আড়ানীতে উচ্চ বিদ্যালয়ের অভাবে ৫ম শ্রেণি পাশের পর বেকায়দায় শিক্ষার্থীরা 

আমানুল হক আমান, বাঘা:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানীতে উচ্চ বিদ্যালয়ের অভাবে ৫ম শ্রেণি পাশের পর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে। এ বিষয়ে এলাকায় উচ্চ বিদ্যালয় গড়ে তুলার জন্য দাবি তুলেছেন।

জানা যায়, আড়ানী সরকারি মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন সরকারিভাবে নির্ধারন করায় স্থানীয় সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে। এ বিদ্যালয়ের অধীনে ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ৫ম শ্রেণি পাশ করার পর অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা এ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতো। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যালয়টি সরকারি হওয়ার পর থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা তালিকায় ভর্তি শুরু হয়েছে। ফলে যারা মেধাবী শুধু তারাই এ বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু যারা সাধারণ দুর্বল শিক্ষার্থী তারা এ ভর্তির সুযোগ না পেয়ে দুরের বিদ্যালয়ে যেতে চাচ্ছেনা। ফলে অনেক শিক্ষার্থী ৫ম শ্রেনি পাশ করার পর ঝরে পড়ার আশংকা করছে। ফলে এলাকার অভিভাবকরাও এ নিয়ে পড়েছে বেকায়দায়। এ নিয়ে এলাকাবাসী একটি উচ্চ বিদ্যালয় গড়ে তুলার জন্য দাবি তুলেছেন।

আড়ানী পৌর এলাকার গোচর, কুশবাড়িয়া গ্রামের দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ বিদ্যালয়ের ফলাফল ভালো হচ্ছে। অনেক সময় ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় সুযোগ পাচ্ছে না। এলাকায় কোন উচ্চ বিদ্যালয় নেই। এ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাধারণত আড়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতো। কিন্তু বিদ্যালয়টি সরকারি হওয়ার পর থেকে ভর্তির আসন সরকারিভাবে নির্ধারন করে দেয়া হয়েছে। ফলে সাধারণ দুর্বল ছাত্ররা ভর্তির সুযোগ না পেয়ে এ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে।

অপর দিকে আড়ানী, ঝিনা-১, ঝিনা-২, ঝিনা-৩, বেড়েরবাড়ি, চকসিংগা গ্রামে জয়গুননেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একই অবস্থা। এ বিদ্যালয়ের দুর্বল শিক্ষার্থী নিয়ে অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে। ফলে তারা দুরের উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হতে চাচ্ছে না। উচ্চ বিদ্যালয়ের অভাবে ৫ম শ্রেণি পাশ করার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে অনেকই দুরের স্কুলে ভর্তি না হয়ে লেখাপড়া বন্ধ করে দিচ্ছে।

এদিকে খোর্দ্দ বাউসা ও রুস্তমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আড়ানী সরকারি মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পেলেও তারা স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে।
এ বিষয়ে গোচর গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, আমার ছেলে ৫ম শ্রেণি পাশ করার পর আড়ানী সরকারি মনোমোহনিহী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পায়নি। আমি বাধ্য হয়ে ৭ কিলোমিটার দুরের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করার পরিকল্পনা করছি। কিন্তু ছেলে এতো দুরে যেতে চাচ্ছেনা। কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা। এলাকায় যদি একটি উচ্চ বিদ্যালয় থাকতো এ সমস্যা হতো না। এখন দেখছি ছেলের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।

আড়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান শাহীদ বলেন, মেয়েরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সুযোগ না পেলেও পাশে বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে। কিন্তু ছেলেদের জন্য আলাদা কোন স্কুল না থাকায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

বাঘা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, সুষ্ট পাঠদানের ক্ষেত্রে বিকল্প স্কুলের প্রয়োজন আছে। তবে এ বিষয়ে কোন ব্যক্তি প্রতিষ্টান গড়তে চাইলে সহযোগিতা থাকবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, স্থানীয়ভাবে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাথে ৫ম-৮ম শ্রেণি পর্যন্ত সংযুক্ত করা যায় কিনা, আগামী মিটিংএ শিক্ষা কমিটির কাছে উপস্থাপনা করবো।