আমরণ অনশনে টুঙ্গিপাড়ার ১৩৫ শিক্ষার্থী

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ১৩৫ শিক্ষার্থী। রোববার সকাল ১০টা থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) একাডেমিক ভবনের সামনে তারা এ অনশন কর্মসূচি পালন করছে।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্বহীনতায় তাকে অপসারণ করে নতুন অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান, ল্যাবরেটরি ও ফার্মেসি অনুষদের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও শিক্ষক নিয়োগ, শ্রেণিকক্ষ ও হোস্টেলে আসবাবপত্র প্রদান, নিয়মিত ক্লাস নেওয়া, সব শূন্য পদে জনবল নিয়োগ, নিজ প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা কেন্দ্র, প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক কোড সৃজন এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) টুঙ্গিপাড়া গিয়ে দেখা ওই প্রতিষ্ঠানের সামনের ব্যানার টাঙিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বসে আছে একাডেমিক ভবনের সামনে।

অনশনরত শিক্ষার্থী ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ বর্মণ বলেন, ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৬৮ শিক্ষার্থী ভর্তির মধ্য দিয়ে তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজি কোর্সের যাত্রা শুরু করে টুঙ্গিপাড়ার আইএইচটি। পরে ওই বছরের ১৭ মার্চ করোনা পরিস্থিতির কারণে ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে আরও ৭৫ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ১৩৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু ইনস্টিটিউটে ল্যাবরেটরি ও ফার্মেসি অনুষদে শিক্ষক না থাকায় তাঁরা নিয়মিত ক্লাস করতে পারছেন না। এ ছাড়া ল্যাবরেটরিতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র ও শিক্ষক নেই। ইনস্টিটিউটে অধ্যক্ষ থাকলেও তিনি কখনো প্রতিষ্ঠানে আসেন না। আমরা এই সমস্যার কারণে ২৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানাই। কিন্তু তিনি আমাদের এই সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি।

তিনি বলেন, আজ আমরা অবিভাববহীন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আজ আমরা অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব। এ ব্যাপারে আমরা প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ইনস্টিটিউটের প্রথম ব্যাচের ল্যাবরেটরি অনুষদের শিক্ষার্থী ইন্দ্রাণী মণ্ডল বলেন, বাবা-মা অনেক আশা করে এখানে পাঠিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমি ওখানে কোনো সমস্যা নেই। আমরা লেখাপড়া শিখতে এসেছি। শিক্ষকের অভাবে আমরা ক্লাস করতে পারিনি। আসবাব ও ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি না থাকায় ব্যবহারিক ক্লাস করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আমাদের লেখাপড়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা ও হতাশার মধ্যে সময় পার করছি। কিন্তু এখানে এসে জীবন শেষ করে ফেলছি। আমাদের সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে জানার জন্য ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ ডা. এনামুল হকের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, আইএইচটিতে শিক্ষক সংকটসহ অনেক সমস্যা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক। বিকালে জেলা প্রশাসক ওই প্রতিষ্ঠানের আসবেন। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করবো।

সূত্র: যুগান্তর