আজ আমরা ‘মাইনক্যা চিপায়’ পড়ে গেছি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার শুনানি শেষে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসান এ আদেশ দেন।

এদিকে মাদক মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে এদিন আসামিদের আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

অপরদিকে পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় এদিন ওই দুই আসামিকে গ্রেফতার দেখানোসহ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। সাভার থানার পরিদর্শক মো. কামাল হোসেন রিমান্ডের এ আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, পরীমনি বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির একজন অভিনেত্রী। আসামিরা তাকে মারধর করে শ্লীলতাহানি করে এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরীমনিকে মদ পানের চেষ্টা করিয়ে পরবর্তীতে ধর্ষণসহ আরও বড় কোনো ক্ষতি করার পরিকল্পনা ছিল কি না- তা জানার জন্য এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ একান্ত জরুরি।

আসামিপক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, অবশ্যই তিনি (পরীমনি) সেলিব্রেটি। তা না হলে কি আর রাত ১২টায় ক্লাবে যাই। মামলায় ধর্ষণের নয় চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। উনি (পরীমনি) সেলিব্রেটি। আমরাও (নাসির) কম সেলিব্রেটি না। বাংলায় বলতে গেলে আজ আমরা ‘মাইনক্যা চিপায়’ পড়ে গেছি। শুধুমাত্র ক্যামেরা ট্রায়ালে বিষয়টি এ পর্যন্ত গড়িয়েছে। এ মামলায় আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় বুধবার বিকাল ৪টা ২৯ মিনিটের দিকে আসামিদের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিচারক আসলে শুনানি শুরু হয়।

শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ হেমায়েত হোসেন বলেন, আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে অজ্ঞাতনামা জড়িতদের সন্ধান পাওয়া যাবে। এমন কাজের জন্য আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি না হলে সমাজে এ ধরনের কাজ আরও বেড়ে যাবে। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল বলেন, পরীমনি একজন সেলিব্রেটি। তিনি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছেন। সারা দেশের মানুষ এ বিচারের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, ১৩ জুন সন্ধ্যায় ফেসবুক পোস্টে পরীমনি অভিযোগ করেন, তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টে এ অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার দাবি করেন পরীমনি। ১৩ জুন রাতে বনানীর নিজ বাসায় সাংবাদিকদের তিনি জানান, গত ৮ জুন রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী জিমির সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়ার একটি ক্লাবে। সেখানে মদ্যপানরত কয়েকজনের সঙ্গে পরীমনির পরিচয় করিয়ে দেন অমি। ওই ব্যক্তিদেরই একজন হঠাৎ জোর করে তার মুখে পানীয়র গ্লাস চেপে ধরেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন।

পরদিন ১৪ জুন সাভার থানায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন পরীমনি। ওইদিন বিকাল তিনটার দিকে রাজধানীর উত্তরা থেকে নাসির ও অমি এবং তিনজন নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় আসামিদের কাছ থেকে বিদেশি মদ ও ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। মাদক মামলায় গত ১৫ জুন নাসির ও অমির সাতদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।

সূত্র: যুগান্তর