বুধবার , ২৯ মে ২০১৯ | ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ঈদে বাড়ি যাওয়া

Paris
মে ২৯, ২০১৯ ১:০৯ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ঈদ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিপুলসংখ্যক মানুষের দুশ্চিন্তা শুরু হয় বাড়ি যাওয়া নিয়ে। প্রথম সমস্যা যানবাহনের টিকিট নিয়ে, কারণ তা অত্যন্ত দুর্লভ হয়ে ওঠে। বিশেষত, ট্রেনের টিকিট কেনার প্রতিযোগিতা তীব্র হয়ে ওঠে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও অনেক মানুষ টিকিট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হন, কেউ কেউ কালোবাজারিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দামে টিকিট কিনতে বাধ্য হন। বাস ও লঞ্চের মালিকেরা নিজেদের খেয়ালখুশি অনুযায়ী টিকিটের দাম বাড়িয়ে দেন, তাঁদের টিকিট বিক্রয়কর্মীরা আরও এক দফা দাম বাড়ান। সব মিলিয়ে যানবাহনের ভাড়া নিয়ে যে নৈরাজ্য দেখা যায়, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়, কিছু কোম্পানিকে জরিমানাও করা হয়, কিন্তু পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয় না।

গত শনিবার বেসরকারি সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি ঈদ উপলক্ষে যানবাহনের ভাড়া–নৈরাজ্য বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাস, লঞ্চ ও বিমানের টিকিট কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদপত্র ও অনলাইন মাধ্যমেও এ ধরনের অভিযোগের খবর প্রকাশিত হয়েছে। ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে গুরুতর অব্যবস্থাপনা রয়েছে; একদিকে মানুষ টিকিট পাচ্ছে না, অন্যদিকে প্রায় ২৩ হাজার টিকিট অবিক্রীত রয়ে গেছে বলে সোমবার খবর বেরিয়েছে।

ঈদের ছুটিতে একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাড়ি যেতে চায়, অর্থাৎ যানবাহনের টিকিটের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু সে জন্য অতিরিক্ত হারে ভাড়া বাড়ানো নৈতিক বা আইনগত কোনো দিক থেকেই অনুমোদনযোগ্য নয়, আর টিকিটের কালোবাজারি রীতিমতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যানবাহনের মালিকদের এ অতিরিক্ত মুনাফার লোভ আরও এক দিক থেকে বিপজ্জনক। বিশেষত, বাস ও লঞ্চের ভাড়া অতিরিক্ত বেড়ে গেলে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সমস্যায় পড়ে, তারা অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ায় ফিটনেসবিহীন যানবাহনে ও পণ্য পরিবহন করা হয় এমন যানবাহনে চলাচল করতে বাধ্য হয়। এ সুযোগে চলাচলের অনুপযোগী যানবাহন আরও বেশি সংখ্যায় রাস্তায় নামে, ঈদ উপলক্ষেই সেগুলো রং করা হয়। আর এসব যানবাহন চালানোর কাজেও নিয়োগ করা হয় লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, এমনকি সামান্য অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হেলপারদের দিয়েও এসব যানবাহন চালানো হয়। তা ছাড়া, এসব যানবাহনে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী পরিবহন করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঝুঁকি বেড়ে যায়। এটা উৎসবের সময় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। সুতরাং যানবাহনের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করা জরুরি প্রয়োজন, নইলে এসব যানবাহনে যাত্রী পরিবহন ঠেকানো যাবে না।

যানবাহনের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অবৈধ তৎপরতা বন্ধ করতে সরকারের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তৎপর হওয়া উচিত। এ আধা বিচারিক সরকারি সংস্থার অনেক ক্ষমতা আছে, সেসব ক্ষমতা যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হলে অতিরিক্ত মুনাফালোভী যানবাহনের মালিকদের দৌরাত্ম্য লাগামহীনভাবে বেড়ে যেতে পারত না। এ ক্ষেত্রে বিআরটিএ ও জেলা প্রশাসনগুলোর করণীয় আছে, বিশেষত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যাপক অভিযান চালানো উচিত। যানবাহনের মালিকদের সংগঠনগুলোর কর্তব্য টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে ন্যায্যতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার উদ্যোগ নেওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করতে তারাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

সড়ক–মহাসড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি। ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী তোলা, ট্রাক ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন ঠেকাতে হাইওয়ে পুলিশকে সব সময় তৎপর থাকতে হবে। দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনার শিকার যানবাহন সড়ক–মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে, নইলে দীর্ঘ যানজট লেগে যেতে পারে। এখন কালবৈশাখীর সময়, লঞ্চ দুর্ঘটনা এড়াতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন ঠেকানোর উদ্যোগ নেওয়া একান্ত জরুরি।

সর্বশেষ - মতামত

আপনার জন্য নির্বাচিত