ইবিতে ভর্তিচ্ছু মনে করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে মারধর করলো ছাত্রলীগ

ইবি প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নিজ দলের কর্মীকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মনে করে মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছে ছাত্রলীগ। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় জিয়া হল মোড়ে রাজুর দোকান সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ওই শিক্ষার্থীর সাথে থাকা এক ভর্তিচ্ছুকেও মারধর করে ছাত্রলীগ।

প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানায়, ওবায়দুল হক সায়মন নামের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী রাজুর দোকানে আসে। এসময় তার সাথে এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীও ছিল। সাইমন এসে বাংলালিংকের ফ্লেক্সিলোডের বিষয়ে দোকানদাররে কাছে জানতে চাইলে দোকানদার ফ্লেক্সিলোড আছে বলে সম্মতি জানায়। এসময় পাশে বসে থাকা বাংলা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাসেল সরদার সায়মনকে ডাক দেয়। সে সায়মনকে প্রশ্ন করে বাংলালিংকের কি ফ্লেক্সিলোড হয়।

সায়মন বলে হয়তো ভাই। পরে রাসেল ধমক দিয়ে বলে বাংলালিংকের ফ্লেক্সিলোড হয় না আইটপআপ হয় । এসময় রাসেল তাকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মনে করে ধমকাতে থাকে। এক পর্যায়ে রাসেল সায়মনকে কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দিয়ে সায়মনের গালে কষে দুটি থাপ্পড় মারে। রাসেলের পাশে থাকা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ইমরুল কায়েস কথা বললে তাকেও থাপ্পড় দেয়। পরে রাসেল সায়মনের রাজনৈতিক পরিচয় জানার পরও শাসাতে থাকে।

এ সময় ম্যানার শিখবি বলেও শাসায় রাসেল। সায়মন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে তাকে ও তার সাথে থাকা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ইমরুল কায়েসকে ছাড় দেয় না রাসেল।

সায়মন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন গ্রুপের কর্মী। রাসেল সরদার শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম গ্রুপের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল দলের অধিনায়ক।

ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিনকে জানালে তিনি সান্তনা দিয়ে বিষয়টি মিটমাট করার চেষ্টা করেন। এরপর রাসেল সায়মনকে ডেকে এই বিষয়টি সভাপতিকে জানানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকে।

এ বিষয়ে সায়মনের কাছে জানতে চাইলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সাইমন। সে কাঁদতে কাঁদতে জানায় আমি বাংলালিংকের ফ্লেক্সিলোড হবে কি না দোকানদারের কাছে জানতে চাই। পাশে বসে থাকা রাসেল ভাই আমাকে ডাক দিয়ে বলে বাংলালিংকে ফ্লেক্সিলোড হয়? না আইটপআপ হয়। আমি ফ্লেক্সিলোডও হয় বললে আমাকে দুটি থাপ্পড় মারেন তিনি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে আমার বিভাগের নাম নিয়েও আমাকে হেনস্থা করে রাসেল ভাই।

কাঁদতে কাঁদতে সায়মন এ প্রতিবেদককে বলেন, আর কোন শিক্ষার্থীকে যেন ভর্তিচ্ছুদের সামনে এমনভাবে অপমানিত না হতে হয়। আমি এলাকায় যেয়ে মুখ দেখাতে পারবো না। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে রাসেল সরদারের কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, নিজেদের মধ্যে একটু মন মালিন্য হয়েছিল। সে আমাদের দলের ছোট ভাই। বিষয়টি আমারা বসে ঠিক করে নিয়েছি।
স/শ