ইতালিতে যাওয়ার কথা বলে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া সেই সুমনকে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা


বাঘা প্রতিনিধি :
ইতালিতে যাওয়ার কথা বলে অপহরণ করে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া সেই সুমন আলীকে তিনদিন পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৮ মে) রাত ৮টার দিকে চট্রগ্রাম শহরে অপহরণকারীরা তাকে ছেড়ে দেয়। সুমন আলী বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের বাউসা ঠাকুরপাড়া গ্রামের আকাল আলীর ছেলে।

জানা যায়, উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের বাউসা ঠাকুরপাড়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী ওয়াহিদ আলীর মাধ্যমে চট্রগ্রামের আবদুর রহিম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে সুমন আলীর (২৬) পরিচয় হয়। তারপর তিনি ইতালিতে পাঠানোর জন্য আগ্রহী করে তুলেন। প্রায় তিন মাস আগে ইতালিতে যাওয়ার জন্য আবদুর রহিমের সঙ্গে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক শনিবার ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল।

এ বিষয়ে সুমন আলী বলেন, আমি বুঝতে পারিনি, কথায় আছি। আমাকে বলা হচ্ছিল ইতালিতে পৌঁছে গেছি। চুক্তি মোতাবেক টাকা দিতে হবে। আমি ভাইকে ফোন করি। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে একবার আমার ফোন থেকে ভাইকে ফোন দিয়েছিলাম। তারপর বারবার ইমোতে ফোনে কথা বলতে বলেন তারা। পরে আমি বুঝতে পেরেছি, আমাকে ব্লাক মেইল করা হচ্ছে। অবশেষে কোন টাকা পয়সা না নিয়ে আমার সব কিছু রেখে ছেড়ে দিয়েছে।

তবে চুক্তিতে উল্লেখ ছিল ইতালি পৌঁছার পর ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তার আগে কোন টাকা দেওয়া লাগবে না। সেই মোতাকেব ইতালিতে রওনা হয়। পরে দেখি চট্রগ্রামে।
এ বিষয়ে সুমন আলীর বড় ভাই সুজন আলী বলেন, ইতালি যাবে মর্মে আমার ছোট ভাইকে ঢাকা বিমানবন্দর পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে এগিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার (৫ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে উঠে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তাকে বলা হয় ইতালিতে পৌঁছে গেছি। তারপর তাকে বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে রাখা হয়। সেখান থেকে আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এ টাকা না দিলে সুমনের ক্ষতি হবে।

এ বিষয়টি নিয়ে রোববার (৭ মে) প্রথমে বাঘা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। তারপর সুমনের ফোন থেকে বারবার টাকা চাওয়া হচ্ছিল। নিরুপায় হয়ে সোমবার (৮ মে) র‌্যাব-৫ এর কাছেও অভিযোগ দায়ের করি। হটাৎ রাত ৮টার দিকে আমার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। রিসিফ করতেই ওপার থেকে সুমন বলে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে ভাই। আমি এখন চট্রগ্রামের শহরে। আমার কাছে কিছু নেই। তারা সব রেখে ছেড়ে দিয়েছে। আমি বাড়িতে আসতে চায়। রাত ৯টার দিকে রাজশাহীগামী চট্রগ্রাম বাস কাউন্টারে গিয়ে চলে আসে। তবে আমি যে অভিযোগগুলো করেছি, সেগুলো সুষ্ট তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন সুজন আলী। চট্রগ্রাম থেকে রাজশাহীগামী হানিফ পরিবহনের সপারভাইজার টুটল আলীর সহযোগিতায় মঙ্গলবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে পুঠিয়ায় পৌছে। আমরা সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।
বাঘা থানার ওসি খায়রুল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে শুনেছি, তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে থানায় ডাকা হয়েছে।