অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে করোনা রোগী মাকে বাইকে বেঁধে হাসপাতালে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনা রোগীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে অবশেষে গামছা দিয়ে বেঁধে মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে নিয়ে যান তার ছেলে।

তীব্র শ্বাসকষ্ট ও করোনার অন্য উপসর্গ দেখা দেয়ায় ওই গৃহবধূকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। চিকিৎসক তাকে পাশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

কিন্তু সেই রোগীকে নিয়ে যেতে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে পারল না কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন। অগত্যা বৃদ্ধা মাকে বাইকে বসিয়ে নিজের সঙ্গে গামছায় বেঁধে ২০ কিলোমিটার দূরে পাশকুড়া সুপার স্পেশালিটিতে পৌঁছলেন ছেলে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বিজেপিও।

কোলাঘাট ব্লকের কোলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওই বৃদ্ধার বড় ছেলে ও ছেলের স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে বড়মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দিন কয়েক আগে বৃদ্ধারও করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় শুক্রবার সকালে মাকে কোলাঘাটের পাইকপাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান ছোট ছেলে। চিকিৎসক বৃদ্ধাকে পাশকুড়া সুপার স্পেশালিটিতে ‘রেফার’ করেন।

দুর্ভোগের শুরু এর পরেই। মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে মাখা খুঁড়েও অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করতে পারেননি ছোট ছেলে। ব্লক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এমনকি কোলাঘাট বিট হাউস থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি।

শুক্রবার সকাল গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেলেও অ্যাম্বুলেন্স মেলেনি। এদিকে অবস্থার অবনতি হতে থাকে বৃদ্ধার। উপায়ন্তর না দেখে নিজের বাইকে চাপিয়েই মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ছোট ছেলে।

বৃদ্ধার ছোট ছেলে বলেন, আর উপায় ছিল না। মাকে বাইকে বসিয়ে একটা গামছায় নিজের সঙ্গে বেঁধে নিই। তার পর বাইক চালিয়ে পাশকুড়া হাসপাতালে যাই।

করোনায় আক্রান্ত বা করোনার উপসর্গ আছে এমন রোগীকে কেউ অ্যাম্বুলেন্স দিতে রাজি হচ্ছে না। প্রশাসনকেই এর সমাধান করতে হবে।

মমতার রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের স্থানীয় নেতা বিবেক চক্রবর্তী বলেন, একটা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে পারছে না প্রশাসন। বোঝা যাচ্ছে, এরা করোনা নিয়ে রাজনীতিতেই ব্যস্ত। স্বাস্থ্যসেবায় নজর নেই।

জবাবে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এ ঘটনাটি জানি না। আর বিজেপি যেসব রাজ্যে ক্ষমতায় আছে, সেখানে স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুর্দশা কারও অজানা নয়।

 

সুত্রঃ যুগান্তর