আ.লীগের মনোনয়ন চেয়ে রাজশাহীতে কপাল পুড়লো দারাসহ ৪০ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন রাজশাহীর ৪৫ নেতা। তারা দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমাও দিয়েছিলেন। এর মধ্যে রাজশাহী-১ আসনে ১১ জন, রাজশাহী-২ আসনে ৪ জন, রাজশাহী-৩ আসনে ১২ জন, রাজশাহী-৪ আসনে ৪ জন, রাজশাহী-৫ আসনে ১০ জন ও রাজশাহী-৬ আসনে ৪ জন। কিন্তু এই ৪৫ জনের মধ্যে রবিবার সকাল থেকে ছয়টি আসনের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয় ৫ জনকে। ফলে কপাল পুড়লো ৪০ জন প্রার্থীর। এর মধ্যে রাজশাহী-৫ আসনের বর্তমান এমপি কাজী আব্দুুল ওয়াদুদ দারারও কপাল পুড়েছে এবার।
সূত্র মতে, রাজশাহীর ছয়টি আসনে এবার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চেয়েছিলেন মোট ৪৫ জন। এদের মধ্যে রবিবার রাজশাহী-২ আসনটি ফাঁকা রেখে বাকি ৫টি আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ।
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে ১১ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। এদের মধ্যে বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধূরীকে তৃতীয় বারের মতো মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। তিনি ছাড়াও দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মতিউর রহমান, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান, মুন্ডুমালা পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী, আরডিএর চেয়ারম্যান বজলুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বদরুজ্জামান রবু, মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আসাদুজ্জামান, গোদাগাড়ীর মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু, জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুল ওহাব ও জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাজমুল ইসলাম। কিন্তু এই ১০ জনেরই কপাল পুড়েছে। আবোরো ফারুকের ওপরই আস্থা রেখেছে আওয়ামী লীগ।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনটি ১৪ দলীয় জোটের জন্য প্রায় নিশ্চিত। তারপরেও এ আসনে মনোনয়ন ফরম তুলে জমা দিয়েছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী, আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান বাবু ও পুর্ণিমা ভট্টাচার্য। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত এই চারজনের কাউকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ফলে এবারো এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কেউ হচ্ছেন না-এটা প্রায় নিশ্চিত। এতে দীর্ঘ দিনের খরা থেকেই গেল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে।
রাজশাহী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন ১২ জন। তাদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি ছাড়াও মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমা দিয়েছিলেন সাবেক এমপি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেছা তালুকদার, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি আখতার জাহান, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, জেলা কৃষকলীগ সভাপতি রবিউল আলম বাবু, পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান, জেলা মহিলা লীগ সভানেত্রী মর্জিনা পারভীন, এ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম শরিফ ও রোখসানা মেহেবুবা চপলা। কিন্তু বাকি ১১ জনেরই আশার গুড়ে বালি পড়েছে আয়েনের কাছে।
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন চারজন। তাদের মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী এনামুল হক। ফলে মনোনয়ন চেয়ে কপাল পুড়ছে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেছা তালুকদার, বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু ও তাহেরপুর পৌরসভার দুইবারের মেয়র আবুল কালাম আজাদের।
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের জন্য সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিতে ১০ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন। কিন্তু এবার বাজিমাত করে এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মুনসুর রহমান। ফলে এবার বর্তমান এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারাসহ কপাল পুড়েছে অন্য ৯ প্রার্থীর। কপাল পুড়া বাকি প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নরুল ইসলাম ঠান্ডু, সাবেক এমপি তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ, সংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ, যুবলীগ নেতা ওবায়দুর রহমান, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি নার্গিস সুরাইয়া আক্তার সেলী, আওযামী লীগ নেতা আবু সায়েম ও আসিফ ইবনে তিতাস।
রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছিলেন চারজন। এদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপিকে তৃতীয়বারের মতো মনোনয়ন দেওয়া হয়। বাদ পড়েন অপর তিনজন। তারা হলেন, সাবেক এমপি রায়হানুল হক রায়হান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু ও বাঘার সাবেক মেয়র আক্কাস আলী।
স/আর