আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিলের সময়সীমা বাড়িয়েছে ইসি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ২০১৫ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিলের সময়সীমা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

 

নির্ধারিত সময়ে হিসাব জমা দিতে না পারায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ ১০টি রাজনৈতিক দল ইসির কাছে সময় চেয়েছে। এর পর সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে।

 

সোমবার এ বিষয়ে ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত ৩১ জুলাই। ইসির নিবন্ধনে থাকা ৪০টি দলের মধ্যে ৩০টি রাজনৈতিক দল তাদের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে।

 

বাকি ১০টি দল গত ৩১ জুলাই হিসাব জমা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে ইসির কাছে আবেদন করেছিল। তাই ইসি তাদের আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত অতিরিক্ত সময় দিয়েছে।’

 

ইসি সূ্ত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে ১০টি রাজনৈতিক দল সময় চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছিল। দলগুলো হলো- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ)।

 

এদিকে নির্ধারিত সময়ে মধ্যে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে ৩০টি রাজনৈতিক দল। দলগুলো হচ্ছে- এলডিপি, জেপি, সাম্যবাদী দল, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, সিপিবি, গণতান্ত্রিক পার্টি, ন্যাপ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, জাকের পার্টি, তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, মুসলীম লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, পিডিপি, ন্যাপ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামী ফ্রন্ট, কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, জাগপা, বিল্পবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বিএমএল ও মুক্তিজোট।

 

চলতি বছরের ১৫ জুন ইসির নিবন্ধনে থাকা ৪০টি রাজনৈতিক দলকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে দলগুলোর মহাসচিব বরাবর চিঠি দেয় ইসি। তবে উচ্চ আদালতের রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত হওয়ায় দলটিকে এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি।

 

ইসির কর্মকর্তারা জানান, ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কোন খাত থেকে কত টাকা আয় ও ব্যয় হয়েছে, বিল-ভাউচারসহ তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য কমিশনের নির্ধারিত একটি ছকে জমা দিতে হবে। কমিশন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আয়-ব্যয়ের হিসাবের ফরম দেওয়া হয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে প্রতিটি খাত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট তথ্য তারিখসহ উল্লেখ করতে হবে।

 

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আর্থিক লেনদেনের হিসাব প্রতিটি নিবন্ধিত দলকে জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই একটি রেজিস্টার্ড চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং ফার্ম দিয়ে দলের হিসাব অডিট করাতে হবে। এ হিসাবে সদস্য সংগ্রহসহ কোন খাত থেকে কত টাকা আয় হয়েছে, কত টাকা ব্যয় হয়েছে বিল-ভাউচারসহ তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য কমিশনে জমা দিতে হবে।

 

গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ১৯৭২-এর ৯০-এইচ (১) (সি) ধারা অনুযায়ী নিবন্ধিত কোনো দল যদি পরপর তিন বছর কমিশনে আয়-ব্যয়ের তথ্য দিতে ব্যর্থ হয় তবে সে দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে নির্বাচন কমিশন।

 

সূত্র: রাইজিংবিডি