আ’লীগের জাতীয় সম্মেলন: পদ পেতে উন্মুখ রাজশাহী অঞ্চলের শীর্ষ নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে ঢাকায় আছেন রাজশাহী অঞ্চলের ডজন খানেক শীর্ষ নেতা। দেশের ঐতিহাসিক ও প্রাচীন এ দলটিতে অবহেলিত উত্তরাঞ্চল থেকে এবার নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত হয়েও আছেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য।

 

রাজশাহী অঞ্চল থেকে এবার সভাপতি মন্ডলীর সদস্য পদ পেতে আগ্রহীর তালিকায়্ও আছেন কেউ কেউ। তাদের মধ্যে এবার দলের সভাপতি মন্ডলির পদ পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ পদে এবার যে তিনজন নতুন মুখ আসছেন, তাদের মধ্যেও বেশ জোরে-সরে শোনা যাচ্ছে লিটনের নাম। রাজশাহী অঞ্চলের নেতারাও চেয়ে আছেন লিটনের দিকে। তাকে ওই পদে দেখতে উন্মুখ হয়ে চেয়ে আছেন এ অঞ্চলের তৃণমূলের নেতাকর্মীর-সিল্কসিটি নিউজকে এমনটিই নিশ্চিত করেছেন দলের একাধিক সূত্র।

 

এছাড়াও কেন্দ্রের সদস্য পদ পেতেও দৌড়-ঝাঁপ করছেন অনেকেই। সবমিলিয়ে রাজশাহী অঞ্চল থেকে অন্তত ডজন খানেক নেতা ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌড়-ঝাঁপ করছেন।

 
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবরের ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্দ্যানে অনুষ্টিত হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন। এই সম্মেলন ঘিরে উত্তরাঞ্চলের নেতাকর্মীদের মাঝেও শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। পাশাপাশি দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের পদ পেতেও উন্মুখ হয়ে আছেন অন্তত ডজন খানেক শীর্ষ নেতা।

 
সূত্র মতে, মোহাম্মদ নাসিমের পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে রাজশাহী অঞ্চলের নেতাদের তেমন কোনো পদ নাই। কিন্তু এবার সেই শূন্যতা কাটিয়ে উঠতে আগ্রহী এ অঞ্চলের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাজশাহী অঞ্চলের তৃণমূল নেতাদের দাবি, অবহেলিত এ জনপদটিতে উন্নয়নের জন্য দলের জন্য ত্যাগী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রয়োজন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় শীর্ষ পর্যায়ে এ অঞ্চলের নেতাদের শূন্যতার কারণেই রাজশাহীকে উন্নয়নের দিকে তেমন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। ফলে মোহাম্মদ নাসিমের মতো বা তার নিচের নীতি-নির্ধরাণী আরো একাধিক পদে বসানো হোক এ অঞ্চলের নেতাকর্মীদের। তইে রাজশাহীকে এগিয়ে নিতে জোরালো ভ’মিকা রাখতে পারবেন ওই নেতারা। দলের ক্ষমতাধর পদ না থাকায় কেন্দ্রে গিয়ে কথা বলার মতোও তেমন নেতা পাওয়া যায় না এ অঞ্চল থেকে। ফলে সবকিছুতেই কিছুটা হলেও বঞ্চিত হতে হয় রাজশাহী অঞ্চলকে।

 
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে এবার যাঁরা দলের অন্যতম পদ-প্রত্যাশীর তালিকা রয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এএইফচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহীর বাঘা-চারঘাট আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা, পবা-মোহনপুর আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন,  নাটোরের সিংড়া আসনের এমপি ও তথ্য বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, নাটোর পৌর মেয়র রুমা চৌধূরী জলি, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পাবনা আওয়ামী লীগের নেতা শামসুল হক টুকু, সিরাজগঞ্জ থেকে এইচটি ইমাম, জয়পুরহাট থেকে আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, নওগাঁ থেকে ভূমিমন্ত্রী এমাজ উদ্দিন ও আত্রাই-রানী নগর আসনের এমপি এশ্রাফিল আলমসহ আরো কয়েকজন নেতা আগ্রহ প্রকাশ করে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। দলের নীতি-নির্ধারণী পদ ছাড়াও কেউ কেউ গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পেতেও আগ্রহ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌড়-ঝাঁপ করছেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে তাদের মধ্যে ও জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান পুত্র ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে ঘিরেই এখানকার তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উন্মুখ হয়ে আছেন। বলিষ্ট নেতৃত্ব দেওয়ার মতো দক্ষতা ও সৃজনশীলতা লিটনের মধ্যেই আছে বলেও দাবি করেন রাজশাহীর নেতাকর্মীরা। সেইদিক বিবেচনা করে অবেহিলত রাজশাহীর উন্নয়নে এবং মৌলবাদিদের আস্তানা নির্মূলে লিটনকে দলের সভাপতি মন্ডলির সদস্য পদে আশিন করারও দাবি জানান এখানকার নেতারা।

 
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জননেত্রীর শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর অবিচল আস্থা রাখি। তারপরেও বিভাগীয় শহর হিসেবে রাজনীতি ও উন্নয়নসহ নানা দিক থেকে এগিয়ে নিতে রাজশাহী থেকে দলের সংগঠনিক, যুগ্নসম্পাদক বা ওই মানের একাধিক পদগুলো এখান ত্যাগী ও বলিষ্টপ নেতারা পান-এটা দাবি করতে পারি।’

 
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘বিগত সময়গুলোতে যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল আস্থা রেখেছেন, তাদেরই মূল্যায়ন করা হবে বলে আশা করি।’

 

তিনি বলেন, ‘এবার রাজশাহী অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য জননেতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন-এমন আশায় আমরা এবার বুক বেধে আছি। তিনি এরই মধ্যে তার নেতৃত্বে গুনাবলি দিয়ে রাজশাহী অঞ্চলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন। আশা করি সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এবার গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন।’
জানতে চাইলে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা বলেন, ‘নাটোর থেকে এবার দলের গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে কাউকে বসানো হোক। তাহলে অবহেলিত নাটোরসহ উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন ও বিএনপি-জামায়াতের বিষদাঁত ভেঙে দিতে কাজ করতে পারবেন।’

 

স/আর