আড়ম্বর ছাড়াই অন্তিমযাত্রায় সাহিত্যিক সমরেশ, ‘বাবা পছন্দ করতেন না’, জানালেন কন্যা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

অনাড়ম্বর ভাবেই সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল কলকাতার নিমতলা মহাশ্মশানে। তার আগে পর্যন্ত দেহ শায়িত ছিল সাহিত্যিকের শ্যামপুকুর স্ট্রিটের বাড়িতে। জানালেন প্রয়াত সাহিত্যিকের কন্যা দোয়েল মজুমদার। দোয়েল জানিয়েছেন, প্রয়াত সাহিত্যিকের আচার-অনুষ্ঠানে বিশ্বাস ছিল না। তাই আড়ম্বর করে কোনও আচার-অনুষ্ঠান হয়নি। দুপুর ১টা নাগাদ নিমতলা মহাশ্মশানে সাধারণ ভাবেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

প্রসঙ্গত, সোমবার বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সন্ধ্যা পৌনে ৬টা নাগাদ প্রয়াত হন সমরেশ মজুমদার। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ২৫ এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে ভর্তি করানো হয়েছিল সাহিত্যিককে। এর পর তাঁর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে। আগে থেকেই সমরেশের সিওপিডি-র সমস্যা ছিল। ‘ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা’ও (স্লিপ অ্যাপনিয়া) বাড়তে থাকে। এর পরই সোমবার সন্ধ্যাবেলা তিনি প্রয়াত হন। সাহিত্যিকের স্ত্রী ধীরা মজুমদার ২০২১ সালে দ্বিতীয় বার করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
১৯৪৪ সালে উত্তরবঙ্গের গয়েরকাটায় জন্মগ্রহণ করেন সমরেশ। উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ-সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় উপন্যাসের লেখক সমরেশ। প্রাথমিক শিক্ষা জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে। ষাটের দশকের গোড়ায় তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। ভর্তি হয়েছিলেন স্কটিশ চার্চ কলেজের বাংলা বিভাগের (সাম্মানিক) স্নাতক স্তরে। এর পর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৭৫ সালে ‘দেশ’ পত্রিকায় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’ প্রকাশিত হয়েছিল। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে গর্ভধারিণী, সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অগ্নিরথ ইত্যাদি। তাঁর লেখা কিশোর গোয়েন্দা চরিত্র ‘অর্জুন’ বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। রুপোলি পর্দাতেও দেখা গিয়েছে অর্জুনকে। সমরেশের উপন্যাস ‘কালবেলা’ এবং ‘বুনো হাঁস’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে জনপ্রিয় বাংলা ছবি। বাংলা টেলিভিশন সিরিয়ালের আদিপর্বে সমরেশের কাহিনি নিয়ে নির্মিত ‘তেরো পার্বণ’ বিপুল জনপ্রিতা পেয়েছিল।

কালবেলা উপন্যাসের জন্য ১৯৮৪ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন সমরেশ। তারও আগে ১৯৮২ সালে পেয়েছিলেন আনন্দ পুরস্কার। ‘কলিকাতায় নবকুমার’-এর জন্য ২০০৯ সালে বঙ্কিম পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছিল সাহিত্যিককে। সূত্র: আনন্দবাজার