ইতালির রূপকথার নায়কের চিরবিদায়

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

 

সর্বকালের সেরা ফরোয়ার্ডদের অন্যতম পাওলো রসি। ইতালিকে ১৯৮২ বিশ্বকাপ জেতানো এই কিংবদন্তি অসীমের পথে পাড়ি জমিয়েছেন। ৬৪ বছর বয়সে মারা গেছেন তিনি। ইতালিয়ান টিভি চ্যানেল আরএআই স্পোর্ট- এ ফুটবল বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করতেন পাওলো রসি। বুধবার রাতে তারাই জানিয়েছে এই কিংবদন্তির মৃত্যুর খবর।

ইতালিয়ানদের কাছে পাওলো রসি একজন রূপকথার নায়ক। ১৯৮২ স্পেন বিশ্বকাপে খেলার কথা ছিল না তার। ম্যাচ পাতানো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৮০ সালে ৩ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন। যদিও পাওলো রসি সবসময়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন।

নিষেধাজ্ঞা কমে আসায় বিশ্বকাপে সুযোগ মেলে। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরেই রসিকে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ দেয়ায় ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যমে তুমুল সমালোচনা হয়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে পাওলো রসি গড়েন নতুন ইতিহাস। উপহার দেন বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম সেরা পারফরমেন্স।
তিন ড্রয়ে কোন রকমে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে ইতালি। তখনও স্বরূপে ফেরেননি রসি। সেসময় দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচও হতো রাউন্ড রবিন লীগ পদ্ধতিতে। দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা ১২ দলকে চার গ্রুপে ভাগ করা হয়। দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল ইতালি। ফুটবলবোদ্ধাদের মতে, বিশ্বকাপ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর গ্রুপ ছিল এটা। সক্রেটিস, জিকো, জুনিনহো, ফ্যালকাও, এডের, সের্জিনহোদের নিয়ে গড়া ব্রাজিল ছিল শিরোপাপ্রত্যাশী। অসাধারণ হ্যাটট্রিকে ব্রাজিলকে একাই হারিয়ে দেন পাওলো রসি। দ্বিতীয় রাউন্ডের ‘সি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে ব্রাজিলকে ৩-২ ব্যবধানে হারায় ইতালি। বিশ্বকাপ না পাওয়া দলগুলোর একটি মনে করায় ১৯৮২’র ব্রাজিলকে।

সেমিফাইনালে পোল্যান্ডের বিপক্ষে রসির জোড়া গোলে ফাইনালে নাম লেখায় ইতালি। ফাইনালে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়ে এক গোল করেন রসি। সর্বোচ্চ গোলদাতা ও বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ওঠে পাওলো রসির হাতে। সে বছরই জেতেন ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার। ১৯৮২ বিশ্বকাপে ৬ ও ১৯৭৮ বিশ্বকাপে ৩ গোল করেছিলেন রসি। সেটা এখনো বিশ্বকাপে ইতালির হয়ে যৌথ সর্বোচ্চ। ৯ গোল রয়েছে রবার্তো ব্যাজিও এবং ক্রিস্টিয়ান ভিয়েরির।

পাওলো রসি তার ক্লাব ক্যারিয়ারের পুরোটাই কাটিয়েছেন ইতালিতে। খেলেছেন জুভেন্টাস ও এসি মিলানে। জুভেন্টাসে পাঁচ বছরের ক্যারিয়ারে জিতেছেন একটি ইউরোপিয়ান কাপ (চ্যাম্পিয়নস লীগ) এবং দুটি ইতালিয়ান সিরি আ।

সূত্র: মানবজমিন