আক্ষেপ করলেন সৌম্য

সিল্কসিটিনিউজ ক্রীড়া ডেস্ক:

প্রথম দিনে বাংলাদেশ অল আউট হলেও শুক্রবার সবচেয়ে বেশি রান করেছেন সৌম্য সরকার। বিদায় নেওয়ার আগে করেন ক্যারিয়ার সেরা ৮৬। সে কারণেই দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে তাকে আনা হয়। সাতক্ষীরার ছেলে সৌম্য সরকার আক্ষেপই করেন নিজের ইনিংস নিয়ে, ‘আরও যদি রান করতে পারতাম, আরেকটু সময় যদি টিকে থাকতে পারতাম। তাহলে দলের রান, নিজের রান দুটিই বাড়তো।’

 

এমনিতেই চোট জর্জর বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে আবার তেমনই শঙ্কার মেঘ জমা হচ্ছিল রুবেলকে নিয়ে। শেষ দিকে কনুইয়ে আঘাত পান পেসার রুবেল। সেই রুবেলের আঘাত সম্পর্কে সৌম্য বলেন, ‘ওই সময়ে ড্রেসিং রুমে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। কারণ দলে তিনজন মাত্র পেস বোলার। এর একজন যদি চোটের শিকার হন তাহলেতো সর্বনাশ। তার প্রকৃত অবস্থা এখনও জানিনা। কিন্তু তিনি যেহেতু আবার উঠে দাঁড়িয়ে ব্যাট করেছেন, আশা করি তার সমস্যা বড় কিছু না।’

 

দলে নিজের সুযোগ পাওয়া নিয়ে সৌম্য বলেন, ‘টেস্টে যখন সুযোগ পেলাম, মনে করলাম এটি নিজেকে মেলে ধরার একটি সুযোগ। আমি আমার পক্ষে যা করা সম্ভব এর শতভাগ দলকে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যা করেছি তাতে আমি সন্তুষ্ট না। আরেকটু সতর্ক হলে হয়তো আরও ভালো করতে পারতাম। তাতে দলের জন্যে ভালো হতো।’

 

আগের দিন ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের ক্যাপ্টেন তামিম ইকবাল বলেছিলেন সৌম্যর কাছে তিনি তার স্বাভাবিক খেলাটা আশা করেন। সে বিষয়টি উঠলে সৌম্য বলেন, ‘আমি আমার স্বাভাবিক খেলাটা খেলারই চেষ্টা করেছি। আরও রান যদি করতে পারতাম ভালো লাগতো।’

 

উইকেট সম্পর্কে সৌম্য বলেন, ‘সকালে উইকেট পুরোটা সবুজ ছিল। তখন বেশ কঠিন ছিল নতুন বলে খেলা। কিন্তু আস্তে আস্তে তা ব্যাটসম্যানকে সহায়তা দিতে শুরু করে। তাই আমার মনে হয়েছে উইকেটে যদি কেউ আঁকড়ে টিকে থাকে একটু কষ্ট করলে তাহলে এখানে রান করা সম্ভব।’

 

শনিবার দলের বোলারদের কী করতে হবে জিজ্ঞেস করলে সৌম্য বলেন, ‘এমনভাবে বল করতে হবে যাতে দশটা উইকেট নেওয়া যায়। উইকেটে ঠিকমতো বল ফেলতে হবে। উইকেটের এমন একটি জায়গা আছে যেখানে বল করলে বল খুব টার্ন করে। সেখানে বল ফেলতে হবে।’

 

সৌম্য এর আগে কখনো টেস্টে ওপেন করেননি। ইমরুলের চোটের কারণে তিনি সুযোগটি পান। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের অভিজ্ঞতায় কী মনে হলো? এখন থেকে তিনি নিয়মিত ওপেন করতে পারবেন? এ প্রশ্নে সৌম্য বলেন, ‘ওপেনিংয়ে বরাবরই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কিন্তু যেহেতু তামিম ভাই, ইমরুল ভাই অনেক দিন ধরে ওপেন করছেন, তারা ভালো করছেন। তাই এখানে অন্যকিছু ভাবা হয়নি।’

 

সৌম্য আরও যোগ করেন, ‘ইচ্ছা ছিল যদি কোনও দিন সুযোগ পাই, তাহলে সুযোগটা কাজে লাগিয়ে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করবো। আজ চোট বা যে কারণেই হোক দেশের বাইরের মাঠে যখন সুযোগ পেয়েছি নিজেকে প্রমাণের। তখন টিমকে কিছু দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যতটুকু সম্ভব ইমরুল ভাইয়ের জায়গাটা পূরণের চেষ্টা করেছি।’

 

প্রথম ইনিংসে দল মাত্র ২৮৯ রান করেছে। লক্ষ্য কি এ রকমই ছিল না আরও বেশি ছিল? সৌম্য বলেন, ‘লক্ষ্য নির্ধারণ করে কেউ মাঠে নামে না। আমাদের সবার ইচ্ছা ছিল বোর্ডে যত বেশি রান দেওয়া যায়। প্রথম দুটি উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আমি আর সাকিব ভাই জুটিটা বড় করার চেষ্টা করেছি। আমি আউট হওয়ার পর দ্রুত কয়েকটি উইকেট পড়ে যায়। এভাবে আমরা কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যাই। ওই সময় যারা এসেছেন তারা আরও কিছু রান দিলে বোর্ডের অবস্থা আরও ভালো হতো।’

 

দুই অভিষিক্ত সোহান, শান্ত’র ব্যাপারে সৌম্য বলেন, ‘ওরা ভালো করেছে। ওদের সঙ্গে সিনিয়র কেউ থাকলে আরও ভালো হতো।’

 

শেষ দিকে ক্রিজে জমে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বী। সেই রাব্বী প্রসঙ্গে সৌম্য বলেন, ‘কামরুল ইসলাম রাব্বী যেভাবে উইকেটে পড়েছিল অপর প্রান্তে আমি থাকলে হয়তো আরও কিছু রান করতে পারতাম। সংবাদ সম্মেলনে আসার আগে তাকে আমি এ কথাটাই বলে এসেছি।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন