আইপিএলে কীভাবে বেতন দেওয়া হয় ক্রিকেটারদের?

নিলামে এবং নিলামের বাইরে থেকে মোটা অংকের টাকায় খেলোয়াড় কিনে থাকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। কেউ ৮ কোটি, কেউ ১০, তো কেউ আবার ১৪ কোটিতে বিক্রি হচ্ছেন। অনেকের মনেই প্রশ্ন আছে, নিলামে বিক্রি হওয়ার পর ক্রিকেটাররা কীভাবে সেই টাকা হাতে পান? এই সমস্যা সমাধানে নিয়ম তৈরি করেছে আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিল। সেই নিয়ম মেনেই ক্রিকেটারদের বেতন দেওয়া হয়।

এবার দেখে নিন বেতন পরিশোধের নিয়মগুলো।

** যে দামে কোনো ক্রিকেটারকে কেনা হয় সেটিই তার বেতন। দাম অনুযায়ী অবশ্য আয় কর দিতে হয় তাকে। যে টাকা কোনো ক্রিকেটার পাচ্ছেন সেটি শুধুমাত্র তার। সেই টাকার উপর আর কেউ দাবি করতে পারবেন না।

** যে দামে কেনা হয়, সেটি সেই ক্রিকেটারের এক মৌসুমের বেতন। অর্থাৎ কোনো ক্রিকেটারকে ১০ কোটি টাকায় কেনা হলে তিনি তিন বছরের চুক্তিতে ৩০ কোটি টাকা পাবেন। তবে তিনি যদি ব্যক্তিগত কারণে ম্যাচ খেলতে না পারেন তা হলে টাকা কেটে নেওয়া হবে।

** যদি কোনো ক্রিকেটারকে তিন বছরের চুক্তিতে কেনা হয় এবং চুক্তি শেষ হওয়ার পরে তাকে পরের মৌসুমের জন্য কোনো দল ধরে রাখতে চায়, তাহলে তার বেতন বাড়ানো হয়। সেক্ষেত্রে তিনি আগের বছরের হিসেবেই টাকা পাবেন। তবে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার ও ফ্র্যাঞ্চাইজি আলোচনা করে দাম বাড়াতে পারে। সাধারণত কোনো ক্রিকেটারকে ধরে রাখলে টাকার অঙ্ক বাড়িয়েই তার চুক্তি বাড়ানো হয়।

** যদি কোনো ক্রিকেটার পুরো মৌসুমের জন্য ফিট থাকেন তা হলে তাকে পুরো টাকা দিতে হয়। তাকে কয়টা ম্যাচে খেলানো হয়েছে সেই হিসেবে সেখানে আসে না।

** যদি কোনো ক্রিকেটার মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই চোট পেয়ে পুরো মৌসুমের জন্য ছিটকে যান তাহলে তাকে কোনো টাকা দিতে হবে না ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোতে। কিন্তু কোনো ক্রিকেটার যদি মৌসুমের কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারেন তা হলে তাকে কেনা দামের ১০ শতাংশ ও তারপর ম্যাচ পিছু টাকা দেওয়া হয়।

** মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই কোনো ক্রিকেটার তার ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে তাকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন করতে পারেন। যদি সেই আবেদনে ফ্র্যাঞ্চাইজি রাজি হয় তা হলে তাদের সেই ক্রিকেটারকে তার চুক্তি অনুযায়ী পুরো টাকা দিতে হবে।

** মৌসুমের মাঝে কোনো ক্রিকেটার চোট পেয়ে গেলে তার চিকিৎসার খরচ বইতে হবে সংশ্লিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজিকেই।

** তবে সব ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটারদের একই পদ্ধতিতে বেতন দেয় না। সেটা নির্ভর করে সেই ফ্র্যাঞ্চাইজি কতটা ধনী বা তাদের কত বিনিয়োগকারী রয়েছে। কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি একসঙ্গে পুরো টাকা দিয়ে দেয়। কেউ আবার টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ৫০ শতাংশ ও টুর্নামেন্ট চলাকালীন ৫০ শতাংশ টাকা দেয়। কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরুতে ১৫ শতাংশ, টুর্নামেন্ট চলাকালীন ৬৫ শতাংশ ও শেষে ২০ শতাংশ টাকা দেয়।

২০০৮ সালে যখন আইপিএল শুরু হয় তখন ইউএস ডলারে কোনো ক্রিকেটারের দাম ঠিক করা হতো। এক ডলারের দাম ভারতীয় মুদ্রায় ৪০ টাকা ঠিক করা হয়েছিল। অর্থাৎ নিলামে যে দাম তিনি পেতেন তাকে ৪০ দিয়ে গুণ করে টাকা দেওয়া হত। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে ভারতীয় মুদ্রায় নিলাম শুরু হয়।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ