আইফেল টাওয়ার থেকে তাজমহল, কী নেই রাম রহিমের ডেরায়!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সিরসা শহর থেকে অনেকটাই দূরে জায়গাটা। বাইর থেকে দেখে মনে হতে পারে, সহজে এখানে শহুরে সুযোগ-সুবিধা মিলবে না। কিন্তু, উঁচু পাঁচিলের বাধা পেরিয়ে ভিতরে ঢুকলে এক নিমেষে সে ভুল ভেঙে যায়।

সাততারা হোটেল, ‘স্কাইবার’-সহ রিসর্ট, অভিজাত রেস্তোরাঁ, সুইমিং পুল, অত্যাধুনিক হাসপাতাল, আন্তর্জাতিক মানের স্কুল, হোস্টেল, সিনেমা হল, শপিং মল, ফুড কোর্ট, জিম, স্পা, নিজস্ব কৃষিজমি, বাজার — কী নেই সেখানে? আইফেল টাওয়ার, ডিজনিল্যান্ডের আদলে গড়া স্থাপত্য রয়েছে ডেরার ভিতরে। সঙ্গে তাজমহলের ছাপও মেলে এখানকার ঘরবাড়ির ধাঁচে। ৮০০ একরের বিশাল জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে গুরমিত রাম রহিম সিংহের একচ্ছত্র সাম্রাজ্য।

কেমন সে সাম্রাজ্য?

ডেরার দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই কিছুটা পথ এগোতেই চোখে পড়ে এসএমজি হোটেল। যে কোনও সাততারা হোটেলকে হার মানাবে এমন তার অন্দরমহল। রিসেপশন, লবি থেকে শুরু করে হোটেলের প্রতিটা ঘর, বাথরুম— গোটাটাই দামি মার্বেলে মোড়া। প্রতিটি ঘরে ফ্ল্যাট স্ক্রিন টেলিভিশন, গদিমোড়া বিছানা। সঙ্গে অ্যাটাচড বাথরুম। হোটেলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার জন্য রয়েছে ব্যাটারিচালিত গল্ফকার্ট। ভিভিআইপি ভক্তদের থাকার জন্যই এত আয়োজন।

হোটেল ছাড়িয়ে ডেরার অন্য প্রান্তে ঘুরে দেখতে দেখা গেল তাজমহলের আকারে তৈরি বিশাল বড় বিল্ডিং। রয়েছে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারও। সবটাই ‘বাবা’র মনের মতো করে বানানো।

এ বার পা বাড়ানো গেল রেস্তোরাঁর দিকে। জলাশয়ের সঙ্গে এই লেভেলে সেই রেস্তোরাঁয় বসলে মনে হয় যেন ভাসমান কোনও জায়গায় বসে রয়েছেন।

৮০০ একরের একটা ছোটখাটো শহরে ছড়ানো রয়েছে এমনই বিলাসিতার যাবতীয় সুবিধা। স্বঘোষিত ধর্মগুরুর টানে বরাবরই ভক্তদের ভিড় লেগে রয়েছে। ‘বাবা’ রাম রহিমের দাবি, দেশ-বিদেশ মিলিয়ে তাঁর ভক্তসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটিতে।

ডেরার ভিতরে যাতায়াতের জন্য রয়েছে গল্ফকার্ট।

ভক্তদের ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলেফেঁপে উঠতে থাকে ডেরা। জাঁকজমকও বাড়তে থাকে ডেরা প্রধানের। রংচঙে পোশাকআশাক, দামি গয়নাগাটিতে সেজে ‘মেসেঞ্জার অব গড’ নামে খানদুয়েক ফিল্মেও অভিনয় করেছেন তিনি। ডেরার ভিতরে প্রতিটি বিল্ডিংয়ের বাইরে রয়েছে তাঁর ছবি দেওয়া বড় বড় হোর্ডিং। গোলাপি রঙের আধিক্য বেশি এখানকার প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই।

তবে জোড়া ধর্ষণের দায়ে জেলযাত্রার পর প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে গোটা ডেরা। পঞ্জাব ও হরিয়ানা আদালতের নির্দেশে এখানে তল্লাশি শুরু হওয়ার পর আরও যেন থমথমে ডেরা সচ্চা সৌদা।