আইপিএলকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে সিরিয়াল!

লকডাউনের পর থেকে ফের শুরু হয়েছে ধারাবাহিকের নতুন পর্বের সম্প্রচার। রিপোর্ট কার্ডের সমীকরণ বলে দিচ্ছে একে অপরকে জোর টেক্কা দিচ্ছে কৃষ্ণকলি, মোহর, রাণী রাসমনির মতো ধারাবাহিক। এ সপ্তাহেও নিজের জায়গা ধরে রেখেছে শ্যমা। গত দুসপ্তাহেও খুব সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল কৃষ্ণকলি। কৃষ্ণকলি না আম্রপালি, কে থাকবে নিখিলের জীবনে, দর্শকের আগ্রহ আটকে এখানেই। শাশুড়ি-বউমার ড্রামা হোক, নায়ক-নায়িকার প্রেম, ভারতীয় ধারাবাহিকে এক সাংঘাতিক রকমের পরিবর্তনে স্রোত এনেছিলেন টেলিভিশন ক্যুইন একতা কাপুর। বছর দশেক আগে এই একতাই এক ট্রেন্ড এনেছিলেন হিন্দি ধারাবাহিকে। বস এবং কর্মীর মধ্যে  প্রেম। প্রথম উঁকিঝুঁকি তারপরই প্রেমালাপ। সঙ্গে অবশ্যই রয়েছে বিচ্ছেদ, ভুল বোঝাবোঝি, মান অভিমান।

এই ট্রেন্ডই গত দশ বছর ধরেই চলেছে ধারাবাহিকের বাজারে। একতার দেখানো পথে এখন হাঁটছে বাংলা ধারাবাহিকগুলি; যেমন মোহর ধারবাহিকটিও হলো ছাত্রী এবং শিক্ষকের প্রেম নিয়ে। সোনামনি সাহা ও প্রতীক সেন অভিনীত ‘মোহরে’র স্যার হলো শঙ্খদীপ। শঙ্খদীপের সঙ্গে মান অভিমানের পালা চলতে চলতেই তা বদলেছে প্রেমের কাহিনীতে। যদিও জোর কদমে রোম্যান্স এখন তুঙ্গে মোহর ধারাবাহিকটিতে। মোহর এবং শঙ্খদীপ এর ক্ষেত্রেও হেরফের হয়নি। সেই প্রেমের কাহিনিই এখন খাচ্ছে বাঙালি দর্শক। গত সপ্তাহে টিআরপির তালিকা এক নম্বরে ছিল ‘মোহর’। তার আগের সপ্তাহে ছিল দুই নম্বরে। এ সপ্তাহে যৌথভাবে তৃতীয়।

এক সপ্তাহে ‘কৃষ্ণকলি’র রেকর্ড ছাঁপিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে এই ধারাবাহিক। পেয়েছিল ‘অল বেঙ্গল টপার’ এর গর্বিত স্বীকৃতি ৷ দারুণ খুশি গোটা টিম।এই সপ্তাহের টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট তথা টিআরপির তালিকায় কভিড-১৯ এর প্রভাবে ধারাবাহিকেও ‘নতুন নর্ম্যাল’ শুরু হয়েছে, একথা বলাই বাহুল্য। সাঁঝের বাতি ও শ্রীময়ী খুব পিছিয়ে না পড়লেও তাদের রিপোর্ট কার্ড বলছে দর্শকের মন আকর্ষণে কিছুটা পেছনের দিকেই তারা। শ্যামা ফিরছে এই আগাম আভাস পেয়ে যেমন কৃষ্ণকলির টিআরপি উর্ধমুখী তেমনই মোহরের সঙ্গে স্যারের সম্পর্কের রসায়ন কোন দিকে যায়, সেদিকে নজর রাখতেও ব্যস্ত দর্শক।

গত সপ্তাহের টিআরপির তালিকাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল সংকটে রয়েছেন নিখিল-শ্যামা। মোহর আর শঙ্খ স্যারের টানটান রসায়নের উপর ভর করেই গত সপ্তাহের টিআরপি তালিকায় শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছিল স্টার জলসার সবচেয়ে জনপ্রিয় ধারাবাহিক মোহর। তবে এই টিআরপির তালিকায় নেই জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘এখানে আকাশ নীল’। সেখানেও গল্প সেই স্যার ও ছাত্রীর। উজান-হিয়া বলতে দর্শকরা এক ঢোক জল বেশই খায়। এই ধারাবাহিকটি বন্ধ হওয়ার খবর পেতেই প্রতিবাদ শুরু করেছে দর্শকমহল।

‘এখানে আকাশ নীল’ এই ধারাবাহিক কেন নেই টিআরপির তালিকায়। মোহর এর মতোই একই পথে হাঁটছে এখানে আকাশ নীল। তবুও নেই কোনও কাঙ্ক্ষিত উন্নতি। তবে কি এই কারণেই বন্ধ হচ্ছে এখানে আকাশ নীল। মোহর এবং শঙ্খদীপের রোম্যান্স শুরু না হতেই টিআরপি দ্রুত বেড়ে চলেছে অন্যদিকে টিআরপি টেবিলে মুখ থুবড়ে পড়েছে এখানে আকাশ নীল। হতাশাজনক টিআরপি রেটিং নিয়েই ইতি ঘটছে ধারাবাহিকটির ৷ কিন্তু অন্যান্য ধারাবাহিকে সবমিলিয়ে উনিশ-বিশের লড়াই বলা যায়। করুণাময়ী রানি রাসমণীর রেটিংয়ে কোনও হেরফের হয়নি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে জি বাংলার সিরিয়াল থাকলেও এই সপ্তাহে প্রথম দশে ছয়টি সিরিয়াল স্টার জলসার।

‘সাঁঝের বাতি’, ‘খড়কুটো’, ‘যমুনা ঢাকি’, ‘শ্রীময়ী’, ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’-সেরা দশে পরপর জায়গা করে নিয়েছে এই ধারাবাহিকগুলো। রেজওয়ান রাব্বানি শেখ ও দেব চন্দ্রিমা রায় অভিনীত স্টার জলসা চ্যানেলের সাঁঝের বাতি জায়গা করে নিয়েছে । চারুর ছদ্মবেশ এবং মিসমির কূটবুদ্ধির মসলায় নতুন আকষর্ণ এসেছে প্লটের আঙ্গিকে । অপর দিকে কৌশিক রায় ও তৃণা সাহা অভিনীত নবাগত ‘ খড়কুটো ‘ পেয়েছে চতুর্থ স্থান । যৌথ পরিবার , হালকা হাস্য রস ও ইমোশনের সাহায্যে প্লটের বুননে ইতিমধ্যেই দর্শকদের যথেষ্ট ভালোবাসা আদায় করে নিয়েছে এই ধারাবাহিক। প্রসঙ্গত এই সপ্তাহে সেরা দশে ফিরলভক্তিমূলক সিরিয়াল ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় আইপিএল ক্রিকেট ম্যাচ টিভিতে সরাসরি প্রতিদিন প্রচারিত হওয়া স্বত্ত্বেও দোর্দণ্ড প্রতাপের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে টিআরপি শাসন করছে মেগা সিরিয়ালগুলো তা একরকম স্পষ্টরূপে ধরে নেওয়া যায়৷

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ