আ’লীগ ও ছাত্রলীগ পুলিশের ভূমিকা পালন করছে: বুলবুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন যতই ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে পুলিশের ভূমিকা পালন করছে। পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র উচিঁয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মারধর করছে এবং পুলিশকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিচ্ছে। মঙ্গলবার হেতম খাঁ এলাকায় বিনা কারনে ছাত্রদলের নেতাদেরর মারধর করে বিএনপি ফফিস ভেঙ্গে দিয়েছে ছাত্রলীগের নামধারী সন্ত্রাসীরা। সেখানেও পুলিশ তাদের কথামতো কাজ করেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে নির্বাচন কোনভাবেই সুষ্ঠ ও অবাধ হবেনা। নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছে। তারা সম্পূর্ন বারবী ডলে পরিণত হয়েছে।

আজ বুধবার নগরীর ১৩ ও ২০ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ এর সময় বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাতকারকালে এই অভিযোগ করনে।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহীতে সরকার দলীয় প্রার্থীর নির্দেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও তাদের অঙ্গ এবং সহযোগি সংগঠনের সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা বিএনপি’র গণসংযোগ ও পাড়া মহল্লায় নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন এবং নারী কর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। এনিয়ে রাজশাহী নির্বাচন কমিশনে প্রতিনিয়ত অভিযোগ করলেও তারা নিরব দর্শকের ন্যায় ভূমিকা পালন করছে। বিএনপি একটি সু-সংগঠিত, সু-শৃংখল ও উন্নয়নমুখি একটি দল । বিএনপি’র বর্তমান অবস্থা দেখে সরকার দলীয় প্রার্থী ভীত হয়ে এই কা-গুলো করছে। পাড়া মহল্লায় ধানের শীষের গণজোয়ার বইছে। ভোটারগণ আগামী ৩০তারিখ শতবাধা উপেক্ষা করে এর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য অপেক্ষায় রয়েছে বলে বুলবুল জানান।

বুলবুল আরো বলেন, সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা জমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অফিস আদালতের কাজের ভাগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এই অবৈধ ও কালো টাকার গরমে মানুষকে তারা মানুষ বলতে ভূলে গেছে। যুবলীগ ছাত্রলীগের সুর্য্যসন্তানেদের অত্যাচারে অনেক মেয়ে পড়ালেখা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। অনেক শিক্ষক অবসর এবং ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের মিথ্যা ও প্রহসনের গুজবে অনেক শিক্ষক এখন কারাগারে এবং অনেক শিক্ষক আত্মহত্যা করেছে। ছাত্রলীগের নারী নেত্রীরা শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর মিথ্যা অভিযোগ এনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কুলশিত করছে। এছাড়াও তারা মাদক সেবন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে রোজগার করছে।

অথচ পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করে যারা সাধারণ মাদক সেবন করে তাদের ধরে নিয়ে গ্রেফতার বাণিজ্য করছে। ফলে এই শহরের আসল মাদক ব্যবসায়ীরা ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বুলবুল। তিনি আরো বলেন, গণগ্রেফতার করেও সরকার দলীয় প্রার্থী পার পাবেনা। বিএনপি ও ২০দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রুখে দিয়ে সাধারণ ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিশ্চিৎ করবে। সেইসাথে ধানের শীষ বিপিুল ভোটে জয়ী হয়ে পূণরায় কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নেবেন বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বুলবুল।

বুলবুল বলেন, নগরীর বেকার সমস্যা দূরীকরণের পদক্ষেপ গ্রহন, করের বোঝা লাঘবের জন্য নুন্যতম কর নির্ধারন, গ্যাস সংযোগ চালু করা, চিকিৎসা সেবা বৃদ্দির জন্য আরবান ক্লিনিকসমূহের সংখ্যা বৃদ্ধি ও উন্নয়ন করা এবং স্বল্প আয়ের গৃহহীন জনগোষ্ঠির জন্য গৃহীত গৃহ নির্মাণ প্রকল্প চালু রাখা হবে। এছাড়াও সরকারী স্কুল ও কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ এবং সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি কলেজ ও স্কুল স্থাপন করা হবে। কৃষি নির্ভর অর্থনীতির উন্নয়নে এ অঞ্চলে একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নেও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

যে খেলাধুলার মাঠ রয়েছে গুলোকে আরো সুন্দর এবং নতুন খেরার মাঠ তৈরা করা হবে এবং চলমান কোটা আন্দোলনকে সহযোগিতা করা হবে । সেইসাথে কোটা প্রথা সংস্কার করে মেধাবীদের চাকুরির নিয়োগ প্রাপ্তিতে পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি। রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক ফুটবল, ক্রিকেট, হকিসহ অন্যান্য টুর্ণামেন্ট এর ভেন্যু স্থাপনের লক্ষে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও একটি ইনডোর স্টেডিয়াম স্থাপন করা হবে। এছাড়াও চলমান কার্যক্রম সমুহকে আরো বেগমান করে দ্রুত এই শহরকে বিশ্বের াণ্যতম শহরে পরিণত করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা, বিধবা নারী ও সিনিয়র-সিটিজেনবৃন্দের সামাজিক নিরাপত্তাবিধান এবং সিটি কর্পোরেশনে ওয়ান স্টপ ভিত্তিক সেবা প্রদান নিশ্চিত করা হবে। সেইসাথে কর্মজীবি মহিলাদের থাকার জন্য হোস্টেল নির্মাণ এবং তাঁদের শিশু সন্তানদের দেখা-শোনার জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার গড়ে তোলা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

গণ সংযোগের সময় ভোটার ও সাধারণ জনগণের মধ্যে বিপুল উৎসাহ দেখা যায়। তারা অত্র এলাকাসমুহে ধানের শীষের স্লোগান দিয়ে মাতিয়ে রাখে। বিএনপি’র সিনিয়র নেতাদের দেখে তারা উচ্ছোসিত হয় এবং সাহস পায়। তারা স্বত:স্ফুর্তভাবে ধানের শীষে ভোট প্রদান করবেন বলে জানান। যতই হুমকী ও নির্যাতন তাদের উপর আসুক না কেন তারা ধানের শীষের পক্ষে অবিচল থাকবেন এবং ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন তারা। সেইসাথে আরওয়ামলীগের অপকর্মের তীব্র নিন্দা জানান ভোটারগণ।

গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, তানোর পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি গোলাম সাওয়ার।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউজ্জামান পরাগ ও মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবিসহ অত্র ওয়ার্ড সমুহের বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের সভাপতি, সাধারাণ সম্পাদক, শুধিজন, সমাজসেবক, বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং শত শত সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। নেতাকর্মীরা অত্র ওয়ার্ড সমুহের গোরহাঙ্গা, নিউমার্খেট, সুলতানাবাদ, বেদলদার পাড়া সহ অত্র ওয়ার্ড সমুহের সকল পাড়া মহল্লায় গণসংযোগ করেন।

 

স/আ