অশোকা ভার্সিটি থেকে অধ্যাপক মেহতার পদত্যাগে বিক্ষোভ

ভারতের অশোকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেশটির অন্যতম শীর্ষ বুদ্ধিজীবী ও সরকার সমালোচক প্রতাপ ভানু মেহতার সরে দাঁড়ানোর পর বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এতে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ বলে পরিচিত দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির বাকস্বাধীনতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতাভ ভানু একজন খ্যাতিমান পণ্ডিত, রাজনৈতিক তত্ত্ব ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করে আসছিলেন।

অশোক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পদত্যাগের পর সমালোচকেরা বলছেন, ভারতে ভিন্নমতাবলম্বীদের জায়গা শেষ হয়ে যাচ্ছে।

সোমবার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এর আগে অক্সফোর্ড ও প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থী ২০১৯ সালে অশোকার উপাচার্যের পদ থেকে সরে দাঁড়ান।

তার স্পষ্টভাষী বক্তব্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড তখন বিরক্ত প্রকাশ করে আসছিল।

পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার যুক্ত থাকাকে রাজনৈতিক বোঝা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এছাড়া গত সপ্তাহে হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড তাকে রাজনৈতিক বোঝা হিসেবে বিবেচনা করছে।

পদত্যাগপত্রে তিনি বলেন, রাজনীতি নিয়ে লেখালেখিতে আমি স্বাধীনতা ও সব নাগরিকের সমমর্যাদার সাংবিধানিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখাতে চেষ্টা করি। কিন্তু আমার মতামতকে ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করছে বিশ্ববিদ্যালয়।

সম্প্রতি মেহতার সঙ্গে অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতারা সাক্ষাৎ করেন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রখ্যাত এই অধ্যাপককে সুরক্ষা দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার ভারত সরকারের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যমও অশোকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করেন। এসব বিতর্ক নিয়ে এখন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তার পদত্যাগপত্রে তিনি বলেন, অ্যাকাডেমিক মতপ্রকাশ ও বাকস্বাধীনতায় বিশ্ববিদ্যালয় কোনো জায়গা দিতে পারছে না। যা মারাত্মক বিরক্তিকর।

এরপর ক্লাসবর্জন করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ এক বিবৃতিতে বলছে, মেহতার চলে যাওয়া অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা ও অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীকার নিয়ে জরুরি প্রশ্ন উঠেছে।

কলোম্বিয়া, ইয়েল, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিকের বেশি অধ্যাপক এক খোলা চিঠিতে বলেন, রাজনৈতিক চাপের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেহতার পদত্যাগে আমরা গভীর উদ্বিগ্ন।

 

সুত্রঃ যুগান্তর