আট বিভাগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, বজ্রপাতে আটজনের মৃত্যু

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দেশের আট বিভাগের দু-এক জায়গায় রবিবার (৩০ এপ্রিল) অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রাঘাতে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

দেশের আট বিভাগে রবিবার (৩০ এপ্রিল) অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ অঞ্চলগুলো হলো রাজশাহী, রংপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও সিলেট। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত (পুনঃ) দেখাতে বলা হয়।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা, মাদারীপুর, রাজশাহী, পাবনা, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ কমে আসতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

এদিকে গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের আকাশ কালো হয়ে আসে। রাজধানীর বাসাবো ও খিলগাঁও এলাকায় মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী বয়ে যায়। এ সময় মিরপুর, বসুন্ধরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, দু-একটি স্থানে ঝড়-বৃষ্টি থাকলেও বেশির ভাগ স্থানে খুবই সামান্য পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঢাকায় সব মিলিয়ে মাত্র ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে কুমারখালীতে, ২৫ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বান্দরবান ও ভোলায়, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, ‘আজ থেকে ৪ মে পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বাড়ার প্রবণতা থাকবে। তবে খুব বেশি বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা নেই। এপ্রিল, মে ও জুন মাসে ধারাবাহিকভাবে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে থাকে। তবে এ বছর স্বাভাবিকের তুলনায় খুবই কম বৃষ্টি হচ্ছে। আবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা আবারও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

এদিকে গতকাল বিকেল ৩টা থেকে দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত দেশের ১৭ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সতর্কবার্তা দেয় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বজ্রপাতে আটজনের মৃত্যু : দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রাঘাতে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বিকেলে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় ধান কেটে বাড়ি ফেরার পথে আব্দুল মালেক ও সোলেমান শেখ নামের দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। কাজিপুর উপজেলায় মাঠ থেকে গরু নিয়ে ফেরার পথে বজ্রপাতে গৃহবধূ সিমা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার নলী জয়নগরে গতকাল দুপুরে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রাঘাতে হোসনে আরা বেগম নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।

শেরপুরের শ্রীবরদীতে বজ্রাঘাতে সাজু মিয়া নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

এ ছাড়া বজ্রপাতে পাবনার আটঘরিয়ায় এনামুল হক (১৮) নামের এক শিক্ষার্থী, আমিনপুরে কৃষক মনিরুজ্জামান (৪০) এবং সুজানগরে কৃষক রফিকুল ইসলামের (৪২) মৃত্যু হয়েছে।

রাজবাড়ীতে পড়ল ৫ কেজি ওজনের শিলা : রাজবাড়ীতে গতকাল বিকেলে ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এ সময় জেলার পাংশা উপজেলার চান্দুর মোড় এলাকায় পাঁচ কেজি ওজনের একটি শিলা পড়ে। সে শিলা দেখতে অনেকে ভিড় করে। জেলা সদরের বিনোদপুর এলাকায় বজ্রপাতে একটি তালগাছে আগুন লেগে যায়। বৃষ্টির কারণে গরমের তীব্রতা কমায় স্বস্তি ফিরেছে জনমনে।