ঋণের শর্ত পূরণে ব্যর্থ, আইএমএফকে ব্যাখ্যা দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল চলতি বছরের জুনের মধ্যে নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ (এনআইআর) ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে রাখা। তবে, সেই শর্ত পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির আগে শর্তের অগ্রগতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে আইএমএফ।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ঋণের শর্তানুযায়ী যেসব সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে সে বিষয়ে আইএমএফকে অবহিত করেছে। আর যেসব শর্ত পূরণ করতে পারেনি তার কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।বুধবার (৪ অক্টোবর) সকালে আইএমএফের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে চলা বৈঠক শেষে এ কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। আর ইডিএফের তহবিল বাদ দিয়ে আইএমএফের হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার।
সংস্থাটির শর্তে আলোকে অক্টোবর মাসের জন্য নিট রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলার থাকার কথা ছিল। আর গত জুনের মধ্যে রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে রাখার কথা ছিল, যা পূরণে ব্যর্থতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের এবারের শুরুর বৈঠক হয়েছে। ঋণের শর্তানুযায়ী যেসব সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে সে বিষয়ে তাদের অবহিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেসব শর্ত পূরণ করতে পারেনি তার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রমতে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ভর্তুকি রিজার্ভ, ব্যাংক, খেলাপি ঋণ, মুদ্রানীতি, অর্থপাচার, পুঁজিবাজার ও রাজস্ব পদ্ধতিতে সংস্কারসহ সামগ্রিক অর্থনীতির বিষয়ে আইএমএফের আলোচনা শুরু আজ থেকে। দাতা সংস্থটির অনেক শর্ত পূরণ ছাড়াই আলোচনার প্রথমদিনে অর্থনৈতিক অগ্রগতি, অর্থপাচার, সরকারের ভর্তুকি, মুদ্রানীতি, রিজার্ভের সার্বিক পরিস্থিতি ও ব্যাংকি বিষয়াবলির ওপর তদারকির বিষয়টি আলোচ্যসূচি রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নের সঙ্গে আইএমএফের প্রথম বৈঠকে সংস্থাটির সফরকালীন কার্যক্রম ও পরিকল্পনার ওপর প্রেজেন্টেশনের আয়োজন করা হয়।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, আইএমএফ দল বাংলাদেশ ব্যাংকে বেধে দেওয়া সর্বনিম্ন রিজার্ভের শর্ত পূরণ, রিজার্ভ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) অর্থসহ যা অন্যান্য ব্যয়যোগ নয় তা বাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক মানদন্ডের হিসাবে রিজার্ভ গণনা, বাজারভিত্তিক একক ডলার রেট বাস্তবায়ন খতিয়ে দেখবে। আর্থিক খাতের সংস্থার, মুদ্রানীতি হালনাগাদ, বাস্তবায়নের দুর্বলতা, নীতির আলোকে সামনের দিনে সম্ভাব্যতা, ট্রজারি বিলের সুদ হার, স্মার্ট সুদহার পদ্ধতি, অর্থনীতিতে নতুন সুদহারের বাস্তব চিত্র বিশ্লিষণের নজরদারি রাখার লক্ষ্য দাতা সংস্থাটির।পূর্বনির্ধারিত বৈঠক আজ বুধবার শুরু হয়। বৈঠকে সংস্থাটি রুটিন কার্যাবলী ও পরিকল্পনার নানা দিকি তুলে ধরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবেন ঢাকায় সফররত প্রতিনিধিদল।
আগামী ১৮ অক্টোবর রেপআপ বৈঠকের মধ্যে দিয়ে আলোচনা শেষ হবে। তবে এসব বৈঠকে সঙ্গে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির কি সম্পর্ক তা এখনই বলা যাচ্ছে না।