সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
কিশোরগঞ্জে কিশোর গ্যাং সাজ্জাদ গ্রুপের প্রধান সাজ্জাদসহ (১৭) তার দলের ১১ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দিনগত রাত নয়টার দিকে জেলা শহরের বত্রিশ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন তাতিপাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলো, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়াকান্দা গ্রামের আব্দুল আউয়ালের ছেলে কিশোর গ্যাং সাজ্জাদ গ্রুপের প্রধান সাজ্জাদ (১৭), কটিয়াদী উপজেলার গচিহাটা এলাকার মো. মোজাম্মেল হকের ছেলে আব্দুলাহ আল নোমান (১৬), একই উপজেলার করগাঁও গ্রামের মো. আইযুব হাজীর ছেলে মো. জুয়েল (১৬), জেলা শহরের উকিলপাড়া এলাকার মো. বুলবুল আহম্মেদের ছেলে মো. সানি আহাম্মেদ (১৬), স্টেশন রোড এলাকার ফজলুল মতিন সিদ্দিকির ছেলে ফজলুল করিম আকাশ (১৯), খরমপট্টি এলাকার সমির বৈষ্ণবের ছেলে সৌমিত্র বৈষ্ণব (১৬), বত্রিশ এলাকার মো. সুলতানের ছেলে ফজলে রাব্বি বাধন (১৮), একই এলাকার মুনসুর আলমের ছেলে মো. আনোয়ারুল ইসলাম (১৮), জালাল উদ্দিনের ছেলে মো. ইয়াছিন ইসলাম (১৮), রাখাল দত্তের ছেলে হৃদয় দত্ত (১৬) ও মোফাজ্জল ইসলামের ছেলে মো. আদনান ইসলাম (১৬)।
র্যাব-১৪ সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মাহবুব-উল-আলম জানান, গত ৭ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ শহরের বত্রিশ এলাকায় নতুন পল্লী সংঘ মন্দিরে দুর্গাপূজার রাতে আরতি চলার সময় কিশোর গ্যাং সাজ্জাদ গ্রুপের প্রধান সাজ্জাদ ও তার দলের সদস্যরা মেয়েদের উত্যক্ত করার মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ সময় শুভ সরকার (১৬), প্রসেনজিৎ ঘোষ (১৭) এবং তনয় বর্মন বিকাশ (১৭) নামের তিন কিশোর বাধা দিলে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাতে সাজ্জাদ গ্রুপের প্রধান সাজ্জাদ ও তার দলের সদস্যরা মিলে শুভ সরকার, প্রসেনজিৎ ঘোষ ও তনয় বর্মন বিকাশকে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ খবর পেয়ে র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে সাজ্জাদ গ্রুপের প্রধান সাজ্জাদসহ তার দলের ১১ সদস্যকে আটক করে।
আহত শুভ সরকার কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এবং প্রসেনজিৎ ঘোষ ও তনয় বর্মন বিকাশ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আটকদের কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, এ কিশোররা রীতিমতো কাগজে ছক করে হামলার ছক করে। কে কোন গলির মধ্যে থাকবে। কে কোন গলি দিয়ে বের হয়ে যাবে তা ওই কাগজে লিখে হামলার পরিকল্পনা করে।
ওই পরিকল্পনায় শুভ, ইমরান ও শাওন নামে তিনজনকে টার্গেট করা হয়। তবে এ টার্গেটের শুভর ওপর হামলা করাসহ অন্য কয়েকজনের ওপর হামলা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় র্যাবের অভিযানে ধরা পড়ে। এর আগে তারা জেলা স্মরনি সড়ক, নূরানি সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাণ্ডব চালায়।
দুর্গাপূজার দশমীর দিনে মেয়েদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করার প্রতিবাদ করায় শুভ, ইমরান ও শওনের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল কিশোর সন্ত্রাসীরা। কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী ঘটনা। আটক ১১ কিশোর সন্ত্রাসী পুলিশের জিম্মায় রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর আহতদের চিকিৎসায় ব্যস্ত থাকায় তাদের স্বজনরা ময়মনসিংহ রয়েছেন। সেখান থেকে ফিরে এলে মামলা করবে। তিনি জানান,এদের কাছ থেকেে বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়ে ছে।