‘আমার একান্ত কিছু ছবি এডিট করে প্রকাশ করা হচ্ছে’

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পরই আলোচনায় আসেন শিপ্রা দেবনাথ। পুলিশের মামলায় জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শিপ্রা দেবনাথের ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে শিপ্রা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তাকে হেনস্তায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

এসব বিব্রতকর বিষয়ের প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘গত কিছু দিন ধরে আমার একান্ত কিছু ছবি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এডিট করে, ট্রেইলার করে অথবা আমার বিভিন্ন প্রজেক্ট থেকে নিয়ে বিভিন্নভাবে ভিন্ন ভিন্ন অর্থে প্রকাশ করা হচ্ছে।’

এজন্য সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে দায়ী করেননি শিপ্রা। তবে পুলিশ বাহিনীর কেউ এই কাজ করছেন বলে সন্দেহ তার।

শিপ্রা বলেন, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ আমাদের রিসোর্টে এসে দুটি মনিটর, ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, ক্যামেরা, লেন্স, তিনটি হার্ডড্রাইভ এবং আমাদের ফোন ডিভাইস সব নিয়ে যায়, জব্দ তালিকায় যার কোনোটিরই উল্লেখ নেই। আমি জানি না, কীভাবে কার কাছে সেগুলো ফেরত চাইব।

তিনি বলেন, আমাদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে, ডিভাইস থেকে সেই ছবি চুরি করে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের দায়িত্বশীল অফিসাররাই ফেসবুকে সেই সব শেয়ার করেছেন।

শিপ্রা বলেন, একজন মানুষ হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমার টুঁটি চেপে ধরে আমাকে আত্মহননের দিকে ঠেলে দিলে লাখো তরুণ-তরুণী এর প্রতিশোধ নেওয়া থেকে নিশ্চয়ই বিরত থাকবে না।

সিনহার ‘ডকুমেন্টারি’ নির্মাণে সহযোগী শিপ্রা বর্তমানে র‌্যাবের নিরাপত্তায় থাকলেও তার ব্যক্তিগত নানা ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে ‘চরিত্রহননের’ চেষ্টা চলছে, যা নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

শিপ্রা বলেন, আমি একজন ছাত্রী, পড়াশুনার পাশাপশি কাজ করি। একটি স্বাধীন দেশে একজন নারীর কারও অধিকার ক্ষুণ্ন না করে নিজের পছন্দমতো বেঁচে থাকার অধিকার কি নেই?

স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির এ ছাত্রী বলেন, আমার ব্যক্তিজীবন যারা অসহনীয় করে তুলেছেন বিভিন্ন ছবি দিয়ে, আমি প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কথা দিলাম।

কবে কোথায় মামলা করা হবে- জানতে চাইলে শিপ্রা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দেখা যাক, মামলা যখন করব তখন সবাই জানতে পারবেন, আদালতে বা কক্সবাজার থানায় মামলা করা হবে।

মামলায় আসামি কাদের করা হবে সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছবিগুলো বিকৃত করে যারা আপলোড করেছেন, তারাই আসামি হবেন।

গত ৩১ জুলাই টেকনাফে এপিবিএনের একটি তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে সিনহা রাশেদ খান নিহত হন। এরপর পুলিশের দায়ের করা মামলায় গেফতার হন শিপ্রা ও সিফাত। পরে সিনহার বোনের দায়ের করা মামলায় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশের সাত সদস্য গ্রেফতারের পর জামিনে ছাড়া পান তারা।