আশার আলো দেখাচ্ছে রাজশাহীর করোনা পরীক্ষার ল্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গত কয়েকদিন থেকে একের পর এক করোনা সন্দেহে রোগী আসছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। রাজশাহী জেলা ছাড়াও বিভাগের আট জেলা থেকেই ছুটে আসছেন রোগীরা। কিন্তু বুধবার এর আগ পর্যন্ত এসব রোগীদের কারোই করনা পরীক্ষা করা সম্পন্ন হয়নি রাজশাহীতে। ফলে যাদের সামর্থ্য আছেন তারা ঢাকায় চলে গেছেন এ পরীক্ষা করাতে। কিন্তু যাদের সামর্থ্য নাই তারা রাজশাহীতেই বা বাড়িতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থেকেছেন। তবে করো না পরীক্ষা না হয় এসব রোগীদের কারোই সঠিক চিকিৎসা দেওয়াা যায়নি এ কয়দিন। ফলে অনেকের মধ্যেএ নিয়ে ভিন্ন ধারণাও তৈরি হয়।

এরইমধ্যে গত ২৯ মার্চ নওগাঁর রাণীনগরে আল আমিন (২২) এক যুবক এবং সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাটোরের লালপুরের বুলবুল হোসেন নামের (২০) নামের আরেক করোনা সন্দেহের চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। রানীনগরের ওই যুবকের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয় চিকিৎসা না পেয়েই মারা যান আল আমিন। তিন হাসপাতাল ঘুরে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কেউ তার চিকিৎসা দেয়নি। শেষে রামেক হাসপাতালে এসে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তবে সেখানেই মারা যান আলা আমিন।

এছাড়াও রাজশাহীর এক নার্সের মধ্যেও করোনা নিয়ে চরম বিভ্রন্তি তৈরী হয়। পরে ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষা করে তিনি নিশ্চিত হন তাঁর করোনা হয়নি। এভাবেই রাজশাহী ও রাজশাহীর আশেপাশের জেলার রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছিল এই অঞ্চলে করোনা পরীক্ষা না হওয়ায়। শেষ পর্যন্ত গতকাল বুধবার থেকে করোনা পরীক্ষা শুরু হওয়ায় এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা গেছে আশার সঞ্চার।

নাটোরের লালপুর উপজেলার মৃত বুলবুল হোসেনের বাবা আসলাম শেখ বলেন, আমার ছেলেকেও করোনা সন্দেহে নাটোরে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। ফলে রাজশাহীতে শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা পেলেও আর বাঁচানো যায়নি বুলবুলকে। রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, বুলবুল শ^াসকষ্ট ও হাঁপানি রোগে ভুগছিলেন।

রাজশাহীর আরেক রোগীর স্বজন হযরত আলী বলেন, এই কয়দিন করোনা পরীক্ষা না হওয়া এই সাধারণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরী হয়েছিল। এখন সেটি নিরসন হবে বলে আশা করি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা শুরু এই অঞ্চলের মানুষদের দুর্ভোগ লাঘব বলেও মনে করেন তিনি। পাশাপাশি সন্দেহজনক রোগীরাও দ্রুত চিকিৎসাসেবা পাবেন। আবার আক্রান্ত রোগীরাও সঠিক চিকিৎসাসেবা পাবেন এখন থেকে।

অন্যদিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী জানান, তাদের করানো পরীক্ষার ল্যাবে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ জন কোন সন্দেহ রোগের পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। আর রিপোর্ট দিতে সময় লাগবে অন্তত ৮ ঘন্টা। ফলে একদিন পরীক্ষা হলে পরের দিন ওই রোগীর রিপোর্ট প্রদান করা হবে। তাতে এই অঞ্চলের কোন সন্দেহ রোগীদের ভোগান্তি যেমন কমবে তেমনি কারণে আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা করা যাবে।

স/আর