উদ্বোধন হলেও নেই কার্যক্রম, ভবনে দেখা দিয়েছে ফাটল

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি উদ্বোধন করেন, দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের।

মা ও শিশু হাসপাতাল গরিব মানুষের একটি আস্থার নাম। হাসপাতালের ভবন আছে, রোগীদের বেডও আছে, প্রচুর রোগীও আছে; চিকিৎসকদের জন্য আবাসিক ভবনও আছে। নেই শুধু চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জাম। এছাড়াও রয়েছে ভবন নির্মাণের অনিয়মের অভিযোগ। এ ভাবেই চলছে, উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নে স্থাপিত ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।

দিনাজপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ২০১৪ সালের ১০ই মে কাজ শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ করে উদ্বোধন করা হয় এই প্রতিষ্ঠানটির। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে নেই কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। শুধু কি তাই, রয়েছে ভবন তৈরির অভিযোগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুধুমাত্র নরমাল ডেলিভারি করতে একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, একজন নার্সিং অ্যাটেন্ডমেন্ট, একজন ফার্মাসিস্ট, পাহারাদার ও ঝাড়ুদার রয়েছে। সিজিয়ারিয়ানের নেই কোন ব্যবস্থা। এছাড়াও দেখা মেলেনি কোন চিকিৎসকের। ভবনে অধিকাংশ স্থানে দেখা দিয়েছে ফাঁটল, বৈদ্যুতিক নিম্ন মানের তারের কারনে শর্টসার্কিট এর মত ঘটনা ঘটেছে অনেক বার।

সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী রহিমা খাতুন জানান, ‘এখানে আসিয়া কোন লাভে নাই। শুধুমাত্র চেকআপ ছাড়া কিছুই করা যায় না।’

সেবা নিতে আসা আরেক ভুক্তভোগী মুন্না বলেন, ‘আমার ছেলের অনেক জ্বর, চিকিৎসা নিতে বাইরে যাচ্ছি। কি আর বলব! এটা নামে মাত্র মা ও শিশু কামে নয়।’

পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আরফান সিরাজ বলেন, ‘এখানকার বৈদ্যুতিক তার খুবই নিম্নমানের ও ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। বৈদ্যুতিক বিভিন্ন সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহযোগিতায় ভবনের কিছু  অংশ মেরামত করি।’

উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সীমা নাথ বলেন, ‘এখানে জনবল না থাকার কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে, তারপরেও আমাদের  যতটুকু জনবল আছে তা দিয়ে সাধ্যমত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই হাসপাতালে প্রতিমাসে ৮ থেকে ১০ জনের স্বাভাবিক প্রসব হয়।’

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অতিরিক্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান হারুন জানান,’আমরা চিকিৎসকের চাহিদা পাঠিয়েছি। আশা করছি ৪৫ তম বিসিএস এর ডাক্তারগণ নিয়োগ হবে। এই চিত্র শুধু খানসামা উপজেলায় নয়। বাংলাদেশের সবস্থানেই এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’

দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সাড়া মেলেনি।

ছবির ক্যাপশন: ১.খানসামা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মূল ফটক। ২.খানসামা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মূল ভবন।