আইএসের হাত থেকে দাবিক শহরের পতন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সিরিয়া থেকে পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, তুর্কী সমর্থিত বিদ্রোহীরা ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের হাত থেকে সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর দাবিক দখল করে নিয়েছে।

ভৌগলিকভাবে শহরটির অবস্থান খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও প্রতীকিভাবে এই শহরের তাৎপর্য অনেক।

 

বিদ্রোহীদের সূত্র, গণতন্ত্রের জন্যে আন্দোলনকারী এবং তুরস্কের সংবাদ মাধ্যমেও বলা হচ্ছে যে আজ রোববার সকালে ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা সেখান থেকে চলে যাওয়ায় তাদের হাত থেকে শহরটির পতন ঘটেছে।

 

আইএসের প্রচারণায় তুরস্ক সীমান্তের কাছে উত্তরাঞ্চলীয় ছোট্ট এই শহরটিকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিলো।

_91944755_4635b803-755b-4f86-ae0b-7857660a7360

আইএসের কাছে এই শহরের গুরুত্ব আলাদা কারণ তারা প্রচার করছিলো যে এই শহরে মুসলিমদের সাথে খ্রিস্টানদের বড় রকমের একটি যুদ্ধ হবে এবং এই যুদ্ধে জয়ের মধ্য দিয়ে ইসলামের ঝাণ্ডা উড়বে।

 

সুলতান মুরাদ নামের একটি বিদ্রোহী গ্রুপের কমান্ডার আহমেদ ওসমান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন যে রবিবার তারা পার্শ্ববর্তী সোরান গ্রামও দখল করে নিয়েছে।

 

সংবাদদাতারা বলছেন, দাবিক শহর দখলের জন্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তার আশেপাশে লড়াই চলছিলো।

 

তুরস্কের বিমান হামলা ও ট্যাঙ্ক আক্রমণের সহযোগিতায় প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরোধী বিদ্রোহীরা আইএসের হাত থেকে দখল করে নিচ্ছিলো একের পর এক গ্রাম।

 

বিবিসির সাংবাদিক সেবাস্টিয়ান উশার বলছেন, শেষ পর্যন্ত খুব দ্রুতই শহরটির পতন ঘটলো।

 

তিনি বলছেন, কৌশলগত-ভাবে শহরটি খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলেও শহরটি হারিয়ে আইএস বিব্রত কারণ এই শহরটিকে তারা তাদের যুদ্ধের প্রতীক করে তুলেছিলো।

_91944757_81eea2b0-7b18-4ffa-905d-515e580977cc

একটি হাদিসেও এই শহরটির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগে এই শহরে মুসলিমদের সাথে অমুসলিমদের বড় ধরনের যুদ্ধের ঘটনা ঘটবে।

 

ইসলামিক স্টেট তাদের অনলাইন ম্যাগাজিনের নামও রেখেছে এই দাবিক শহরের নামানুসারে।

 

ব্রিটেন-ভিত্তিক একটি সিরিয়ান মানবাধিকার সংগঠন বলছে, শহরটিকে রক্ষার জন্যে ইসলামিক স্টেট বারোশ’র মতো যোদ্ধা নিয়ে এসেছিলো।

 

কিন্তু হামজা ব্রিগেড নামের একটি বিদ্রোহী গ্রুপের কমান্ডার সংবাদ সংস্থা এপিকে বলেছেন, তাদেরকে আইএসের কাছ থেকে বড় রকমের কোনো প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি।

 

তুরস্কের সীমান্ত থেকে মাত্র ছ’মাইল দূরে এই দাবিক শহর।

 

গত অগাস্ট মাসে তুর্কী সৈন্যরা সীমান্ত এলাকায় আক্রমণ শুরু করে সেখান থেকে আইএস ও কুর্দি বিদ্রোহীদের হটানোর লক্ষ্যে।

 

তার পরের মাসেই তুর্কী প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে সিরিয়ার সাথে ৯১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত তারা পুরোপুরি সুরক্ষিত করেছেন।

 

সেখান থেকে সন্ত্রাসী সব গ্রুপকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা তারা দাবি করেন।

_91944759_c18f6687-f21d-4f85-ac6e-ecff2e114293

প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে জন্যে সিরিয়ায় বছর পাঁচেক আগে এই যুদ্ধ শুরু হয়।

 

তারপর থেকে ধীরে ধীরে এই যুদ্ধ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে যাতে বহু গ্রুপ একে অপরের সাথে যুদ্ধ করছে।

 

ধারণা করা হয়, সিরিয়ার যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত তিন লাখের মতো মানুষ নিহত হয়েছে।

 

সিরিয়ায় নতুন করে যুদ্ধবিরতির জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করবেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা