বিলিয়ে দেওয়ার স্বপ্নপূরণ

টাকা-পয়সায় ধনী তো অনেকেই হয়ে থাকেন। কিন্তু ঠিক কজন সেই সঙ্গে মনের দিক দিয়েও হয়ে ওঠেন বড়লোক? গুণলে তালিকাটা হাতের দুটো আঙ্গুলও হয়তো পেরোবে না। তবে সংখ্যাটা যতটুকুই হোক না কেন এর প্রথম দিকে যে নামটি উজ্জ্বল রঙয়ে দেখা যাবে সেটি হচ্ছে চাক ফিনি। প্রচণ্ড ধনী এই আইরিশ আমেরিকান একের পর এক দান করে বিশ্বে বিশেষ নজির স্থাপন করেছেন।

নাম করা ডিউটি ফ্রি শপার্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সাবেক এই বিলিয়নিয়ার যেন উল্টো পথের যাত্রী। সম্পদ আর বিলাসিতায় তিনি গা ভাসাননি। ৮৯ বছর বয়স্ক ফিনি খুব সহজেই পৃথিবীর অন্যতম জাঁকজমকপূর্ণ প্রাসাদে বাস করতে পারলেও বাস্তবে এই মানুষটির না আছে নিজের কোনো বাড়ি, না আছে কোনো গাড়ি। আর দশটা সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন তার। ফিনির নিজের গড়া ফাউন্ডেশন ‘দ্য আটলান্টিক ফিলানথ্রপিস’ থেকে চ্যারিটি হিসেবে বিশ্বব্যাপী আট বিলিয়ন ডলারেরও বেশি দান করা ।

বেঁচে থাকতেই নিজের সম্পদ মানুষের কল্যাণে এভাবে বিলিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি যে নজির দেখালেন তা আধুনিক বিশ্বে অন্যন্য ও অগ্রগণ্য। এ মাসের মধ্যে তিনি নিজের সারা জীবনের স্বপ্ন পরিকল্পনা মাফিক সম্পদের সবটুকু উজাড় করে ৩৮ বছরের ফাউন্ডেশন ‘দ্য আটলান্টিক ফিলানথ্রপিস’ এর ইতি টেনেছেন। তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডের স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্যান্য খাতের উন্নতিতে ফাউন্ডেশনের অবশিষ্ট সবটুকু নগদ দান করেছেন। এছাড়া খুব সম্প্রতি তিনি নিউইয়র্ক সিটির রুজভেল্ট দ্বীপকে একটি প্রযুক্তি কেন্দ্রে রুপ দিতে সাড়ে তিনশ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন।

ফিনির অনুদানের মধ্যে ৩.৭ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে শিক্ষা খাতে এবং ৮৭০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে মানবাধিকার ও সামাজিক প্রেক্ষাপটের উন্নয়নে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য খাতেও ফিনির অনুদান রয়েছে। তিনি ওবামা কেয়ারেও অনুদান দিয়েছেন। এই সম্পদশালী দাতা ফোর্বসকে জানিয়েছেন, আমরা অনেক কিছু শিখি, আমাদের ভিন্ন কিছু করতে হবে। যাইহোক আমি খুবই সন্তুষ্ট। আমি প্রচন্ড শান্তি ও পরিপূর্ণতা অনূভব করছি যে নিজের সময়কে কাজে লাগিয়েছি।

উল্লেখ্য, ফিনির বেশির ভাগ অনুদানই বেনামে এবং তিনি দানের বিষয়গুলো লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করেন। তিনি ২০১২ সালে বলেছিলেন, তার অবসরে তিনি ও তার স্ত্রীর জন্য মাত্র দুই মিলিয়ন ডলারের ফান্ড রেখেছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে এক ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করছেন। যেখানে তার সাদাসিধে জীবনযাপন। পরোপকারের জেমস বন্ড খ্যাত এই দাতার উদারতায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন বিল গেটস ও ওয়ারেন ব্যাফেটও।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন