সোমবার , ২৪ জুন ২০২৪ | ১৪ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ঋণের টাকায় ৫৮ শতাংশ অভিবাসী প্রবাসে

Paris
জুন ২৪, ২০২৪ ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ

 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

দেশের মোট অভিবাসীর মধ্যে ঋণ করে প্রবাসে যাওয়ার সংখ্যা ৫৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রামের মানুষ ঋণ করে প্রবাসে যায় ৬০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ এবং শহর এলাকার ৫১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। লৈঙ্গিক দৃষ্টিতে দেখা যায়, ঋণ করে প্রবাসে যায় পুরুষই বেশি, ৫৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর নারীর ক্ষেত্রে ৩৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

এ ক্ষেত্রে বরিশাল বিভাগের অভিবাসীদের মধ্যে ঋণ করে অভিবাসন বাবদ ব্যয় নির্বাহের হার সর্বোচ্চ, ৬৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। অন্যদিকে সিলেটে সর্বনিম্ন ৪৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি ব্যুরোর ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

জরিপে দেখা গেছে, জাতীয় পর্যায়ে ৫৮ দশমিক ২৪ শতাংশ, গ্রামে ৬০ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং শহর এলাকার ৫১ দশমিক ৮৩ শতাংশ তাদের অভিবাসন ব্যয় মেটানোর জন্য ঋণ গ্রহণ করেছেন।

বিবিএস বলছে, সাধারণত বসবাস বা কাজের উদ্দেশ্যে এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তরই আন্তর্জাতিক অভিবাসন। সর্বোপরি, মানুষ যখন নিজ রাষ্ট্রের সীমানা অতিক্রম করে গন্তব্য দেশে ন্যূনতম সময়ের (৬ মাস) জন্য অবস্থান করে, তখন তাকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন বলা হয়।

অভিবাসীদের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও কানাডা ছাড়া সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিবাসী শ্রমিক (কর্মসংস্থান) হিসেবে গমন করেছে মালদ্বীপে ৯৮ দশমিক ০৫ শতাংশ, মালয়েশিয়াতে ৯৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ, লিবিয়াতে ৯৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ, গ্রিসে ৯৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ, কাতারে ৯৫ দশমিক ২২ শতাংশ, বাহরাইনে ৯৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং সৌদি আরবে ৯৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে শিক্ষার জন্য গেছে ৩২.৫৮ শতাংশ, কানাডায় সর্বোচ্চ ৫৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ অভিবাসী।

গৃহকর্মী হিসেবে কুয়েতে অভিবাসীর সংখ্যা সর্বোচ্চ, ৭২ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এ ছাড়া ওমানে ৫৫ দশমিক ২২ শতাংশ ও সৌদি আরবে ৫০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী জনগোষ্ঠীর শিক্ষার স্তর সংক্রান্ত উপাত্ত লিঙ্গভেদে দেশভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, মোট অভিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৩ দশমিক ৯১ শতাংশ ৫ম-৯ম শ্রেণি পাস। এ ছাড়া এসএসসি ও সমমান ১৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ, এইচএসসি ও সমমান ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ১ম-৪র্থ শ্রেণি পাস ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ কখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়নি।

প্রশিক্ষণ-আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তি সরবরাহ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক অভিবাসী আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে নিজেকে যোগ্য করার জন্য বিদেশ যাওয়ার পূর্বে তার কর্মসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকে। বর্তমানে সরকারি, বেসরকারি অনেক সংস্থা এ ধরনের প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের মধ্যে বিদেশ যাওয়ার পূর্বে কর্মসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী এবং প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসংক্রান্ত উপাত্ত পল্লী-শহর ও বিভাগভিত্তিক উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রদত্ত উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদেশ যাওয়ার পূর্বে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী মোট অভিবাসীর সর্বোচ্চ ৪৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। এ হার পল্লী ও শহর এলাকায় যথাক্রমে ৪৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ৫৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী মোট অভিবাসীর ৪০ দশমিক ৫৪ শতাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এ হার পল্লী এলাকায় ৪২ দশমিক ৭৩ শতাংশ ও শহরাঞ্চলে ৩৩ দশমিক ৭০ শতাংশ।

দেখা গেছে, মোট প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী অভিবাসীর মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ০৫ শতাংশ বিদেশ যাওয়ার পূর্বে নির্মাণ সম্পর্কিত কাজ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ড্রাইভিং ও মোটর মেকানিক বিষয়ে ১৭ দশমিক ৯১ শতাংশ, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট বিষয়ে ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং বিদেশি ভাষা বিষয়ে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ অভিবাসী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে।

প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী অভিবাসীর মধ্যে যারা বিদেশে গিয়ে উক্ত প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ছিলেন তাদের সর্বোচ্চ ২২ দশমিক ০২ শতাংশ নির্মাণ

সম্পর্কিত কাজ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট ফিল্ডেই কাজ করছে। এ ছাড়া ড্রাইভিং ও মোটর মেকানিক ফিল্ডে ১৮ দশমিক ২১ শতাংশ এবং হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ফিল্ডে ১১ দশমিক ৯৫ শতাংশ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট ফিল্ডেই কাজ করছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের মধ্যে ১০ দশমিক ০৪ শতাংশ ব্যক্তি বিদেশ যাওয়ার পূর্বে কর্মসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে লক্ষণীয় যে, রংপুর বিভাগে এ হার সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং সিলেট বিভাগে সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ।

দেখা যায়, বিভাগভিত্তিক আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ ৭৯ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বনিম্ন ৬৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ ব্যক্তি বিদেশে যাওয়ার পূর্বে প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করেছেন।

অভিবাসন খরচ

কাজ, শিক্ষা, বসবাস বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বিদেশে গমনের ক্ষেত্রে যাতায়াতসহ সংশ্লিষ্ট সব ব্যয়কে অভিবাসন খরচ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। সৌদি আরবে গমনকারী অভিবাসীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ এর অভিবাসন ব্যয় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ দশমিক ৫০ শতাংশের ব্যয় হয়েছে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা।

মালয়েশিয়া গমনকারী অভিবাসীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৩০ শতাংশ ও বাহরাইনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ১০ শতাংশের অভিবাসন খরচ ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে ইতালির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫৩ দশমিক ১২ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩১ দশমিক ২১ শতাংশের অভিবাসন খরচ ৫ লাখ টাকার বেশি হয়েছে।

অভিবাসন খরচ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান

অভিবাসী তার অভিবাসন ব্যয় (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) যে প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করেছেন, সে প্রতিষ্ঠানই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অভিবাসন খরচ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান। আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের ক্ষেত্রে অভিবাসন ব্যয়ের অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত উপাত্ত পল্লী-শহর ও বিভাগভিত্তিক উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রদত্ত উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫২ দশমিক ০৩ শতাংশ অভিবাসন ব্যয় বাবদ অর্থ দালালকে প্রদান করেছে, যা পল্লী ও শহর এলাকার ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৫৩ দশমিক ১০ শতাংশ এবং ৪৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে দেশের ৪২ দশমিক ০৯ শতাংশ অভিবাসী এ সংক্রান্ত ব্যয়ের অর্থ প্রাইভেট কোম্পানি অথবা এজেন্সিকে এবং ৩ দশমিক ০৯ শতাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করেছে। বিভাগভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রায় সব বিভাগে অভিবাসন খরচ দালালকে (অভিবাসন সহায়তাকারী) প্রদানের হার সর্বোচ্চ, কিন্তু রংপুর বিভাগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ অভিবাসীর অভিবাসন খরচ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়।

জাতীয় পর্যায়ে অভিবাসন খরচ প্রদানকারী অভিবাসীগণের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫২ দশমিক ০৩ শতাংশ অভিবাসী তাদের খরচ দালালকে দিয়েছে।

 

 

সর্বশেষ - জাতীয়