আন্দোলনকারীদের হয়রানি না করার নিশ্চয়তা চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে হেনস্তা ও হয়রানি না করার নিশ্চয়তা চেয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে তার বাসায় (উপ-উপাচার্য ভবন) সাক্ষাৎকালে পরিষদের নেতারা এ আহ্বান জানান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়া হয়।

এ সময় শিক্ষক প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, সহকারী প্রক্টর আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন। আর আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, রাশেদ খান, নুরুল হক নুরসহ ২০-২৫ জন।

আন্দোলনকারীরা জানান, সাক্ষাৎকালে তারা উপাচার্যের কাছে কিছু দাবি উত্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে- হলগুলোতে যেন কোনো শিক্ষার্থীকে হেনস্তা ও হয়রানি করা না হয়, সবাই যেন নির্ভয়ে হলে থাকতে পারে সে বিষয় উপাচার্যের হস্তক্ষেপ; ক্যাম্পাস বহিরাগতমুক্ত করা; অতিরিক্ত যানবাহন প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে গেট করার দাবি করে। উপাচার্য তাদের এসব দাবি পূরণে আশ্বস্ত করেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, এছাড়াও সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদল উপাচার্যের বাসায় হামলার ঘটনায় সঠিক তদন্তের দাবি করেন।

এ সময় উপাচার্য বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারী শনাক্ত হবে। আন্দোলনকারীরা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করেছে। এছাড়াও উপাচার্য ভবনে হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানানো হয়।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, আন্দোলনকারীদের ২০-২২ জনের একটি প্রতিনিধিদল উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছেন। তারা উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

এছাড়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের যাতে হয়রানি করা না হয়, সেই নিশ্চয়তা চেয়েছেন। এ সময় উপাচার্য তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, কোনো বিষয়ে দাবি জানানো বা আন্দোলন করা গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তবে আন্দোলনের নামে উপাচার্যের বাসভনে যেসব দুষ্কৃতকারী হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রক্টর বলেন, আমরা তাদের বলে দিয়েছি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না। তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছি। এরপরেও যদি কোনো শিক্ষার্থী অভিযোগ করে তাকে হয়রানি করা হয়েছে এবং আমাদের কাছে অভিযোগ আসে- তাহলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

সাক্ষাৎকারের বিষয়ে সহকারী প্রক্টর আব্দুর রহিম  বলেন, উপাচার্য তাদের বলেছেন গণতান্ত্রিক মনোভাব প্রকাশ করার অধিকার সবারই আছে। তাই আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তবে ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমন কথার পর আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন- সন্ত্রাসী কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে তাদেরও আপত্তি নেই।

সাক্ষাতের বিষয়ে আন্দোলনকারীদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, আমরা আমাদের আন্দোলন স্থগিতের বিষয়টি উপাচার্যকে অবহিত করেছি। সবাই যেন কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া নির্ভয়ে হলে থাকতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি। তিনি আমাদের এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। যুগান্তর