উজবেকিস্তানের স্কুলে হিজাব নিষেধাজ্ঞা বাতিল

উজবেকিস্তানের স্কুলগামী মুসলিম মেয়েদের হিজাব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর দেশটির শিক্ষামন্ত্রী শেরজোদ শেরমাটোভ মুসলিম মেয়েদের স্কুলে গমন নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের স্কার্ফ পরার অনুমোদন প্রদান করেন।

মধ্যএশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানে ইসলাম প্রধান ধর্ম। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতার তিন দশকে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় থেকে মুসলিমদের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় সেখানে নারীদের হিজাব পরিধানে কঠোর নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু জনসাধারণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে হিজাব নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছে দেশটির সরকার।

উজবেকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী শেরজোদ শেরমাটেভ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের জাতীয় মূল্যবোধের বিবেচেনায় স্কুলের ছাত্রীদের স্কার্ফ পরার অনুমোদন দেওয়া হবে। স্কুলে তাদেরকে সাদা হালকা রঙের কাপড় ও টিউবেটিকার (স্থানীয় টুপি) ইউনিফর্ম হিসেবে পরার পরামর্শ দেওয়া হয়।

অভিভাবকদের পক্ষ থেকে অসংখ্য আবেদনের পর সরকারের তরফ থেকে স্কুলছাত্রীদের ইউনিফর্ম পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান উজবেক শিক্ষামন্ত্রী। তবে এ পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশকে গোপনে ইসলামী করার পরিকল্পনা নেই বলে জানান তিনি।

শেরমাটেভ বলেন, ‘আমরা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের নাগরিক। শিক্ষা ও ধর্ম একটি অপরটি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবে হিজাবি মেয়েরা যেন অন্য মেয়েদের ওপর তা চাপিয়ে না দেন।’

সম্প্রতি উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকত মির্জিওয়েভ দেশটির ধর্মবিষয়ক একটি আইনে পরিবর্তন আনেন। তাতে স্বীকৃত ধর্মীয় ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের প্রকাশ্যে ধর্মীয় পোশাক পরার নিষেধাজ্ঞাকে বাতিল করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি অফিসগুলো পোশাকবিধি অনুসারে নিজেদের একটি ইউনিফর্ম তৈরি করে। নারীদের পোশাকে শিক্ষা বিভাগ নিজেদের অবস্থান শিথিল করে।

অনেক দিন যাবৎ উবেকিস্তানে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। স্কুলের নির্দেশনাক্রমে শিক্ষার্থীদের ধর্মনিরপেক্ষ ও ইউরোপীয় পোশাক পরতে হবে। সেই অনুসারে মেয়ে শিক্ষার্থীদের মাথার স্কার্ফ ছাড়াই হাঁটু পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের স্কার্ট পরতে বলা হয়। এর ফলে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা কার্যত নিষিদ্ধ করা হয়।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ