অর্ধেক মূল্যে জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগ রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বিরুদ্ধে

রাণীনগর প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অর্ধেক মূল্যে (আন্ডার ভ্যালু) একটি দলিল রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এ গোমর ফাঁস হওয়ার ৬ কার্যদিবস পর দায় এড়াতে ঘষামাজা করে আবার বাকী টাকা জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে, ভুল করে এক মৌজার জমির দাম অন্য মৌজায় দেখানোয় এমন হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও দলিলের জাবেদা (নকল) কপি থেকে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার কালিগ্রাম ইউনিয়নের আমগ্রাম গ্রামের মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে সেকেন্দার সরদার আমগ্রাম মৌজার মাঠের ৪ শতাংশ ধানী জমি বিক্রি করেন একই গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে দুলু সরদার ও হেলাল সরদারের কাছে। ওই মৌজায় সরকার নির্ধারিত প্রতি শতক ধানী জমির দাম ১২ হাজার ৬১৩ টাকা। সে হিসেবে বিক্রি জমির সরকারি মোট মূল্য (ভ্যালুয়েশন) হওয়ার কথা ৫১ হাজার টাকা।
কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে দলিল লেখক সাইদুর রহমান মাত্র ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দলিল প্রস্তুত করে। পরে দাখিলকৃত ওই দলিল নিম্ন মূল্য (আন্ডার ভ্যালু) হওয়ার পরেও অজ্ঞাত কারণে সাব-রেজিস্ট্রার রাশিদা ইয়াসমিন মিলি দলিলটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। যার দলিল নম্বর-২১৪৯,তারিখ ১৮/০৬/২০১৯ ইং।
বিষয়টি জানাজানি হলে দলিল রেজিস্ট্রেশনের ৬ কার্যদিবস পর ২ জুলাই এক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবশিষ্ট টাকা জমা দেওয়া হয়। তবে, দায় এড়াতে অবশিষ্ট টাকা কৌশলে জমা দিলেও দলিলের কোথাও ৫১ হাজার টাকা মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরেও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।
একাধিক গোপন সূত্রে জানা গেছে, রেজিস্ট্রেশন করার ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন মৌজার জমির মূল্য দেওয়া থাকলেও গোপনে অর্ধেক দামে (আন্ডার ভ্যালু) দলিল করা হয়। এতে করে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। প্রতিটি জাবেদা (নকল) কপির সরকারের বেধে দেওয়া ফি ৬৪০ টাকা হলেও জাবেদা (নকল) কপির জন্য নেওয়া হয় ১৩শ’ থেকে ১৪শ’ টাকা। দ্বিগুন ফি দেওয়ার পরও প্রতিটি জাবেদা কপির জন্য দিনের পর দিন অফিসে ঘুরতে হয় গ্রাহকদের বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দলিল লেখক সাইদুর রহমান বলেন, এটি একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। এক মৌজা ভেবে আরেক মৌজার জমির দাম হিসেবে ওই জমির মূল্য নির্ধারণ করেছি। তবে পরবর্তীতে অবশিষ্ট টাকা জমা দিয়েছি এবং তা দলিলে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এটা তেমন কোন জটিল সমস্যা নয়।
এ ব্যাপারে রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার রাশিদা ইয়াসমিন মিলি বলেন, এক মৌজা ভেবে আরেক মৌজার জমির মূল্য তালিকা অনুসারে মুহুরী দলিলে মূল্য উল্লেখ করেছেন। বিষয়টি জানার পর আমি মুহুরীকে তলব করি এবং ঘাটতি টাকা আদায় করে দলিলে জমা করি। যদি এরকম ভুল হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে অবশিষ্ট টাকা জমা দেওয়ার কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। যখন ইচ্ছে তখন টাকাটা জমা দেওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
স/শা