আদালতের আদেশ অমান্য করে আত্রাইয়ে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক :
আদালতের আদেশ অমান্য করে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার দাঁড়িয়াগাথীতে নালিশী জায়গার উপর স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জায়গাটি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে এর মালিক আদালতে মামলা দায়ের করেন।

এই মামলায় আদালত বিবাদীকে ওই জায়গা দখলের উপর নিষেধাজ্ঞা করেন। কিন্তু বিবাদী পক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওই জায়গার উপর স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রেখেছেন। এমনকি এতে বাদি বাধা দিতে গেলে তাদের মারপিট করে আহতও করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দাঁড়িয়াগাথী গ্রামের এছাহক আলী মন্ডল এওয়াজকৃত সম্পত্তি নিয়ে নওগাঁ নিম্ন আদালতে মামলা করেন। পরে আদালত শুনানী শেষে ওই জায়গাটির প্রকৃত মালিক এছাহক আলী মন্ডল মর্মে রায় দেন। এরপর মামলার বিবাদী আক্কাস আলী মন্ডল এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। বর্তমান উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানী চলমান। এরই মধ্যে আদালত ওই জায়গাটি বিবাদীকে ভোগ দখল না করতে ১৪৪ ধারা জারি করেন।

এদিকে আদালতের এ রায়কে উপেক্ষা করে বিবাদী উপজেলার দাঁড়িয়াগাথী গ্রামের মৃত আকবর আলী মন্ডলের ছেলে আক্কাস আলী মন্ডল নালিশী সম্পত্তির উপর স্থাপনা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন। গত ১ সেপ্টেম্বর বাদী বাধা দিতে গেলে বিবাদী আক্কাস আলী, তার ভাই রশিদ আলী এবং আক্কাস আলীর দুই ছেলে ফেরদৌস ও সিহাব তাদের উপর চড়াও হয়ে মারপিট করে বাদির ছেলে ফয়সাল আহমেদকে আহত করে।

বিবাদীর মারধরে আহত ফয়সালকে রক্ষা করতে তার পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হয়। ব্যাপারে বাদি এছাহাক আলী মন্ডল আত্রাই থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা অজ্ঞাত কারণে অভিযোগ গ্রহণ না করায় পরে আদালতে অভিযোগটি দায়ের করা হয়।

সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আত্রাই উপজেলার দাঁড়িয়াগাথী গ্রামে যে জায়গাটি নিয়ে মামলা চলছে সেই জায়গায় বিবাদী আক্কাস আলী দোকানঘর নির্মাণ করছেন। আদালতের ১৪৪ ধারা নির্দেশনা থাকার পরও আক্কাস আলী ওই জায়গায় কি করে দোকানঘর নির্মাণ করতে পারে সেটি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ম্যানেজ করে তিনি জোর করে সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। যা সম্পুর্ন অবৈধ।

যদিও অভিযোগের প্রেক্ষিতে আত্রাই থানা পুলিশ কাজ বন্ধ করে দিয়ে আদালতের রায় বাস্তবায়ন করেছিলেন। কিন্তু থানা পুলিশ ঘটনার স্থল ত্যাগ করার পরই আক্কাস আলী পুনরায় কাজ শুরু করেন। এমন কি তিনি কাজ চলমান রেখেছেন। একই সাথে বাদিকে প্রতিনিয়ত নানাভাবে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এতে বাদী এছাহক আলী মন্ডল তার পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীতায় ভূগছেন বলে অভিযোগ করেন।

এব্যাপারে আক্কাস আলী বলেন, এই জায়গাটি আমি কিনেছি। জায়গাটি কেনার পর সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করছি। পরে ওই জায়গা নিয়ে মামলা হয়। মামলায় এছাহাক আলীর পক্ষে রায় দেন আদালত। কিন্তু আমি পুনরায় উচ্চ আদালতে আপিল করেছি। কাজ চলমান রাখার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

এব্যাপারে আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক সরকার জানান, বাদি এছাহক আলী মন্ডলের অভিযোগ ও আদালতের আদেশ নামা পেয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করে কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু থানা পুলিশ চলে আসার পর তিনি আবারো কাজ করছেন। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।