পদ্মানদী বাঁচানোর দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতবিদেক
‘পদ্মা নদী বাঁচলে, রাজশাহী বাচবে’ এ স্লোগানে রাজশাহীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। বুধবার বেলা ১১ টায় রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে নদীতে পানির প্রবাহ বাধামুক্ত, রেগুলেটরী কমিশনের মাধ্যমে নদী তদারকি ও প্রতি জেলায় প্রতি জেলায় কমিশশনের ইউনিটের দাবি জানানো হয়। বাপা রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি মো. জামাত খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা দখলমুক্ত ও নদী ড্রেজিং এবং প্রস্তাবিত উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে পরিবেশ দুষনমুক্ত করারও দাবি জানানো হয়।

মানবন্ধন চলাকালীন অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বদিউজ্জামান রবু, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল মান্নান, ওয়ার্কার্স পাটির নগর সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, জাপা রাজশাহী মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক সালাউদ্দিন মিন্টু, জাসদ নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, জাসদ নেতা শাহরিয়ার রহমান, আইনজীবি সমিতির নেতা এ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, প্রকৌশলী খাজা তারেক, অধ্যাপক জিএম হারুন, পরিবেশবীদ মিজানুর রহমান,সাংস্কৃতিক কর্মি মুনিরা রহমান মিঠি, নারী শিল্প উদ্যোক্তা চেয়ারম্যান সেলিনা বেগম, শাহিনা বেগম, রেহেনা আলী খান, সাগরিকা, সাংবাদিক আবু সালেহ ফাত্তাহ, শিশু সংগঠক রজব আলী, রাজশাহী জেলা লোকমোর্চার সভাপতি আলাউদ্দিন আল আজাদ, লেখক শাহ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু, ইমাম ফেরদৌস ইয়াহিয়া, সমাজ সেবক নিজাম উদ্দির, রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ আহমেদ খান, কেএম জুবায়েদ হোসেন জিতু, মোহাম্মদ জাহিদ হাসান ছাত্রনেতা মুঞ্জুর মোর্শেদ চুন্না ও তারেক প্রমুখ।

বক্তার বলেন, আজ যখন বিশ^ব্যাপী নদীকৃত্য দিবস পালিত হচ্ছে তখন রাজশাহী অঞ্চলের সব নদ-নদী খালবিলি পানিশূন্য অবস্থায় দাড়িয়েছে। অনেক আগেই রাজশাহীর ওপর দিয়ে বয়ে চলা পদ্মা নদী তার অস্তিস্ব হারিয়ে শুধু বালুচরে পরিনত হয়েছে। শুষ্কমৌসুমের অনেক আগেই পানিশূন্য হয়ে যায় পদ্মা নদী। এ অবস্থায় পরিবেশের দারুন প্রভাব ফেলেছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সরকার দেশের ১৯ টি নদী খননের নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নিলেও সে তালিকা থেকে রহস্যজনক কারনে বাদ রাখা হয়েছে রাজশাহীর পদ্মা নদীকে। বক্তারা মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে নদী রক্ষা দখল মুক্ত করারও জোর দাবি জানান।

একই মনাববন্ধন থেকে বক্তারা প্রস্তাবিত রাজশাহীর মানুষের প্রাণের দাবি উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবি জানান। বক্তারা বলেন, এ প্রকল্পটি রাজশাহীর মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি হলেও রহস্যজনক কারনে প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখছে না। ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির ক্রমাগত চাপ বৃদ্ধির কারনে এ অঞ্চলের নদ-নদীতে প্রভাব পড়ছে। বিপন্ন হয়ে পড়েছে পরিবেশ। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এ অঞ্চলের কৃষিতে দারুণভাবে প্রভাব পড়বে বলেও কর্মসূচি থেকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

বক্তারা বলেন, বলেন রাজশাহী অঞ্চলের অনেক খাল-বিল, জলাশয় এখন দখলদারদের কবলে পড়েছে। ভরাটের কারণে মরে গেছে এসবের উৎসমুখ। এসব এলাকায় প্রভাবশালীরা স্থাপনাও নির্মাণ করেছে। অবিলম্বে এসব খালবিল ও নদীর উৎসমুখ দখলমুক্ত করে পানি ধারনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানানো হয়।

এছাড়া পদ্মা নদী ছাড়াও বিভিন্ন নদ-নদী থেকে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলনেও প্রভাব পড়ছে নদীর প্রবাহে। ফলে সব নদ-নদী এখন সময়ের অনেক আগেই পানিশূণ্য হয়ে পড়ছে। দেখা দিচ্ছে মরুময়তা। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য অবিলম্বে সরকারের প্রতি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পা গ্রহণেরও জোর দাবি জানানো হয় মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে।

স/আ