আবারো এগিয়ে আসলো ইজিয়ার

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিল ঢাকা মহানগর অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতি এবং অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ার সার্ভিস ইজিয়ার। মঙ্গলবার ফায়ারম্যান সোহেল রানার মরদেহ বহনের জন্যও এগিয়ে আসে ঢাকা মহানগর অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতি এবং ইজিয়ার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে।

মঙ্গলবার সকালে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমইএচ) মর্চুয়ারিতে থেকে সদর দপ্তরে আনা হয় সোহেলের মরদেহ। তারপর শ্রদ্ধা শেষে অ্যাম্বুলেন্সটিতে মরদেহ গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনায় নেয়া হয়।

জানাজায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন, সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান, পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহীম খান, এনটিএমসির ডিজি জিয়াউল আহসান উপস্থিত ছিলেন।

ইজিয়ারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ মেহেদী হাসান ইমন বলেন, অগ্নি সেনাদের হিরো ফায়ারম্যান শহীদ সোহেল রানার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ঢাকা মহানগর অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতি এবং অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ার সার্ভিস ইজিয়ার বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিল। এবারো এগিয়ে এসেছে ফায়ারম্যান সোহেল রানার মরদেহ বহনের জন্যও অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে। ইজিয়ার যেহেতু অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে কাজ করছে সেহেতু আমরা অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সব সময় সহায়তা করার চেষ্টা করছি।

উল্লেখ্য, ২৮ মার্চ বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন রানা। ২৩ তলা ওই ভবনে আটকা পড়াদের ল্যাডারের মাধ্যমে নামাচ্ছিলেন তিনি। সোহেল যখন ৪-৫ জন উদ্ধার করে নিচে নামাচ্ছিলেন তখন উদ্ধারকারী ল্যাডারটি ওভারলোড দেখাচ্ছিল।

ওভারলোড হলে সাধারণত সিড়ি নিচে নামে না স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক হয়ে যায়। তাই ল্যাডারের ওজন কমাতে এক পর্যায়ে সোহেল ল্যাডার থেকে বেয়ে নিচে নামছিল। ল্যাডারের ওজন কমায় সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যায়। ল্যাডারের ভেতরে সোহেলের একটি পা ঢুকে যায়।

এ ছাড়া তার শরীরের সেফটি বেল্টটি ল্যাডারে আটকে পেটে প্রচন্ড চাপ লাগে। এরপর থেকেই সংজ্ঞাহীন ছিলেন সোহেল। দ্রুত তাকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রতিদিন চার ব্যাগ রক্ত দেয়া হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতি হচ্ছিল না।

পেটের ক্ষতের কারণে সমস্যা হচ্ছিল রানার। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত শুক্রবার তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। তার দেখাশোনা করার জন্য ফতুল্লা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রায়হানুল আশরাফকেও তার সঙ্গে পাঠানো হয়।

রোববার দিবাগত রাতে সিঙ্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সোমবার রাতে বিমানযোগে তার মরদেহ ঢাকায় এনে সিএমএইচের মর্চুয়ারিতে রাখা হয়। ২৮ মার্চ বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের পাশের ১৭ নম্বর সড়কে ফারুক রূপায়ন (এফআর) টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনে ঘটনাস্থলে ২৫ জন ও হাসপাতালে একজন নিহত হন। এ ঘটনায় আরও ৭৩ জন আহত হয়েছে। সোহেলের নিহতের মাধ্যমে এফআর টাওয়ার অগ্নিকান্ডে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়াল।