এক বছরের কমিটিতে অর্ধযুগ পার

গোলাম রববিল, রাবি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সবশেষ কমিটি গঠন করা হয় ছয় বছর আগে। এক বছরের জন্য গঠিত ওই কমিটি অর্ধযুগ পূর্ণ করেছে গত ১১ ডিসেম্বর (২০২২)। এই সময়ে মাত্র দুটি বর্ধিত সভা ও একটি কর্মিসভা করেছেন কমিটির নেতারা। কার্যনির্বাহী কমিটির কোনো সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই শতাধিক নেতাই এখন নিষ্ক্রিয়। অনেকেই বিবাহিত, চাকরি করছেন।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২৫তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরে ১১ ডিসেম্বর গোলাম কিবরিয়াকে সভাপতি ও ফয়সাল আহমেদ রুনুকে সাধারণ সম্পাদক করে রাবি ছাত্রলীগের ১৩ সদস্যের প্রাথমিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০১৭ সালে।

এদিকে গত ছয় বছরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিকবার কমিটি দেওয়ার জন্য সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাদের। গত ২৫ অক্টোবর এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১২ নভেম্বর শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনের দিন ঘোষণা করা হয়। ৫ নভেম্বর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) জমা দেন ৯৪ জন পদপ্রত্যাশী। কিন্তু পরে সেই সম্মেলন স্থগিত করা হয়। এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাধিক পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মী। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় কর্মকাণ্ডেও স্থবিরতা এসেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি না হওয়ায় আমরা পদপ্রত্যাশীরা খুবই হতাশ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সিভি আহ্বানের কয়েক দিন পর সম্মেলনের দিন ঘোষণা করলেও এখন পর্যন্ত তা হয়নি। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন হয়ে গেছে। নতুন নেতৃত্বের প্রতি অনুরোধ, অতি দ্রুত রাবি ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়া হোক।’

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চলা বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের কমিটি গঠন করেছেন। আগামী কমিটিতে পদপ্রত্যাশী কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান দুই শীর্ষ নেতা স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে হল কমিটি গঠন করেছেন, যাতে শেষ সময়ে তাঁদের দিয়ে অপকর্মের মাধ্যমে অর্থ আয় করতে পারেন। এরই মধ্যে হল কমিটিতে থাকা বেশ কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থী নির্যাতন, ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি, মাদক কারবার ও আসন বাণিজ্যের মতো অপকর্মেরও অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভর্তি পরীক্ষা দিতে বাস মালিকদের জিম্মি করে অর্থ আদায়, খাবারের হোটেল থেকে চাঁদা আদায়, একাডেমিক ভবন নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায়সহ নানা অভিযোগ তোলেন এসব পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মী।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, সংগঠনের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতেই হল কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি। আর অপকর্মের বিষয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জি/আর